বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বুয়েট) র্যাগিং ও রাজনীতিতে জড়িত থাকলে সর্বোচ্চ শাস্তি আজীবন বহিষ্কার নির্ধারণ করেছে প্রশাসন।
এটি ছিল আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সর্বশেষ দাবি। এর মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের সব দাবি মেনে নিল বুয়েট প্রশাসন।
সোমবার (২ ডিসেম্বর) রাতে বুয়েটের ছাত্রকল্যাণ পরিদপ্তরের পরিচালক অধ্যাপক মিজানুর রহমান স্বাক্ষরিত একটি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়।
বুয়েট প্রশাসনের জারি করা নতুন নীতিমালায় বলা হয়েছে, বুয়েটে কেউ সাংগঠনিক ছাত্ররাজনীতি করলে সর্বোচ্চ সাজা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে চিরতরে বহিষ্কার। এ ছাড়া প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে রাজনীতিতে জড়িত থাকলে, রাজনৈতিক পদে থাকলে, রাজনীতি করতে কাউকে উদ্বুদ্ধ বা বাধ্য করলে অপরাধ সাপেক্ষে শাস্তি সতর্কতা, জরিমানা, বিশ্ববিদ্যালয় থেকে যে কোনো মেয়াদে বহিষ্কার করা হবে।
নীতিমালায় র্যাগিংয়ের শাস্তি নির্ধারণ করা হয়েছে কয়েক ধাপে। এতে বলা হয়েছে, কোনো ছাত্রের মৃত্যুর শাস্তি হবে বুয়েট থেকে বহিষ্কার ও থানায় মামলা দায়ের। কোনো ছাত্র গুরুতর শারীরিক ক্ষতি বা মানসিক ভারসাম্যহীনতার শিকার হলেও অভিযুক্তকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে চিরতরে বহিষ্কার করা হবে।
মৌখিক বা শারীরিক লাঞ্ছনা এবং সাময়িক মানসিক ক্ষতিসহ এ-সংক্রান্ত অপরাধের শাস্তি হচ্ছে সতর্কতা, জরিমানা, হল থেকে চিরতরে বহিষ্কার বা একাডেমিক কার্যক্রম থেকে একটি নির্দিষ্ট সময়ের জন্য বিরত রাখা। এ ধরনের অপরাধীকে শিক্ষাজীবনে ফিরতে হলে বিশ্ববিদ্যালয়ের ঠিক করে দেওয়া মনোরোগ বিশেষজ্ঞের কাছে নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত কাউন্সেলিং করতে হবে।
গত ৬ অক্টোবর বুয়েটের ছাত্র আবরার ফাহাদকে পিটিয়ে হত্যা করেন বুয়েট শাখা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। এ ঘটনার পর থেকে ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন করে ১০ দফা দাবিতে আন্দোলন শুরু করেন শিক্ষার্থীরা।
সর্বশেষ তিন দফা দাবি তোলেন তারা। দাবিগুলো হলো- মামলার অভিযোগপত্রের ভিত্তিতে অভিযুক্তদের স্থায়ী বহিষ্কার, বুয়েটের আহসানউল্লাহ, তিতুমীর ও সোহরাওয়ার্দী হলে ঘটে যাওয়া নির্যাতনের বিষয়ে অভিযুক্তদের অপরাধ অনুযায়ী শাস্তি প্রদান- সাংগঠনিক ছাত্র রাজনীতি ও নির্যাতনের বিষয়ে শাস্তির আইন।
এর জন্য প্রশাসন তিন সপ্তাহের সময় চায় শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে। নির্ধারিত সময় শেষ হওয়ার আগেই তাদের সব দাবি মেনে নিয়েছে প্রশাসন।