শিক্ষক সংকট, ক্লাস নেয় এলাকার ছেলেমেয়েরা

অষ্টগ্রাম (কিশোরগঞ্জ) প্রতিনিধি |

অষ্টগ্রাম উপজেলার কলমা ইউনিয়নের চণ্ডীপুর বড়হাটী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ২২৫ জন ছাত্র-ছাত্রীর জন্য কোনো শিক্ষক নেই। জানা যায়, দীর্ঘদিন যাবত এই স্কুলটি বরাবরের মতোই অবহেলিত ও শিক্ষক শূন্যতা বিরাজ করে আসছে।  সচেতন ব্যক্তির অভাব থাকায় বিষয়টি শিক্ষা কর্মকর্তার নজরে এলেও গুরুত্ব পায়নি।

সরেজমিন অবস্থান করা এলাকার বিশিষ্ট ব্যক্তি বীর মুক্তিযোদ্ধা সুবোধ চন্দ্র দাস জানান, স্কুল প্রতিষ্ঠার পর থেকে স্কুলে স্থায়ীভাবে কোনো শিক্ষক আসেনি। এলাকার ছেলেমেয়েরাই স্কুলের ক্লাস চালায় দেখছি। একই অবস্থা আবদুল্লাপুর ইউনিয়নের পশ্চিম বাজুকা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের। ৩০২ জন ছাত্রছাত্রীর জন্য মাত্র একজন সহকারী শিক্ষক। বিগত ১৯৩৮ খ্রিষ্টাব্দের ৩১শে ডিসেম্বর বিদ্যালয়টি স্বর্গীয় দাতা ঈষাণ চন্দ্র দত্তের অর্থায়নে প্রতিষ্ঠা লাভ করে। প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে ১-২ জন শিক্ষক দিয়ে বিদ্যালয়ে পাঠদান কার্যক্রম শুরু হলেও ৮১ বছরেও স্কুলের কোনো পরিপূর্ণ শিক্ষক পাননি। অষ্টগ্রাম উপজেলার অবহেলিত বাজুকা গ্রামে স্কুলের শিক্ষক শূন্যতার চরম বিপর্যয় চলমান। এই স্কুলে শিক্ষক নিয়োগ দেয়া হলেও তারা যোগদানের পর ডেপুটেশনে অন্যত্র চলে যান। প্রতি বছরই এরকম শিক্ষক সংকটে ভুগছে স্কুলের ছাত্রছাত্রীরা। এতে বাজুকা গ্রামের ৮০ ভাগ ছেলেমেয়ে শিক্ষা থেকে বঞ্চিত। অধিকাংশ পরিবার তাদের সন্তানদের প্রাইমারি শিক্ষার জন্য পার্শ্ববর্তী কোনো স্কুলে লেখাপড়া করতে পাঠান। তবে ঝরে যাওয়া শিক্ষার্থীর সংখ্যাই বেশি।

গত ২০১৮ খ্রিষ্টাব্দের মার্চ মাসের ২৮ তারিখ প্রধান শিক্ষক পদে পদোন্নতি পেয়ে মো. তোফাজ্জল হোসেন বাজুকা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে যোগদান করেন। তিনি জানান, বর্তমানে একজন শিক্ষক দিয়ে কোনোরকম ক্লাস চলছে। শিক্ষক না থাকার কারণে ছাত্রছাত্রীর পড়াশোনার বিঘ্ন ঘটছে। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক তোফাজ্জল হোসেন জানান, স্কুলটি উপজেলা হতে হাওরের দূরবর্তী স্থানে অবস্থান করায় এবং যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন থাকায় সর্বদাই শিক্ষক সংকট পোহাতে হচ্ছে। শিক্ষক সংকটের কারণে পাঠদানে হিমশিম খেতে হচ্ছে।

উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা এনামুল হক খানের সঙ্গে কথা বললে তিনি জানান, এ বিষয়ে স্কুলের প্রধান শিক্ষকের সঙ্গে কথা বলে জেনে নেন। রূঢ় আচরণ করে তিনি সাংবাদিককে এড়িয়ে যান।

অভিভাবক আক্রাম খান বলেন, অষ্টগ্রামের এ প্রত্যন্ত হাওরের ৩৮০০ ভোটারের জনসংখ্যার অবহেলিত বাজুকা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের করুণ অবস্থা নিরসনের জন্য বার বার লিখিত অভিযোগ দিলেও কর্তৃপক্ষ কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছেন না। অষ্টগ্রাম উপজেলার প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা এনামূল হকের এই দায়িত্বহীনতা ও কর্তব্য কাজের ব্যর্থতার কারণে সুন্দর ও উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ থেকে বঞ্চিত হচ্ছে হাওরের অবহেলিত দু’টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কোমলমতি শিশুরা। 


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
শিক্ষায় বরাদ্দ বেড়েছে, আরো বাড়বে: শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী - dainik shiksha শিক্ষায় বরাদ্দ বেড়েছে, আরো বাড়বে: শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী সমাবর্তনের অজুহাতে সনদ আটকে রাখা যাবে না - dainik shiksha সমাবর্তনের অজুহাতে সনদ আটকে রাখা যাবে না হিটস্ট্রোকে স্কুলছাত্রীর মৃত্যু - dainik shiksha হিটস্ট্রোকে স্কুলছাত্রীর মৃত্যু চুয়েটে আন্দোলন স্থগিত, সড়কে যান চলাচল শুরু - dainik shiksha চুয়েটে আন্দোলন স্থগিত, সড়কে যান চলাচল শুরু প্রাথমিকের প্রশ্ন ফাঁসে অল্পদিনে কয়েকশ কোটি টাকা আয় - dainik shiksha প্রাথমিকের প্রশ্ন ফাঁসে অল্পদিনে কয়েকশ কোটি টাকা আয় রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম সংবিধানবিরোধী নয়: হাইকোর্ট - dainik shiksha রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম সংবিধানবিরোধী নয়: হাইকোর্ট কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0033168792724609