সারাদেশের বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের লাইব্রেরিয়ান ও সহকারী লাইব্রেরিয়ানরা নিয়মিত ক্লাস নেন। পরীক্ষার খাতা দেখেন, পরীক্ষার ডিউটিও পালন করেন। শিক্ষার্থীরাও তাদেরকে স্যারই সম্বোধন করেন। কিন্তু কোথাও কোথাও প্রতিষ্ঠান প্রধানরা লাইব্রেরিয়ানদের নিয়ে অহেতুক পরীক্ষা-নিরীক্ষায় লিপ্ত রয়েছেন মর্মে অভিযোগ পাওয়া যায়। কোথাও কোথাও তাদের সাথে বিমাতসুলভ আচরণও করা হয়। ফেসবুকসহ বিভিন্ন মাধ্যমে এ নিয়ে লাইব্রেরিয়ানরা ক্ষোভও প্রকাশ করেন।
লাইব্রেরিয়ানদের কেউ কেউ নিজেদেরকে লাইব্রেরিয়ান-শিক্ষক হিসেবে পরিচয় দেন। কিন্তু বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের জনবল কাঠামোতে লাইব্রেরিয়ান-শিক্ষক নামে কোনও পদ নেই।
এদিকে শিক্ষা মন্ত্রণালয় আরেকটি ফ্যাসাদ তৈরি করে রেখেছে। একাধিক আদেশ জারির মাধ্যমে লাইব্রেরিয়ানদের ক্ষুব্ধ করে তুলেছে। প্রজ্ঞাপন মতে, এখন লাইব্রেরিয়ানরা শিক্ষকও না আবার কর্মচারীও না। কিন্তু সারাদেশের কতিপয় প্রতিষ্ঠান প্রধান সহকারী লাইব্রেরিয়ানদের শিক্ষক কমনরুমে বসতে দেন না। কর্মচারীদের সাথে হাজিরা খাতায় সই করতে বাধ্য করান। এসব কারণে ক্ষুব্ধ এমপিওভুক্ত লাইব্রেরিয়ান ও সহকারী লাইব্রেরিনরা আর নিজ পদের পরিচয় দিতে চান না, তারা শিক্ষক পরিচয় দিতে চান। বাস্তবে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর লাইব্রেরিতে শত শত বই দেখাশুনা ছাড়াও অতিরিক্ত দায়িত্ব হিসেবে তাদেরকে ক্লাসের দায়িত্ব দেন প্রতিষ্ঠান প্রধানরা।
এমতাবস্থায় সহকারী লাইব্রেরিয়ানরা শিক্ষক পদের জন্য ফেসবুকে লেখালেখি ছাড়াও আদালতের শরণাপন্ন হয়েছেন। এটা তাদের অধিকার। কিন্তু প্রশ্ন অন্য জায়গায়। তারা যদি আদালতের রায়ে শিক্ষক হিসেবে পরিগণিত হন তবে, তারা আর লাইব্রেরিয়ান হিসেবে পরিচয় দেবেন না। তাই তাদের শিক্ষক নয় শিক্ষকের সম্মান দেয়া উপচিত। যেহেতু লাইব্রেরিয়ান ও লাইব্রেরির দায়িত্ব থাকাবস্থায় তাদেরকে কোনও কোনও প্রতিষ্ঠান প্রধান বা শিক্ষকের হাতে নাজেহাল হতে হয়েছে সেহেতু তারা আর লাইব্রেরিমুখী হবেন না। এতে নতুন একটা সমস্যা সৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা দেখা দেবে। আর তা হলো, লাইব্রেরিগুলোর দরজা চিরতরে বন্ধ হয়ে যাওয়া।
[মতামতের জন্য সম্পাদক দায়ী নন]