গাজীপুর সদর উপজেলার কেশরিতা এলাকায় গত ১৫ ডিসেম্বর লাক্সারি ফ্যান কারখানায় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় পুড়ে মারা গেছেন ফয়সাল নামে এক কলেজছাত্র। দরিদ্র পরিবারের স্বচ্ছলতা ফিরিয়ে আনতে ওই ফ্যান কারখানায় খণ্ডকালীন চাকরি করতেন তিনি। এসময় আরও ৮ জন শ্রমিক অগ্নিদগ্ধ হয়ে মারা যান।
নিহত ফয়সাল গাজীপুর সদর উপজেলার বাড়িয়া ইউনিয়নের কালনী গ্রামের বর্গা চাষী সাইফুল খানের ছেলে ও কাজী আজিম উদ্দিন কলেজের স্নাতক (সম্মান) শ্রেণির ব্যবস্থাপনা বিভাগের প্রথম বর্ষের ছাত্র ছিলেন।
ফয়সালের খালাতো ভাই নাহিদ নূর আসাদ জানান, অন্যের জমি বর্গা চাষ করে কোনোমতে সংসার চালান ফয়সালের বাবা সাইফুল খান। ফয়সাল কলেজে ভর্তি হলেও টাকার অভাবে বই কিনতে পারছিলেন না। তার বই কেনার জন্য ও বেতনের টাকার যোগাড় করতেই দেড় মাস আগে ওই ফ্যান কারখানায় চাকরি নেন। কিন্তু লেখাপড়া বিঘ্নিত হচ্ছে বলে ফয়সাল চাকরি ছেড়ে দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। দুর্ঘটনার দিন রোববার বিকেলে ছুটির চার মিনিট আগে কারখানায় যান ফয়সাল। কিন্তু তার বেতন তুলে চাকরি ছাড়তে গিয়ে তাকে পৃথিবী ছেড়ে চলে যেতে হলো। এ খবর শুনে তার বাবা-মা যেন শোকে পাথর হয়ে পড়েন।
জয়দেবপুর ফায়ার স্টেশন অফিসার মো. জাকারিয়া খান জানান, সন্ধ্যা সাড়ে ৫টার দিকে আগুনের সূত্রপাত হলেও সন্ধ্যা ৫টা ৫২মিনিটে ওই কারখানার তিনতলা ভবনের তৃতীয় তলায় আগুন লাগার খবর পান তারা। পরে তাদের স্টেশনের চারটি ইউনিটের কর্মীরা ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ শুরু করেন। সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে তারা আগুন নেভান। পরে তৃতীয় তলায় ১০ জন শ্রমিকের লাশ দেখতে পান। প্রথমে তৃতীয় তলায় একটি দরজার কাছে আগুনের সূত্রপাত হলে শ্রমিকরা আত্মরক্ষায় ভেতরের দিকে চলে যায়। পরে মূহুর্তে আগুন নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেলে শ্রমিকরা আটকা পড়েন।