শিক্ষক নিবন্ধনের প্রিলিমিনারিতে পাসের হার কমার নেপথ্যে

নিজস্ব প্রতিবেদক |

সাধারণত পরীক্ষা খারাপ হলেই পাসের হার কম হয়। তবে ১৫তম শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষায় পাসের হার কমেছে ভিন্ন কারণে। আর তা হলো পরীক্ষার ওএমআর শিট যথাযথভাবে পূরণ করতে না পারা। প্রায় ৫ হাজার পরীক্ষার্থী প্রিলিমিনারিতে পাস নম্বর পেলেও ওএমআর শিট পূরণে ভুল করেছে। তাই তারা পরীক্ষায় পাস নম্বর পেলেও চুড়ান্ত মূল্যায়নে ফেল করেছে। বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষের (এনটিআরসিএ) কর্মকর্তাদের সাথে কথা বলে এ তথ্য জানা গেছে। তবে, এ ব্যাপারে প্রার্থীদের রয়েছে ভিন্নমত।  

গত ১৯ মে প্রকাশিত ১৫তম শিক্ষক নিবন্ধনের প্রিলিমিনারি পরীক্ষার ফল অনুযায়ী ১ লাখ ৫২ হাজার প্রার্থী উত্তীর্ণ হয়েছেন। পাসের হার ২০ দশমিক ৫৩ শতাংশ ভাগ। এই পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিল ৮ লাখ ৭৬ হাজার ৩৩ জন প্রার্থী। অথচ ১৪তম শিক্ষক নিবন্ধনের প্রিলিমিনারি পরীক্ষায় পাসের হার ছিল ২৬ দশমিক ০২ শতাংশ। ওই পরীক্ষায় ৮ লাখ ৬ হাজার ৬৫০ জন পরীক্ষার্থী অংশগ্রহণ নিয়ে পাস করেছিল ২ লাখ ৯ হাজার ৮৭৫ জন।

এনটিআরসিএ কর্মকর্তারা জানান, সঠিকভাবে ওএমআর শিট পূরণ না করায় অনেক প্রার্থীর খাতা বাতিল হয়েছে। এ জটিলতায় প্রায় ৫ হাজার প্রার্থী পাস নম্বর পেয়েও নিবন্ধনের প্রিলিমিনারি উত্তীর্ণ হতে পারেনি।

পাসের হার কমার কারণ নিয়ে ভিন্নমত দিয়েছে প্রার্থী ও এনটিআরসিএর কর্মকর্তারা। পাসের হার বৃদ্ধি বা কমে যাওয়ায় কারো হাত থাকে না দাবি করে এনটিআরসিএর কর্মকর্তারা দৈনিক শিক্ষাকে বলেন, কোনো পরীক্ষক খাতা মূল্যায়ন করেননি। ডিজিটাল পদ্ধতিতে কম্পিউটারে খাতা মূল্যায়ন করা হয়েছে।  তাই এখানে ভুলের কোনো সুযোগ নেই।

এনটিআরসিএর কর্মকর্তারা আরও জানান, পাসের হার সম্পূর্ণ প্রার্থীদের প্রস্তুতি ও পরীক্ষার উত্তর পত্রের উপর নির্ভর করে। এবার ফল প্রকাশের পর পাসের হারের বিষয়টি খতিয়ে দেখা হয়। দেখা গেছে, প্রায় ৫ হাজার প্রার্থীর খাতা বাতিল হয়েছে ওএমআর শিট পূরণের নিয়ম না মানার কারণে। তাদের বেশির ভাগই প্রিলিমিনারিতে পাস নম্বরের বেশি পেয়েছিলেন। কিন্তু ওএমআর শিট পূরণে ভুল হওয়ায় কম্পিউটার খাতার প্রকৃত মালিককে সনাক্ত করতে পারেনি। 

অবশ্য পরীক্ষার্থীদের ধারণা, পাসের হার কমেছে, ভুল উত্তরের জন্য নম্বর কেটে নেয়ার কারণে। প্রার্থীরা জানান, একটি প্রশ্নের ভুল উত্তরের জন্য আধা নম্বর কেটে নেয়া হয়েছে। তাই, অনেক প্রার্থী পাস নম্বর তুলতে পারেননি। এ কারণে প্রিলিমিনারি পরীক্ষায় পাসের হার কমেছে। তবে, প্রার্থীদের এই যুক্তি ততটা জোরালো নয়। কেননা ১৪তম শিক্ষক নিবন্ধনের প্রিলিমিনারি পরীক্ষায়ও প্রতিটি ভুল উত্তরের জন্য আধা নম্বর কেটে রাখা হয়েছিল বলে জানা গেছে।   

প্রার্থীরা আরও জানান, গতবারের তুলনায় সার্বিকভাবে প্রশ্ন কঠিন হয়নি। তবে, স্কুল পর্যায়ের প্রিলিমিনারি পরীক্ষার গণিত অংশের প্রশ্ন কিছুটা কঠিন ছিল। সচরাচর ত্রিকোণমিতি থেকে নিবন্ধন পরীক্ষার গণিত অংশের প্রশ্ন আসে না। কিন্তু ১৫তম শিক্ষক নিবন্ধনের প্রিলিমিনারি পরীক্ষায় ত্রিকোণমিতি থেকে প্রশ্ন দেয়া হয়েছিল। এ কারণে পাসের হার কমেছে বলে মত দিয়েছেন কয়েকজন প্রার্থী। 

প্রার্থীরা বলেন, কলেজ পর্যায়ের ইংরেজি অংশে সাধারণত সাহিত্য থেকে প্রশ্ন আসে। কিন্তু ১৫তম নিবন্ধনের প্রিলিমিনারিতে কলেজ পর্যায়ের ইংরেজি অংশে গ্রামার থেকে বেশি প্রশ্ন দেয়া হয়েছিল। গ্রামারে দুর্বলতার কারণে বেশি নম্বর কাটা গেছে প্রার্থীদের। তাই পাসের হার কমেছে বলে মত দিয়েছেন অনেক প্রার্থী।    

উল্লেখ্য, ১৫তম শিক্ষক নিবন্ধনের প্রিলিমিনারিতে ১ লাখ ৫২ হাজার প্রার্থী উত্তীর্ণ হয়েছেন। এদের মধ্যে স্কুল পর্যায়ে ৫৫ হাজার ৫৯৬ জন, স্কুল পর্যায়-২ এ ৪ হাজার ১২৯ জন এবং কলেজ পর্যায়ে ৯২ হাজার ২৭৫ জন প্রার্থী রয়েছেন। এ পরীক্ষায় ৮ লাখ ৭৬ হাজার ৩৩ জন প্রার্থী অংশগ্রহণ করেছিলেন। 


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
পরীক্ষার নাম এসএসসিই থাকবে, ওয়েটেজ ৫০ শতাংশ - dainik shiksha পরীক্ষার নাম এসএসসিই থাকবে, ওয়েটেজ ৫০ শতাংশ ফরেনসিক অডিটে ফাঁসছেন দশ হাজার জাল সনদধারী - dainik shiksha ফরেনসিক অডিটে ফাঁসছেন দশ হাজার জাল সনদধারী কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা সহায়তা ট্রাস্টের পিএইচডি ফেলোশিপ - dainik shiksha প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা সহায়তা ট্রাস্টের পিএইচডি ফেলোশিপ সাংবাদিকদের ঘুষ বিষয়ক ভাইরাল ভিডিও, ইরাব কোনো বিবৃতি দেয়নি - dainik shiksha সাংবাদিকদের ঘুষ বিষয়ক ভাইরাল ভিডিও, ইরাব কোনো বিবৃতি দেয়নি জড়িত মনে হলে চেয়ারম্যানও গ্রেফতার: ডিবির হারুন - dainik shiksha জড়িত মনে হলে চেয়ারম্যানও গ্রেফতার: ডিবির হারুন কলেজ পরিচালনা পর্ষদ থেকে ঘুষে অভিযুক্ত সাংবাদিককে বাদ দেওয়ার দাবি - dainik shiksha কলেজ পরিচালনা পর্ষদ থেকে ঘুষে অভিযুক্ত সাংবাদিককে বাদ দেওয়ার দাবি পছন্দের স্কুলে বদলির জন্য ‘ভুয়া’ বিবাহবিচ্ছেদ - dainik shiksha পছন্দের স্কুলে বদলির জন্য ‘ভুয়া’ বিবাহবিচ্ছেদ জাতীয়করণ আন্দোলনের শিক্ষক নেতা শেখ কাওছার আলীর বরখাস্ত অনুমোদন - dainik shiksha জাতীয়করণ আন্দোলনের শিক্ষক নেতা শেখ কাওছার আলীর বরখাস্ত অনুমোদন হিট স্ট্রোকের ঝুঁকি কমাতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নির্দেশনা - dainik shiksha হিট স্ট্রোকের ঝুঁকি কমাতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নির্দেশনা সনদ বাণিজ্য : কারিগরি শিক্ষা বোর্ড চেয়ারম্যানের স্ত্রী কারাগারে - dainik shiksha সনদ বাণিজ্য : কারিগরি শিক্ষা বোর্ড চেয়ারম্যানের স্ত্রী কারাগারে সপ্তম শ্রেণিতে শরীফার গল্প থাকছে, বিতর্কের কিছু পায়নি বিশেষজ্ঞরা - dainik shiksha সপ্তম শ্রেণিতে শরীফার গল্প থাকছে, বিতর্কের কিছু পায়নি বিশেষজ্ঞরা please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0026330947875977