রিফাত হত্যা: মামলার পুনঃতদন্ত চান মিন্নির বাবা

বরগুনা প্রতিনিধি |

বরগুনার আলোচিত রিফাত শরীফ হত্যাকাণ্ডের দুই মাস ২০ দিন পর নতুন একটি ভিডিও বের হওয়ার পর এই মামলার পুনঃতদন্তের দাবি উঠেছে। এই দাবি জানিয়ে রিফাতের স্ত্রী ও মামলার আসামি আয়শা সিদ্দিকা মিন্নির বাবা মোজাম্মেল হোসেন কিশোর বলেন, আইনজীবীর মাধ্যমে এ বিষয়ে আবেদন করা হবে।

এদিকে বরগুনার পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) বলেছেন, এই মামলায় পুনর্তদন্তের সুযোগ নেই।

রিফাত হত্যাকাণ্ড নিয়ে সোমবার প্রকাশ হওয়া এক ভিডিওতে দেখা গেছে, ঘটনার দিন ২৬ জুন একটি ব্যাটারিচালিত রিকশায় করে রক্তাক্ত ও অচেতন অবস্থায় রিফাতকে বরগুনা জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগের সামনে নিয়ে যায় মিন্নি। প্রায় ২০-৩০ মিনিট পর সেখান থেকে অ্যাম্বুলেন্সে করে বরিশালের উদ্দেশে নেয়া হয় রিফাতকে। ওইদিন বিকাল সাড়ে ৪টায় রিফাতের মৃত্যু হয়।

এ বিষয়ে মিন্নির বাবা কিশোর মঙ্গলবার দুপুর বলেন, ‘আমি বারবার বলেছি, আমার মেয়ে সম্পূর্ণ নির্দোষ। নতুন ভিডিও দেখলে প্রমাণ হবে আমার মেয়ে রিফাতকে বাঁচানোর জন্য সেদিন আপ্রাণ চেষ্টা করেছে। আমাদের উকিলের মাধ্যমে অবশ্যই মামলাটি পুনরায় তদন্তের আবেদন করব।

পুলিশ সঠিকভাবে মামলার তদন্ত করেনি। সঠিকভাবে তদন্ত করলে আমার মেয়ে আসামি হতো না।’ ২৬ জুন থেকে ১৯ দিন মিন্নি আপনার কাছে ছিল তখন কেন বলেননি সে রিফাতকে হাসপাতালে নিয়ে যায়- এর উত্তরে তিনি বলেন, ‘কেউ জানতে চায়নি, তাই বলা হয়নি।’

পুলিশ সুপারকে দোষারোপ করে কিশোর বলেন, ‘এসপি এসে আমাকে বলে, কিশোর ভাই আমরা তো আসামি ধরেছি এখন মিন্নিকে তাদের শনাক্ত করার জন্য নিতে হবে। এই কথা বলে ১৯ জুলাই আমার মেয়েটাকে নিয়ে যায়। এরপর আমার মেয়েটারে ভয়ভীতি দেখিয়ে বলে, আমরা যা যা বলব সেটা বলতে হবে। না বললে মেরে ফেলবে। ও বলবে না- এজন্য মিন্নিকে প্রেসার দেয় ও টর্চার করে। এরপর মিন্নিরে দিয়া জবানবন্দি নেয়।’

মামলার পুনঃতদন্তের দাবির বিষয়ে জেলার পিপি ভুবনচন্দ্র হাওলাদার বলেন, ‘পুলিশ তদন্ত করে ১ সেপ্টেম্বর আদালতে মামলার অভিযোগপত্র দাখিল করেছে। এই মুহূর্তে আসামিপক্ষের আবেদনের প্রেক্ষিতে মামলা পুনরায় তদন্ত দেয়ার কোনো সুযোগ নেই। আসামিপক্ষ চাইবেই মামলার গুণগত মান নষ্ট হোক।’ তিনি বলেন, ‘মিন্নি রিফাতকে হাসপাতালে এনেছে বা আনেনি- এটা কোনো বিষয় নয়। রিফাত হত্যার সঙ্গে মিন্নি কতটুকু জড়িত সেটাই তদন্তের বিষয়। আমি যতটুকু জানি, রিফাত হত্যার ষড়যন্ত্রে মিন্নি জড়িত।’

মামলাটির তদন্ত কর্মকর্তা বরগুনা সদর থানার পরিদর্শক মো. হুমায়ুন কবির বলেন, ‘মিন্নি রিকশায় করে রিফাতকে হাসপাতালে নিলেই নির্দোষ প্রমাণিত হয় না। মিন্নি তার ১০ পাতার জবানবন্দিতে হত্যার পরিকল্পনার কথা স্বীকার করেছে।’ নিহত রিফাতের বাবা আবদুল হালিম দুলাল বলেন, ‘আমি এখনও বলি আমার ছেলেকে হত্যার পেছনে মিন্নির ইন্ধন ছিল। আমার ছেলেকে নয়ন বন্ডরা কুপিয়ে রক্তাক্ত জখম করে; আর মিন্নি তামাশা দেখেছে। আমার ছেলেকে বাঁচানোর অভিনয় করেছে। মিন্নি সিনেমার নায়িকা হতে চেয়েছিল; হয়ে গেছে খুনি।’

রিফাত যে রিকশায় চড়ে হাসপাতালে যায় তার চালক দুলাল বলেন, ‘কোপানোর ঘটনার পর একজন লোক রক্তাক্ত অবস্থায় আমার রিকশায় ওঠে। আমি রওনা দিলে পেছন থেকে একটা মাইয়া আমাকে রিকশা থামাইতে বলে। থামাইলে মাইয়াটি আমার রিকশায় ওঠে।’ হাসপাতালের জরুরি বিভাগের ভর্তি খাতায় মিন্নির নাম রয়েছে। রিফাতের অবস্থার অবনতি হলে তাকে বরিশাল নিয়ে যান মিন্নির বাবা।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
হাইকোর্টের আদেশ পেলে আইনি লড়াইয়ে যাবে বুয়েট: উপ-উপাচার্য - dainik shiksha হাইকোর্টের আদেশ পেলে আইনি লড়াইয়ে যাবে বুয়েট: উপ-উপাচার্য প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগ: তৃতীয় ধাপের ফল প্রকাশ হতে পারে আগামী সপ্তাহে - dainik shiksha প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগ: তৃতীয় ধাপের ফল প্রকাশ হতে পারে আগামী সপ্তাহে ভূমির জটিলতা সমাধানে ভূমিকা রাখবেন নবম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা - dainik shiksha ভূমির জটিলতা সমাধানে ভূমিকা রাখবেন নবম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা সর্বজনীন শিক্ষক বদলি চালু হোক - dainik shiksha সর্বজনীন শিক্ষক বদলি চালু হোক ডিপ্লোমা প্রকৌশলীদের বিএসসির সমমান দিতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কমিটি - dainik shiksha ডিপ্লোমা প্রকৌশলীদের বিএসসির সমমান দিতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কমিটি রায় জালিয়াতি করে পদোন্নতি: শিক্ষা কর্মকর্তা গ্রেফতার - dainik shiksha রায় জালিয়াতি করে পদোন্নতি: শিক্ষা কর্মকর্তা গ্রেফতার কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0027749538421631