রাবিতে ১০ বছরে ৬ শিক্ষার্থী খুন

রাবি প্রতিনিধি |

দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি শিক্ষার্থী খুনের ঘটনা ঘটেছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে। গত ১০ বছরে দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে খুন হয়েছেন ছয় শিক্ষার্থী। কিন্তু বিচার হয়নি কোনো হত্যার। সম্প্রতি বুয়েট শিক্ষার্থী আবরার হত্যার ঘটনায় আবারও আলোচনায় এসেছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের হত্যাকাণ্ডগুলো। প্রতিটি হত্যার বিচার দাবি করেছেন শিক্ষার্থীরা।

তিন বছর আগে ২০১৬ খ্রিষ্টাব্দের ২০ অক্টোবর বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজ হলে খুন হন গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থী মোতালেব হোসেন লিপু। সেদিন সকালে হলের ড্রেন থেকে তার লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। কিন্তু ওই হত্যার তিন বছর হতে চললেও খুনিরা শনাক্ত হয়নি। জানা যায়নি খুনের প্রকৃত কারণ। ফলে পুলিশের তদন্ত নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।

২০১৪ খ্রিষ্টাব্দের ৪ এপ্রিল বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ সোহরাওয়ার্দী হলে গুলিতে নিহত হন হল শাখা ছাত্রলীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক ও রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের চতুর্থ বর্ষের ছাত্র রুস্তম আলী। এ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সহসভাপতি মেহেদী হাসান মতিহার থানায় বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রশিবিরের সভাপতি আশরাফুল আলমসহ চারজনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতপরিচয় আরও ১২ জনকে আসামি করে মামলা করেন। মেহেদী হাসান বলেন, প্রমাণ করতে না পারায় আদালতে মামলাটি খারিজ হয়ে গেছে।

২০১২ খ্রিষ্টাব্দের ১৫ জুলাই ছাত্রলীগের দুই পক্ষের সংঘর্ষে মাথায় গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হন সংগঠনের কর্মী আবদুল্লাহ আল হাসান। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের চতুর্থ বর্ষের ছাত্র ছিলেন। তার বাড়ি রংপুরের কাউনিয়া উপজেলার শাব্দী গ্রামে। হাসান হত্যার ঘটনায় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মোহাম্মদ নোমান মামলা করেন। মামলায় ১৪ জনকে আসামি করা হয়। মামলার পর বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের তৎকালীন সহসভাপতি আখেরুজ্জামান ও সাধারণ সম্পাদক তৌহিদ আল হাসানকে বহিষ্কার করা হয়। কিন্তু পরে তাদের বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ। মামলাটির বিচার চলছে।

২০১০ খ্রিষ্টাব্দের ৮ ফেব্রুয়ারি রাতে ছাত্রশিবিরের নেতা-কর্মীরা ছাত্রলীগ কর্মী ফারুককে খুন করে লাশ শাহ মখদুম হলের পেছনের ম্যানহোলে ফেলে রাখেন। পরদিন বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের তৎকালীন সাধারণ সম্পাদক মাজেদুল ইসলাম ছাত্রশিবিরের ৩৫ নেতা-কর্মীর নাম উল্লেখ এবং অজ্ঞাতনামা আরও অনেক শিবির নেতা-কর্মীসহ ১০৭ জনকে আসামি করে মতিহার থানায় মামলা করেন।

২০১২ খ্রিষ্টাব্দের ৩০ জুলাই আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে পুলিশ। আসামির মধ্যে ৬০ জন জামিনে। গত ২৫ জুলাই এ মামলায় অভিযোগ গঠন করা হয়।

২০১০ খ্রিষ্টাব্দের ১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবসের অনুষ্ঠানে খাবারের টোকেন নিয়ে সংঘর্ষের জেরে ছাত্রলীগ কর্মী নাসরুল্লাহ নাসিমকে পিটিয়ে শাহ মখদুম হলের দ্বিতীয় তলা থেকে নিচে ফেলে দেয়া হয়। ২৩ আগস্ট তার মৃত্যু হয়। নাসিম ইতিহাস বিভাগের চতুর্থ বর্ষের ছাত্র ছিলেন। এ ঘটনায় ১০ জনের নাম উল্লেখ করে নাসিমের বন্ধু আজম আলী মামলা করেন। ১০ জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তারা সবাই এখন জামিনে। এ মামলাটিরও বিচার চলছে।

২০০৯ খ্রিষ্টাব্দের ১৩ মার্চ ছাত্রলীগ, ছাত্রশিবির ও বিনোদপুরের ব্যবসায়ীদের ত্রিমুখী সংঘর্ষে ছাত্রশিবিরের বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাধারণ সম্পাদক শরীফুজ্জামান নোমানী নিহত হন। এ ঘটনায় ছাত্রলীগের সে সময়কার সভাপতি ইব্রাহিম হোসেনসহ ২৭ ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে মামলা হয়। পরে আদালত সব আসামিকে বেকসুর খালাস দেয়।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
শিক্ষায় বরাদ্দ বেড়েছে, আরো বাড়বে: শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী - dainik shiksha শিক্ষায় বরাদ্দ বেড়েছে, আরো বাড়বে: শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী সমাবর্তনের অজুহাতে সনদ আটকে রাখা যাবে না - dainik shiksha সমাবর্তনের অজুহাতে সনদ আটকে রাখা যাবে না হিটস্ট্রোকে স্কুলছাত্রীর মৃত্যু - dainik shiksha হিটস্ট্রোকে স্কুলছাত্রীর মৃত্যু চুয়েটে আন্দোলন স্থগিত, সড়কে যান চলাচল শুরু - dainik shiksha চুয়েটে আন্দোলন স্থগিত, সড়কে যান চলাচল শুরু প্রাথমিকের প্রশ্ন ফাঁসে অল্পদিনে কয়েকশ কোটি টাকা আয় - dainik shiksha প্রাথমিকের প্রশ্ন ফাঁসে অল্পদিনে কয়েকশ কোটি টাকা আয় রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম সংবিধানবিরোধী নয়: হাইকোর্ট - dainik shiksha রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম সংবিধানবিরোধী নয়: হাইকোর্ট কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0031249523162842