শিক্ষক পদায়নে অনিয়মের অভিযোগ

নীলফামারী প্রতিনিধি |

নীলফামারীতে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষক পদায়নে অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে। নীতিমালা লঙ্ঘন করে শহরের কালীদাস সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এক সহকারী শিক্ষিকাকে পদায়ন দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে সদর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা এনামুল হকের বিরুদ্ধে।

সরকারি নীতিমালায় আছে, পৌর এলাকার কোনো সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকের পদ খালি হলে পদ পূরণে পৌর এলাকার স্থায়ী ঠিকানার শিক্ষকরা জ্যেষ্ঠতার ভিত্তিতে অগ্রাধিকার পাবেন। পদ খালি হওয়ার সাত কার্যদিবস পর্যন্ত আবেদনের সুযোগ পাবেন বদলি-ইচ্ছুক শিক্ষকরা। এরপর আবেদনকারী শিক্ষকদের তালিকা টানাতে হবে সংশ্লিষ্ট উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তার কার্যালয়ের নোটিশ বোর্ডে। তবে নীলফামারী পৌর এলাকার কালীদাস সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের একজন সহকারী শিক্ষকের শূন্যপদ পূরণে নীতিমালার কোনো শর্তই মানা হয়নি। নীতিমালার তোয়াক্কা না করে পদ শূন্যের দিনই আরেকজনকে পদায়ন দেওয়া হয়। পদায়ন পাওয়া শিক্ষকের নাম আমিনা খাতুন। তিনি জেলা সদরের কচুকাটা ইউনিয়নের দুই নম্বর কচুকাটা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে কর্মরত ছিলেন। তাঁর স্থায়ী ঠিকানা উপজেলার ইটাখোলা ইউনিয়নের মাস্টারপাড়া গ্রামে। তাঁর স্বামী আব্দুস সাত্তার সদর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা দপ্তরের সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা।

কালীদাস সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পদায়ন পেতে ইচ্ছুক এক শিক্ষকের অভিযোগ, ‘নীতিমালা লঙ্ঘন করে ওই পদায়নের আদেশ দেওয়া হয়েছে। করোনা পরিস্থিতিতে বিদ্যালয় বন্ধের সময় পদ খালি করে বিশেষ সুবিধা নিয়ে একই দিন আরেকজনকে পদায়নের আদেশ দেওয়া হয়েছে।’ অন্য এক শিক্ষক বলেন, ‘নীতিমালা সবার জন্য সমান। বিশেষ ক্ষমতা বলে কেউ সুযোগ বেশি নিবেন—এটা মানা সম্ভব নয়। অবৈধ ওই আদেশ বাতিল করে নীতিমালার ভিত্তিতে পদটি পূরণের দাবি জানাচ্ছি।’

জেলা ও উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা দপ্তর সূত্র মতে, জেলা শহরের কালীদাস সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা রোশেনা হামিদ তাঁর স্বামীর কর্মস্থল কিশোরগঞ্জ উপজেলায় বদলির জন্য আবেদন করেন। তাঁর আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে গত ২৪ মার্চ জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা কিশোরগঞ্জ উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তার বরাবরে পদ খালি সাপেক্ষে বদলির প্রস্তাব পাঠান। কিশোরগঞ্জ উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা একই তারিখে খিলালগঞ্জ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পদায়নের জন্য পত্র পাঠান নীলফামারী জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার কাছে। পরদিন ২৫ মার্চ রোশেনা হামিদকে প্রস্তাবিত বিদ্যালয়ে বদলির আদেশ জারি করা হয়। একই সঙ্গে কালীদাস সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শূন্যপদে আমিনা খাতুনকে পদায়নের অনুমতি দেন জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা নবেজ উদ্দিন সরকার।

এ বিষয়ে কালীদাস সরকারি বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নার্গিস আঞ্জুমান আরা বলেন, ‘করোনা দুর্যোগের কারণে গত ১৭ মার্চ থেকে বিদ্যালয় বন্ধ আছে। বদলি ও শূন্যপদে কে এসেছে—বিষয়টি আমি এখনো অফিসিয়ালি জানি না।’

সদর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা এনামুল হক বলেন, ‘ওই বিদ্যালয়ের পদটি খালি হবে সেটি অনেক আগে থেকে শিক্ষকরা জানলেও অন্য কেউ আবেদন করেননি। আমিনা খাতুন একমাত্র আবেদনকারী হওয়ায় তাঁকে পদায়ন দেওয়া হয়েছে। এখানে নীতিমালার কোনো লঙ্ঘন হয়নি। এ ব্যাপারে শিক্ষকদের কোনো অভিযোগ থাকলে আমাকে অথবা জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে জানাতে পারেন।’

জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা নবেজ উদ্দিন সরকার বলেন, ‘নীতিমালা অনুযায়ী উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আমার কাছে প্রস্তাবনা পাঠালে আমি সেটা অনুমোদন করি। সেখানে কোনো অনিয়ম বা নীতিমালা লঙ্ঘন হলে দায়ী থাকবেন উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা। বিষয়টি নিয়ে শিক্ষকরা আমার কাছে অভিযোগ করলে অবশ্যই দেখব।’

 


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
ছুটি না বাড়ালে বাড়ি যেতে হতে পারে ঈদের দিন - dainik shiksha ছুটি না বাড়ালে বাড়ি যেতে হতে পারে ঈদের দিন হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী - dainik shiksha হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী জালিয়াতি করে পদোন্নতি শিক্ষা ক্যাডার গ্যাঁড়াকলে - dainik shiksha জালিয়াতি করে পদোন্নতি শিক্ষা ক্যাডার গ্যাঁড়াকলে রুয়েটের সাবেক উপাচার্য-রেজিস্ট্রারের বিরুদ্ধে মামলা - dainik shiksha রুয়েটের সাবেক উপাচার্য-রেজিস্ট্রারের বিরুদ্ধে মামলা উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় - dainik shiksha উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগে সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তি - dainik shiksha প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগে সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তি উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় - dainik shiksha উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী - dainik shiksha হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0029940605163574