ছাত্রলীগের নির্যাতনে নিহত বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদের বাড়িতে এখনও শোকের আবহ। পরিবারের কেউ এ ঘটনা মেনে নিতে পারছেন না।
রোববার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে আবরার ফাহাদের গ্রামের বাড়ি কুমারখালী উপজেলার রায়ডাঙ্গাতে এ দৃশ্য দেখা যায়।
শোকে পাথর নিহত আবরারের মা কথা বলেন সাংবাদিকদের সঙ্গে। কিন্তু শুরু থেকেই এক অদৃশ্য শংকায় সাংবাদিককে দেখে এড়িয়ে যাচ্ছেন আবরার ফাহাদের ছোট ভাই আবরার ফায়াজ।
বাবা রবকত উল্লাহও অনেকটা অনিচ্ছা সত্ত্বেও সৌজন্যতার খাতিরে দুই-একটি কথা বললেন।
তিনি বলেন, কিছু গণমাধ্যমের সংবাদে জানতে পারছি আমার ছেলেকে নিয়ে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে। কেউ বা রাজনৈতিক ফায়দা নিতে চাচ্ছে, কিন্তু এইটা আমার ছেলের লাশ নিয়ে যেন কেউ কোনো অপপ্রচার বা বিভ্রান্তি না ছড়ায় সে জন্য আমি সবার কাছে অনুরোধ করছি।
তিনি আরও বলেন, এমনিতেই সব সময়ের জন্যই এক অজানা শংকায় আমি ও আমার পরিবার-পরিজন চরম ভীতসন্ত্রস্ত জীবনযাপন করছি। আমরা এই শঙকামুক্ত নিরাপদ জীবনে ফিরতে চাই।
স্ত্রী রোকেয়া খাতুনে সুরে বরকত উল্লাহ বলেন, আমি চাই এই বিচার কাজটা যেন অতি সত্বর সম্পন্ন হয়। অন্যদের মতো বিচার প্রার্থনা করে দিনের পর দিন, মাসের পর মাস, বছরের পর বছর ধরে কোর্টের বারান্দায় ঘুরতে চাই না। শুধু নিম্নআদালত নয় উচ্চআদালতেও যেন দ্রুত এই মামলা নিষ্পত্তি করে ফেলে সেই ব্যবস্থা করার জন্য এবং দোষীদের সর্বোচ্চ শাস্তি যেন নিশ্চিত করার দাবি জানান তিনি।
তিনি বলেন, ভিডিও ফুটেজে যা দেখা গেছে তাতে তো প্রাথমিক প্রমাণ হয়েই গেছে, কারা জড়িত।
প্রসঙ্গত ভারতের সঙ্গে সম্পাদিত চুক্তি নিয়ে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেয়ায় খুন হন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদকে। ভারতের সঙ্গে চুক্তির বিরোধিতা করে গত ৫ অক্টোবর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দেন ফাহাদ।
এর জেরে পরদিন ৬ অক্টোবর রাতে শেরেবাংলা হলের নিজের ১০১১ নম্বর কক্ষ থেকে তাকে ডেকে নিয়ে ২০১১ নম্বর কক্ষে বেধড়ক পেটানো হয়। এতে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। পিটুনির সময় নিহত আবরারকে ‘শিবিরকর্মী’ হিসেবে চিহ্নিত করার চেষ্টা চালায় খুনিরা।