কোনো ছাত্রী বা কিশোরীকে উত্ত্যক্ত করা হলে বা তার ওপর নির্যাতন চললে, লজ্জা-ভয় তাদের নয়। লজ্জা উত্ত্যক্তকারীর। এ কথা বলেছেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি। কিশোর-কিশোরীদের বয়ঃসন্ধিকালীন যৌন ও প্রজনন স্বাস্থ্য ও অধিকার এবং জেন্ডার সমতা নিয়ে ‘শাহানা’ নামের একটি কার্টুন কলাবাগানের লেক সার্কাস উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ের নমুনা ক্লাসে উদ্বোধন করেন শিক্ষামন্ত্রী। সে সময় তিনি এ কথা বলেন।
ইউএনএফপিএ নির্মিত এ কার্টুনটির নির্বাচিত অংশ ক্লাস রুমে দেখানো হয়। মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের তৈরি করা পাঠ-পরিকল্পনার সাথে সংশ্লিষ্ট বিষয়ে নির্বাচিত এপিসোডগুলো ক্লাসে দেখানো হবে ৬ষ্ঠ থেকে ১০ শ্রেণির শিক্ষার্থীদের। শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। নমুনা ক্লাসটি ফেসবুক লাইভ করে দেখানো হয় সব মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে। a2i-Access to Information নামের ফেসবুক পেইজে নমুনা ক্লাসের লাইভ সম্প্রচার করা হয়।
এ সময় শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে দীপু মনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে এ দেশের স্বাধীনতা এসেছে, মানুষের অধিকার নিশ্চিত হয়েছে। আজ তাঁরই সুযোগ্য কন্যা শেখ হাসিনা বাবার আদর্শে দেশ এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন। দেশের প্রতিটি শিশু-কিশোর-কিশোরী আর নারীর যেন অধিকার সুরক্ষিত হয়, সে বিষয়ে সরকার সচেষ্ট আছে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
শিক্ষামন্ত্রী শিক্ষার্থীদের বলেন, আজকের প্রত্যেক কিশোরীই একেকজন শাহানা। তিনি সবাইকে অন্যায়ের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর জন্য সাহস সঞ্চয় করতে বলেন। তিনি বলেন, যৌন হয়রানি, নির্যাতন, যৌতুক প্রথা, বাল্য বিবাহের বিরুদ্ধে কথা বলতে হবে, এসব বন্ধে এগিয়ে যেতে হবে। বিশেষ করে বাল্যবিবাহ বন্ধে কিশোরীদের সোচ্চার হওয়ার কোনো বিকল্প নেই মন্তব্য করে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, অল্প বয়সে বিয়ের কারণে মাতৃ স্বাস্থ্য নষ্ট হয় এবং শিশু মৃত্যুর ঝুঁকি বাড়ে। এ ছাড়া এসব অন্যায় কাজে অধিকার ক্ষুণ্ন হয়। আর ব্যক্তি অধিকার ক্ষুণ্ন হলে সেটির দায় পড়ে পরিবার, সমাজ এবং জাতির ওপর।
দীপু মনি বলেন, কোন কিশোরীকে উত্ত্যক্ত করা হলে সে যেন লজ্জা না পেয়ে বিষয় বাবা-মা বা পরিবারের সদস্যদের খুলে বলেন। কারণ এতে লজ্জা তার নয়, লজ্জা উত্ত্যক্তকারীর। অন্যায়কারীর কোনো ক্ষমা নেই বলে জানান শিক্ষামন্ত্রী।
অনুষ্ঠানে ইউএনএফপিএ’র কর্মকর্তাগণ, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব মো. মাহবুব হোসেন, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, অধিদপ্তরের মাধ্যমিক শাখার পরিচালক ও রাজধানীর লেক সার্কাস বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকসহ অন্যান্য শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা উপস্থিত ছিলেন।
লেক সার্কাস উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোস্তফা কামাল ও আইসিটি শিক্ষক মো. মাকসুদুর রহমান শিক্ষামন্ত্রীর প্রতি কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন।