রাজশাহীতে শরীরে আগুন দিয়ে কলেজছাত্রী লিজা রহমানের আত্মহননের ঘটনায় পুলিশ ও ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টারের তথ্য-উপাত্তে গরমিল পেয়েছে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের তদন্ত কমিটি। তদন্তের অংশ হিসেবে শুক্রবার রাজশাহীতে এসে স্থানীয় একটি রেস্টহাউজে সাংবাদিকদের এ তথ্য দিয়েছেন কমিটি প্রধান কমিশনের পরিচালক (অভিযোগ ও তদন্ত) আল মাহমুদ ফাইজুল কবির।
তিনি বলেন, তদন্ত কমিটির কাছে পুলিশের সদস্যরা বলেছেন, লিজা থানায় সাধারণ ডায়ারি (জিডি) করার জন্য শ্বশুরবাড়ির তথ্য নিতে থানা থেকে বের হয়ে শরীরে আগুন দেন। অথচ থানায় পুলিশের করা জিডিতে লিজার শ্বশুরবাড়ির সব কথা রয়েছে। তাই এখানে অন্য ঘটনা রয়েছে। তদন্তে এমন আরো গরমিল পাওয়া গেছে, যা এখনই বলা যাবে না।
আল মাহমুদ ফাইজুল কবির বলেন, লিজা রহমান মৃত্যুর আগে তার ভাইকে একটি ভিডিও সাক্ষাত্কার দিয়েছিল। যেখানে দাবি করা হয়েছে, পুলিশ মামলা নিতে নারাজ ছিল। মামলা না নেওয়ায় সে আত্মহত্যা করেছে। আগামীকাল রবিবার তদন্ত কমিটি মানবাধিকার কমিশনে তাদের রিপোর্ট পেশ করবে বলে তিনি জানান।
এর আগে কলেজছাত্রী লিজা রহমানের আত্মহননের ঘটনায় পুলিশের কোনো গাফিলতি খুঁজে পায়নি পুলিশের অভ্যন্তরীণ তদন্ত কমিটি। তবে ঘটনাটি থানায় রেকর্ডে না রাখায় শাহ্ মখদুম থানার ওসিকে কৈফিয়ত তলবের সুপারিশ করা হয় পুলিশের তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনে।
গত ২৮ সেপ্টেম্বর নগরীর শাহ্ মখদুম থানায় স্বামী সাখাওয়াত হোসেনের বিরুদ্ধে নির্যাতনের অভিযোগ করতে যান রাজশাহী সরকারি মহিলা কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্রী লিজা রহমান। হঠাত্ থানা থেকে বের হয়ে তিনি গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন।
ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে গত ২ অক্টোবর চিকিত্সাধীন অবস্থায় লিজা রহমান মারা যান। এ ঘটনায় লিজার স্বামী সাখাওয়াত হোসেন, শ্বশুর মাহবুবুল হক খোকন ও শাশুড়ি নাজনীন আক্তারকে আসামি করে লিজার বাবা আলম মিয়া শাহ্ মখদুম থানায় আত্মহত্যার প্ররোচনার মামলা করেন। পরে পুলিশ তাদের সবাইকে গ্রেফতার করে।