শিক্ষক নিয়োগে কমিশন গঠন আগামী বছর

রুম্মান তূর্য |

শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সব পর্যায়ের শিক্ষক নিয়োগে স্বচ্ছতা আনতে সম্প্রতি একটি শিক্ষক নিয়োগ কমিশন গঠনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। বেসরকারি শিক্ষক নিয়োগ কমিশন বা এনটিএসসি নামের এ কমিশন গঠন করা হবে। এ কমিশন গঠিত হবার পর শিক্ষক নিয়োগের জন্য প্রার্থী বাছাইয়ের পর নিয়োগের জন্য সুপারিশ করার দায়িত্ব আর এনটিআরসিএর হাতে থাকবে না। কমিশন বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষ, উপাধ্যক্ষ, প্রধান শিক্ষক ও সহকারী প্রধান শিক্ষকসহ সকল পর্যায়ের শিক্ষক নিয়োগ দেবে। আর আগামী বছর মানে ২০২০ খ্রিষ্টাব্দের মধ্যে এনটিএসসি গঠনের পরিকল্পনা নিয়ে কাজ শুরু হয়েছে। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের একাধিক সূত্র দৈনিক শিক্ষাডটকমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।

মূলত ক্যাডার এবং ননক্যাডার পদে সরকারি চাকরিতে জনবল নিয়োগের জন্য গঠিত হয় পাবলিক সার্ভিস কমিশন বা পিএসসি। পিএসসির আদলেই এনটিএসসি গঠিত হবে বলে দৈনিক শিক্ষাডটকমকে জানিয়েছেন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা। সেকেন্ডারি এডুকেশন ডেভেলপমেন্ট প্রোগ্রামের (এসইডিপি) আওতায় এ কমিশন গঠনের কাজ চলছে। আগামী ২০২০ খ্রিষ্টাব্দে এনটিএসসি গঠনের পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। 

শুক্রবার (২৭ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় দৈনিক শিক্ষাডটকমের পক্ষ থেকে করা এক প্রশ্নের জবাবে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব জাবেদ আহমেদ। তিনি বলেন, এসইডিপি প্রকল্পের আওতায় এনটিএসসি গঠিত হচ্ছে। আগামীবছরের মধ্যে বেসরকারি শিক্ষক নিয়োগ কমিশন গঠনের পরিকল্পনা নিয়ে কাজ চলছে। মূলত বেসরকারি শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়া আরও বড় পরিসরে স্বচ্ছভাবে পরিচালনা করতে এমন উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।

এদিকে শিক্ষামন্ত্রণালয় সূত্র দৈনিক শিক্ষাডটকমকে জানায়, বেসরকারি শিক্ষক নিয়োগ কমিশনের আইনের খসড়া তৈরি ও সেটি পাশ করা হবে। পাশাপাশি এনটিএসসির জন্য জনবল নিয়োগ করতে হবে। অফিস তৈরি করতে হবে। এসব মিলিয়ে সময় লাগেবে।

জানা গেছে, শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়নের উদ্দেশ্যে ২০০৫ খ্রিষ্টাব্দে বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষ বা এনটিআরসিএ গঠিত হয়। এটা ছিলো প্রার্থীদের প্রাক-যোগ্যতার সনদ। কিন্তু শিক্ষক নিয়োগে স্বচ্ছতা আনতে ২০১৫ খ্রিষ্টাব্দ থেকে এন্ট্রি লেভেলের শিক্ষক নিয়োগে প্রার্থী বাছাইয়ের দায়িত্ব এনটিআরসিএকে দেয়া হয়। এর আগে নিবন্ধন সনদধারীদের শিক্ষক হিসেবে নিয়োগের একচ্ছত্র ক্ষমতা ছিলো ম্যানেজিং কমিটি বা গভর্নিং বডির হাতে। এখন এনটিআরসিএর সুপারিশ করা প্রার্থী ছাড়া শিক্ষক নিয়োগের সুযোগ নেই। এনটিআরসিএর পরীক্ষায় উত্তীর্ণ প্রার্থীদের আর কোনও পরীক্ষা দিতে হয় না। সরাসরি নিয়োগপত্র দেয় প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষ। এ বিধান অনুযায়ী ২০১৬ ও ২০১৮ খ্রিষ্টাব্দে দুই দফায় শিক্ষক নিয়োগের সুপারিশ করে এনটিআরসিএ। 

গতমাসে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে অনুষ্ঠিত এক সভায় শিক্ষক নিয়োগ কমিশন ও এনটিএসসি গঠনের বিষয়ে আলোচনা হয়। সরকারি কর্ম কমিশনের (পিএসসি) আদলে বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সব পদে শিক্ষক নিয়োগ দিতে প্রার্থী বাছাইয়ের কাজ করবে এ কমিশন। সভায় কমিশন গঠনে একটি কর্মপরিকল্পনা তৈরির সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। সেপ্টেম্বর মাসের মধ্যেই এ কর্ম পরিকল্পনা তৈরি করার পরিকল্পনা করা হয়েছিল। 

জানা গেছে, পিএসসি বা সরকারি কর্ম কমিশনের আদলে শিক্ষক নিয়োগ কমিশন গঠন করার বিষয়ে প্রাথমিক সিদ্ধা্ন্ত হয়েছে। এ কমিশনের সর্বোচ্চ পদটি সাংবিধানিক পদ হবে। এনটিআরসিএর থেকে শক্তিশালী করে এনটিএসসি গঠিত হচ্ছে। পিএসসির আদলেই বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সব পদে শিক্ষক নিয়োগ করবে এ কমিশন। কমিশন গঠিত হলে শিক্ষক নিয়োগের ক্ষমতা এনটিআরসিএর হাতে থাকছে না। কমিশনই সব পদে শিক্ষক নিয়োগ দেবে।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
ছুটি না বাড়ালে বাড়ি যেতে হতে পারে ঈদের দিন - dainik shiksha ছুটি না বাড়ালে বাড়ি যেতে হতে পারে ঈদের দিন হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী - dainik shiksha হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী জালিয়াতি করে পদোন্নতি শিক্ষা ক্যাডার গ্যাঁড়াকলে - dainik shiksha জালিয়াতি করে পদোন্নতি শিক্ষা ক্যাডার গ্যাঁড়াকলে রুয়েটের সাবেক উপাচার্য-রেজিস্ট্রারের বিরুদ্ধে মামলা - dainik shiksha রুয়েটের সাবেক উপাচার্য-রেজিস্ট্রারের বিরুদ্ধে মামলা উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় - dainik shiksha উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগে সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তি - dainik shiksha প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগে সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তি উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় - dainik shiksha উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী - dainik shiksha হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0056378841400146