রাবির ভর্তি পরীক্ষায় প্রথম হওয়া শিক্ষার্থীর ভর্তি স্থগিত

রাবি প্রতিনিধি |

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষ স্নাতকে সি ইউনিটের অ-বিজ্ঞান শাখার মানবিকে ভর্তি পরীক্ষায় প্রথম হওয়া শিক্ষার্থীর ভর্তি কার্যক্রম জালিয়াতি সন্দেহে স্থগিত করা হয়েছে।

সি ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষার চিফ কো-অর্ডিনেটর ও প্রকৌশল অনুষদের ডিন অধ্যাপক মো. একরামুল হামিদ এ তথ্য নিশ্চিত করেন।

মো. হাসিবুর রহমান নামের ওই শিক্ষার্থী নিজের ইউনিট ‘এ’-তে (মানবিক, রোল-৫৪২৩৩) পেয়েছেন মাত্র ২০ নম্বর। অথচ সি ইউনিটের (বিজ্ঞান, রোল-৮০৩১৮) অ-বিজ্ঞান শাখায় মানবিক থেকে পরীক্ষায় অংশ নিয়ে হাসিব পেয়েছেন ৮০ (এমসিকিউতে ৬০ এর মধ্যে ৫৪ ও লিখিততে ৪০ এর মধ্যে ২৬)।

ফলাফলের এই অসঙ্গতি ভর্তি পরীক্ষা সংশ্লিষ্টদের নজরে আসায় তাকে গত ২৫ নভেম্বর জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।

সেদিন ডিন অফিসে জিজ্ঞাসাবাদ করে পরদিন মঙ্গলবার সকালে হাসিবকে কর্তৃপক্ষ ‘ঠাণ্ডা মাথায়’ চিন্তা করে আসতে বলা হয়; কিন্তু পরদিন হাসিব আসেননি।

সি ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষার চিফ কো-অর্ডিনেটর ও প্রকৌশল অনুষদের ডিন একরামুল হামিদ বলেন, “হাসিব এ ইউনিটে মাত্র ২০ নম্বর পেয়েছে। কিন্তু সি ইউনিটে সে সর্বোচ্চ নম্বর ৮০ পেয়েছে। এ তথ্যটি জানার পর সন্দেহ থেকে তাকে সেদিন জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। পরে তাকে ঠাণ্ডা মাথায় সবকিছু চিন্তা করে মঙ্গলবার সকালে এসে আসল তথ্য দিতে বলা হয়। কিন্তু তারপর দুদিন হয়ে গেলেও সে আসেনি। তার ফোন নম্বরও বন্ধ।”

“সেদিন তার হাতের লেখা পরীক্ষা করা হয়েছে। তার হাতের লেখাও সন্দেহজনক মনে হয়েছে। সংশ্লিষ্ট পরীক্ষার প্রশ্নের উত্তর জিজ্ঞাসা করেছিলাম, তাতে সে খুব বেশি উত্তর দিতে পারেনি। একটু গরমিল মনে হয়েছে। পরে তার এ ও সি ইউনিটের পরীক্ষার দুটি খাতাও দেখা হয়েছে। সেখানেও তার হাতের লেখায় গড়মিল দেখা গেছে। সবমিলিয়ে আমরা ডিনরা বসে জালিয়াতির সন্দেহে তার ভর্তি কার্যক্রম স্থগিত করেছি।”

তার বিরুদ্ধে কী ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হবে প্রশ্ন করা হলে একরামুল হামিদ বলেন, “ভর্তি কার্যক্রম যেহেতু ১ ডিসেম্বর পর্যন্ত চলবে। এ সময়ে সে (হাসিব) আসলে তাকে আবার জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। আমরা ডিনরা একটা তদন্ত কমিটি হয়ত পরে করব।”

এ ব্যাপারে হাসিবের সঙ্গে যোগাযোগ করলে প্রথম দিন তিনি বলেন, গ্রামের বাড়ি থাকায় তার পক্ষে দেখা করা সম্ভব নয়। তবে কয়েক দিন পর রাজশাহী এসে তিনি যোগাযোগ করবেন। এরপর থেকে তিনি ফোন রিসিভ করছেন না। মেসেজ পাঠিয়েও কোনো উত্তর মেলেনি।

হাসিবের একাধিক বন্ধুর সঙ্গে কথা হয় প্রতিনিধির।

তারা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের পর সিলেট বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় এবং চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে তার পরীক্ষা দেওয়ার কথা ছিল। তিনি ভর্তি আবেদন করেছিলেন। এমনকি সিলেট হয়ে চট্টগ্রাম যাওয়ার জন্য বাসের টিকেটও সংগ্রহ করেছিলেন। রাজশাহীতে পরীক্ষা দেওয়ার পর হাসিব আর কোথাও পরীক্ষা দিতে যাননি।

তার পক্ষে এ ধরনের ফলাফল করা সম্ভব নয় বলে তাদের ভাষ্য।

ভর্তি পরীক্ষা কার্যক্রমের সঙ্গে দীর্ঘদিন থেকে যুক্ত একাধিক শিক্ষক এ বিষয়ে বলেন, বর্তমান পদ্ধতিতে ভর্তি পরীক্ষায় প্রক্সি দেওয়া কঠিন। এমনকি পরীক্ষার হলে ইলেকট্রনিক ডিভাইস ব্যবহার করাও সম্ভব নয়। “এটা হতে পারে ওই ভর্তিচ্ছু পরীক্ষার আগেই প্রশ্ন পেয়েছিল কিংবা পরীক্ষার ওএমআর শিট ও লিখিত খাতা ফাঁকা রেখে এসেছিল এবং পরবর্তী সময়ে হয়ত অন্য কোনো প্রক্রিয়ায় এটা সম্পন্ন করা হয়েছে।”


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
জড়িত মনে হলে চেয়ারম্যানও গ্রেফতার: ডিবির হারুন - dainik shiksha জড়িত মনে হলে চেয়ারম্যানও গ্রেফতার: ডিবির হারুন পছন্দের স্কুলে বদলির জন্য ‘ভুয়া’ বিবাহবিচ্ছেদ - dainik shiksha পছন্দের স্কুলে বদলির জন্য ‘ভুয়া’ বিবাহবিচ্ছেদ হিট স্ট্রোকের ঝুঁকি কমাতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নির্দেশনা - dainik shiksha হিট স্ট্রোকের ঝুঁকি কমাতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নির্দেশনা সনদ বাণিজ্য : কারিগরি শিক্ষা বোর্ড চেয়ারম্যানের স্ত্রী কারাগারে - dainik shiksha সনদ বাণিজ্য : কারিগরি শিক্ষা বোর্ড চেয়ারম্যানের স্ত্রী কারাগারে কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে উপবৃত্তির জন্য সব অ্যাকাউন্ট নগদে রূপান্তরের নির্দেশ - dainik shiksha উপবৃত্তির জন্য সব অ্যাকাউন্ট নগদে রূপান্তরের নির্দেশ সপ্তম শ্রেণিতে শরীফার গল্প থাকছে, বিতর্কের কিছু পায়নি বিশেষজ্ঞরা - dainik shiksha সপ্তম শ্রেণিতে শরীফার গল্প থাকছে, বিতর্কের কিছু পায়নি বিশেষজ্ঞরা জাতীয়করণ আন্দোলনের শিক্ষক নেতা শেখ কাওছার আলীর বরখাস্ত অনুমোদন - dainik shiksha জাতীয়করণ আন্দোলনের শিক্ষক নেতা শেখ কাওছার আলীর বরখাস্ত অনুমোদন ১৭তম ৩৫-প্লাস শিক্ষক নিবন্ধিতদের বিষয়ে চেম্বার আদালত যা করলো - dainik shiksha ১৭তম ৩৫-প্লাস শিক্ষক নিবন্ধিতদের বিষয়ে চেম্বার আদালত যা করলো দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে তিন স্তরে সনদ বিক্রি করতেন শামসুজ্জামান, দুদকের দুই কর্মকর্তার সম্পৃক্ততা - dainik shiksha তিন স্তরে সনদ বিক্রি করতেন শামসুজ্জামান, দুদকের দুই কর্মকর্তার সম্পৃক্ততা please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0060360431671143