প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় প্রশ্নপত্র ফাঁস ও অসদুপায় অবলম্বনের অভিযোগে পটুয়াখালীর বিভিন্ন এলাকা থেকে মোট ৪৬ জনকে আটক করেছে পুলিশ। এরমধ্যে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের দুইজন স্টাফসহ ১৩ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দিয়েছে ভ্রাম্যমাণ আদালত। এছাড়া পুলিশ বাদী হয়ে পাবলিক পরীক্ষা নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা দায়েরের পর বাকি ৩৩ জনকে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে।
দণ্ডপ্রাপ্তদের মধ্যে রয়েছেন জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের খাদ্য সরবরাহকারী (ওমেদার) দিপু শিকদার ও সাইফুল ইসলাম। অন্যরা হলেন রবিউল আলম, গোলাম সরোয়ার, মিজানুর রহমান, বাবুল হোসেন, সিদ্দিকুর রহমান, সাবিনা ইয়াসমিন, ফারুক হোসেন, রুবিনা, লীজা আক্তার, কুদ্দুস এবং নওমালা ইউনিয়নের স্বাস্থ্য সহকারী শহীদুল ইসলাম।
জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মইনুল হাসান জানান, শুক্রবার সকাল সাড়ে ১০টায় পরীক্ষা শুরু হওয়ার পর বিভিন্ন কেন্দ্র ও কেন্দ্রের আশপাশের এলাকা থেকে তাদেরকে আটক করা হয়। এ সময় আটককৃতদের শরীর তল্লাশি করে মোবাইল ফোনের বিভিন্ন ডিভাইস, ৪০টি মোবাইল ফোনসহ অন্যান্য সামগ্রী উদ্ধার করা হয়। অনেকের মোবাইল ফোনে প্রশ্ন ও প্রশ্নের উত্তরপত্র এবং উত্তরপত্রের স্ক্রিনশট পাওয়া যায়।
তিনি জানান, গত দুইদিন ধরে পুলিশের বিভিন্ন সংস্থার গোয়েন্দা সদস্যরা গোপনে অভিযান পরিচালনা করছে। এ সময় বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করে এই চক্রের পিছু নেয় গোয়েন্দারা। আজ সকালে বিভিন্ন স্থানে যখন চক্রটি প্রশ্ন উত্তর দেয়া নেয়া শুরু করে ঠিক তখনই হাতেনাতে তাদেরকে আটক করা হয়। তিনি জানান, এরা দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন নিয়োগ পরীক্ষায় গোপনে এ কাজটি করে আসছিল। আজ দুপুর সাড়ে ১২টায় জেলা পুলিশ সুপারের কনফারেন্স রুমে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার এসব তথ্য জানান। এদিকে পুলিশের এই সাড়াশি অভিযানে সাধারণ মানুষের মধ্যে স্বস্তি ফিরে আসছে বলে জানান অনেকে।
অপরদিকে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট নুরুল হাফিজ জানান, জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের দুই জন খাবার সরবরাহকারী আইন অমান্য করে গোপন কক্ষে প্রবেশ করায় এক মাস করে বিনাশ্রম কারাদণ্ড প্রদান করা হয়েছে তাদের। এছাড়া অপর ১১ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে। শুক্রবার বেলা ১২টায় পরীক্ষার সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে জেলা প্রশাসকের দরবার হলে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা জানান।
এ দিকে প্রশ্ন ফাঁসের ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে নওমালা ইউনিয়নের স্বাস্থ্য সহকারী শহীদুল ইসলামকে (শহীদ) এক মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড প্রদান করেছেন বাউফল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) শুভ্রা দাস। স্থানীয়দের মাঝে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক সমালোচনার সৃষ্টি হয়েছে। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স কার্যালয় এ তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছে।