মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের স্বাক্ষরিত ভুয়া নিয়োগপত্র দিয়ে বাগেরহাট, খুলনা ও সাতক্ষীরাসহ তিন জেলার বিভিন্ন উপজেলার ১৫০ বেকার যুবকের কাছ থেকে প্রায় দেড় কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে একটি প্রতারক চক্র। চাকরি ও লুণ্ঠিত অর্থ কোনটাই না পেয়ে এখন দিশেহারা প্রতারণার শিকার যুবকরা। তবে, অর্থ উদ্ধারের জন্য ক্ষতিগ্রস্তদের পক্ষে বাগেরহাটের শরণখোলা উপজেলার গোলবুনিয়া এলাকার বাসিন্দা মিলন হাওলাদার বাদী হয়ে প্রতারক চক্রের বিরুদ্ধে শরণখোলা থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন। এছাড়া অপর একজন একটি জিডি করেছেন।
লিখিত অভিযোগে জানা যায়, বাগেরহাট জেলার মোল্লাহাট উপজেলার উদয়পুর এলাকার বাসিন্দা সিকু কাজীর ছেলে কাজী কামরুল ইসলামের নেতৃত্বে একই এলাকার আহম্মেদ মোল্লার ছেলে এমদাদুল হক মিলন, নুরুজামানের পুত্র মিলন, খুলনার সোনাডাঙ্গা এলাকার বাসিন্দা আব্দুল হাই পাটোয়ারীর ছেলে আলী আজগর খোকন,বয়রা এলাকার শাহ আলমের ছেলে সাইফুল ইসলাম সজীবসহ ৫/৬ ব্যক্তি নিজেদের মাধ্যমিক উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের কর্মকর্তা পরিচয় দিয়ে ২০১৩ খ্রিষ্টাব্দে শিক্ষা দপ্তরের (ওএমজি-৯৪জিএ/২০১১/৬৬৭৫ নং) স্মারকে প্রকাশিত একটি নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির অনুকূলে উচ্চমান সহকারী,অফিস সহকারী ও এমএলএসএস সহ বিভিন্ন পদে ৩৫০ জনকে নিয়োগ পাইয়ে দেয়ার প্রলোভন দেখান এবং তার জন্য প্রত্যেক প্রার্থীকে ৩ লাখ টাকা করে ঘুষ দিতে হবে বলে চুক্তি করেন।
সেই অনুসারে ২০১৩ খ্রিষ্টাব্দে মিলন, সাইফুল, মনির, বেল্লাল, মাসুদা, মল, হাফিজা, শিমুল, সাহানা, শর্মিষ্ঠা ও রাফুজাসহ বাগেরহাট, খুলনা ও সাতক্ষীরা জেলার বিভিন্ন উপজেলার বহু প্রার্থীর কাছ থেকে তাদের জীবন বৃত্তান্তসহ প্রয়োজনীয় কাগজপত্র গ্রহণ করেন। পরবর্তী সময়ে, ২০১৮ খ্রিষ্টাব্দে আবেদনকারী সকলকে মাধ্যমিক উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের স্বাক্ষরিত নিয়োগপত্র দেন এবং ২০১৯ খ্রিষ্টাব্দের ৭ জানুয়ারির মধ্যে তাদেরকে স্ব স্ব কর্মস্থলে যোগদান করতে বলে ১৫০ প্রার্থীর কাছ থেকে প্রায় দেড় কোটি টাকা নেয়। ওই চক্রের কথা অনুযায়ী প্রার্থীরা তাদের নিজ নিজ কর্ম এলাকায় যোগদান করতে গিয়ে জানতে পারেন নিয়োগপত্রগুলো সম্পূর্ণ ভুয়া। তাদের এমন প্রতারণার ফাঁদে পড়ে, নিঃস্ব হন শরণখোলা, রামপাল, ফকিরহাট, বাগেরহাট, খুলনা সদর, বটিয়াঘাটা, ডুমুরিয়া ,ফুলতলা,সাতক্ষীরা, শ্যামনগর ,তালাসহ তিন জেলার দেড় শ’ যুবক। পরে প্রতারিতরা কর্মকর্তা পরিচয়দানকারী মোল্লাহাটের কামরুলসহ অন্যদের নিকট টাকা ফেরত চাইলে তারা প্রভাবশালী বিভিন্ন ব্যক্তির নাম নিয়ে নানাবিধ ভয়ভীতি দেখান। এছাড়া বিষয়টি নিয়ে বাড়াবাড়ি করলে প্রাণে মেরে ফেলারও হুমকি দেন।