ছয়শ’ চারটি স্কুল ও মাদরাসায় এক হাজার ১৯৯টি ভোকেশনাল শিক্ষক পদের মধ্যে মাত্র ৬৭৬টি পদে প্রার্থী খুঁজে পেয়েছে বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষ (এনটিআরসিএ)। সোমবার (২৭ জানুয়ারি) এসব প্রার্থীদের নিয়োগ সুপারিশ করা হয়েছে। এসব পদে নিয়োগে ১৩ হাজার ২৭৬টি আবেদন জমা পড়লেও ৩৪৩টি পদের জন্য কোন প্রার্থী পায়নি এনটিআরসিএ। আর ১৮০টি মহিলা কোটার পদে কোন মহিলা প্রার্থী আবেদন না করায় নিয়োগ সুপারিশ করতে পারেনি এনটিআরসিএ। এনটিআরসিএর একজন উধ্বতন কর্মকর্তা দৈনিক শিক্ষাডটকমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।
জানা গেছে, সুপারিশপ্রাপ্ত প্রার্থীদেরে এসএসএম করে জানিয়ে দেয়া হচ্ছে। প্রার্থীরা এনটিআরসিএর নির্ধারিত ওয়েবসাইট (http://ngi.teletalk.com.bd/) থেকে সুপারিশপ্রাপ্ত প্রার্থীদের তালিকা দেখা যাবে। প্রতিষ্ঠান প্রধানরা তাদের ইউজার আইডির ও পাসওয়ার্ড ব্যবহার করে সুপারিশ প্রাপ্তদের তালিকা দেখতে পারবেন। প্রার্থীরা সুপারিশপত্র ডাউনলোড করে নিজ নিজ পদে যোগদান করবেন।
এর আগে গত ৭ জানুয়ারি ছয়শ’ চারটি স্কুল ও মাদরাসায় এক হাজার ১৯৯টি শিক্ষক পদে নিয়োগে বিশেষ গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষ (এনটিআরসিএ)। গত ৮ জানুয়ারি থেকে এসব পদে আবেদন গ্রহণ শুরু হয়। ২২ জানুয়ারির পর্যন্ত চলে আবেদন গ্রহণ।
এনটিআরসিএর কর্মকর্তারা দৈনিক শিক্ষাডটকমকে জানান, গত ২২ জানুয়ারি রাত ১২টা পর্যন্ত আবেদনের সুযোগ পেয়েছেন প্রার্থীরা। বিশেষ গণবিজ্ঞপ্তির এ ১ হাজার ১৯৯টি পদের জন্য ১৩ হাজার ২৭৬টি আবেদন জমা পড়েছে। সে প্রেক্ষিতে ৬৭৬ জন নিবন্ধিত প্রার্থীকে নিয়োগ সুপারিশ করা হয়েছে।
এদিকে এনটিআরসিএ সূত্র দৈনিক শিক্ষাডটকমকে জানায়, মাত্র ৬৭৬টি পদে প্রার্থী খুঁজে পওয়া গেছে। ৩৪৩টি পদের জন্য কোন প্রার্থী পাওয়া যায়নি। আর ১৮০টি পদে মহিলা প্রার্থী প্রয়োজন থাকলেও সেসব পদে কোন প্রার্থী আবেদন না করায় নিয়োগ সুপারিশ করতে পারেনি এনটিআরসিএ।
জানা গেছে, ১০টি বিষয়ে ১৫তম শিক্ষক নিবন্ধনে উত্তীর্ণরা এসব পদে নিয়োগের আবেদন করেছেন। ফুড প্রসেসিং, সিভিল কনস্ট্রাকশন, জেনারেল ইলেকট্রিক্যাল ওয়ার্কস, জেনারেল ইলেক্ট্রনিক্স ওয়ার্কস, ড্রেস মেকিং, ইনফরমেশন অ্যান্ড কমিউনিকেশন টেকনোলজি, জেনারেল মেকানিক্স, রেফ্রিজারেশন অ্যান্ড এয়ার কন্ডিশনিং, প্লাম্বিং অ্যান্ড পাইপ ফিটিং এবং ওয়েল্ডিং অ্যান্ড ফ্যাব্রিকেশন বিষয়ে শিক্ষক নিয়োগের সুপারিশ করা হয়েছে।
সাধারণ ধারার স্কুলগুলোতেও চালু হচ্ছে বৃত্তিমূলক বা ভোকেশনাল কোর্স। সাধারণ শিক্ষায় বৃত্তিমূলক কোর্স চালুর অংশ হিসেবে এসব শিক্ষক নিয়োগ দেয়া হবে। জনবল কাঠামো সংশোধন করে এসব পদের শিক্ষকদের এমপিওভুক্ত করা হবে। ইতোমধ্যে এসব পদে নিয়োগে সম্মতি জানিয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়। প্রাথমিকভাবে সেসিপ প্রকল্পের আওতায় ৬০৪টি স্কুল ও মাদরাসায় ৬৭৬টি পদে শিক্ষক নিয়োগের সুপারিশ করা হল।
জানা গেছে, প্রাথমিকভাবে সেসিপ প্রকল্পের আওতায় ছয় শতাধিক স্কুলে ভোকেশনাল কোর্স চালু করা হবে। এ লক্ষ্যে প্রতিষ্ঠানগুলোর জনবল কাঠামো সংশোধন করে নতুন ৪টি পদ অর্ন্তভুক্ত করা হবে। আর জনবল কাঠামো সংশোধন করে এ স্কুলগুলোতে ২জন ট্রেড ইন্সট্রাক্টর ও ২জন ল্যাব অ্যাসিসটেন্ট নিয়োগে গত ৩ নভেম্বর সম্মতি জানিয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়। সে প্রেক্ষিতে, গত ১ ডিসেম্বর স্কুলগুলোতে ২জন ট্রেড ইন্সট্রাক্টর ও ২জন ল্যাব অ্যাসিসটেন্ট নিয়োগে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ দিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
জানা গেছে, সাধারণ মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদেরও পড়তে হবে ভোকেশনাল কোর্স। প্রতিটি প্রতিষ্ঠান কারিগরি শিক্ষা বোর্ড পরিচালিত ট্রেডগুলোর মধ্যে পছন্দ অনুসারে দুটি ট্রেড চালু করতে হবে। বৃত্তিমূলক শিক্ষায় শিক্ষার্থীদের উদ্বুদ্ধ করতে, কর্মমূখী শিক্ষাকে আরও জনপ্রিয় করতে এবং বেকারত্ব কমাতে এ উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। ২০২১ খ্রিষ্টাব্দ থেকে প্রতিটি সাধারণ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে দুটি করে ভোকেশনাল ট্রেড অন্তর্ভুক্ত হচ্ছে বলে সম্প্রতি এক অনুষ্ঠানে জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি। আর ইতোমধ্যে ভোকেশনাল কোর্স চালুর কাজ শুরু করেছে সরকার।