শিক্ষক সংকটে ধুঁকছে সরকারি কলেজগুলো

দৈনিকশিক্ষা ডেস্ক |

দেশের সরকারি কলেজগুলোতে শিক্ষক সংকট প্রকট হয়ে উঠেছে। প্রায় ৩ হাজার শিক্ষক স্বল্পতা নিয়ে ধুঁকছে কলেজগুলো। অনেক কলেজে পাঠদান চলছে বাইরের বা বদলি শিক্ষক দিয়ে। কুড়িগ্রাম সরকারি মহিলা কলেজে মোট শিক্ষকের পদ রয়েছে ৪৪টি। এর মধ্যে মাত্র ২২ জন বর্তমানে কর্মরত। মোট শিক্ষকের অর্ধেক পদই খালি। শিক্ষক স্বল্পতার কারণে বাইরে থেকে শিক্ষক এনে এখানে পাঠদান চলছে বলে জানান ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ অধ্যাপক আব্দুল মজিদ। শুক্রবার (২৯ নভেম্বর) বাংলাদেশ প্রতিদিন পত্রিকায় প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা যায়। প্রতিবেদনটি লিখেছেন   আকতারুজ্জামান। 

প্রতিবেদনে আরও জানা যায়,  গতকাল তিনি বলেন, জোড়াতালি দিয়ে এখানে চলছে শিক্ষাদান। এভাবে কলেজগুলো আরও দুর্বল হয়ে যাচ্ছে। তিনি বলেন, একজন সহকারী লাইব্রেরিয়ানের পদ থাকলেও সপ্তাহ খানেক আগে তাকে অন্যত্র বদলি করা হয়েছে। অথচ তার বেতন সরবরাহের কথা বলা হয়েছে এ কলেজ থেকেই। একজন বদলি হলে কেন তার বেতন এ কলেজ থেকে পাবেন- প্রশ্ন রাখেন অধ্যক্ষ। ভোলায় চরফ্যাশন সরকারি কলেজে শিক্ষার্থী রয়েছে সবমিলে প্রায় সাড়ে ৫ হাজার। অথচ কলেজে বর্তমানে কোনো ইংরেজির শিক্ষক নেই। অধ্যক্ষ অধ্যাপক কায়সার আহমেদ বলেন, কলেজে মাত্র একজন ইংরেজি শিক্ষক থাকলেও সপ্তাহ খানেক আগে তাকে অন্যত্র বদলি করেছে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতর-মাউশি। 

ইংরেজি শিক্ষক সংকট ছাড়াও বেশ কয়েক শিক্ষকের পদ শূন্য রয়েছে। শুধু এ দুই কলেজই নয়, বেশিরভাগ কলেজেই শিক্ষকের পদ শূন্য রয়েছে। জানা গেছে, দুর্গম এলাকা ও পার্বত্য অঞ্চলের কলেজগুলোতে শিক্ষকের পদ শূন্য বেশি। এসব কলেজে শিক্ষকদের পদায়ন করা হলেও তারা তদবির করে অন্যত্র বদলি হয়ে যান। এতেই দেখা দেয় শিক্ষক সংকটের। বান্দরবন সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক মো. মকছুদুল আমিন বলেন, যেসব বিভাগে মাস্টার্স রয়েছে সেগুলোতে ১২ জন ও ¯œাতক থাকা বিভাগগুলোতে ৭ জন শিক্ষক থাকার কথা। কিন্তু সে হিসেব মানা হয়নি এ কলেজের ক্ষেত্রে। শিক্ষক স্বল্পতা কাটাতে বিদ্যমান ৩৫টি শিক্ষক পদের বাইরে আরও ৫৮ পদ সৃজনের আবেদন করা হয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে। সংকটবস্থা কাটাতে এ কলেজে বদলি বা বাইরের শিক্ষক দিয়ে পাঠদান চলছে বলে জানান তিনি।

 মাউশি’র কলেজ শাখা সূত্র জানায়, সারা দেশে সরকারি কলেজের সংখ্যা বর্তমানে ৩২৯টি। এসব কলেজে প্রায় সাড়ে ১৫ হাজার শিক্ষকের পদ রয়েছে। এ পদগুলোর মধ্যে অধ্যাপকের পদ শূন্য রয়েছে ১৩০টি। এছাড়া সহযোগী অধ্যাপকের ২২২ টি, সহকারী অধ্যাপকের ৩৮২টি ও প্রভাষক পদের ১ হাজার ৯০০ এর বেশি পদ শূন্য রয়েছে। মাউশির পরিচালক (কলেজ ও প্রশাসন) অধ্যাপক মো. শাহেদুল খবির চৌধুরী বলেন, সরকারি কলেজগুলোতে সবমিলে প্রায় ৩ হাজার শিক্ষকের পদ শূন্য রয়েছে। বিসিএসের মাধ্যমে প্রতিবছরই কিছু শিক্ষক শিক্ষা ক্যাডারে সরকারি কলেজগুলোতে যোগদান করেন। কিন্তু এভাবে কলেজগুলোতে শিক্ষকের অভাব কাটবে না।

কারণ আশির দশকের প্যাটার্ন অনুযায়ী শিক্ষকের পদবিন্যাস রয়েছে কলেজগুলোতে। কিন্তু সময়ের সঙ্গে সঙ্গে শিক্ষার অনেক পরিবর্তন, অগ্রগতি সাধিত হয়েছে। ছাত্র-ছাত্রী বেড়েছে অনেক, মানোন্নয়নের বিষয়টি গুরুত্ব দিলে সে অনুপাতে শিক্ষকের সংখ্যাও বাড়ানো দরকার। কলেজে শিক্ষকদের পদসৃজনের ব্যাপারে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাব পাঠানো হলেও সেটি পেন্ডিং অবস্থায় রয়েছে। শিক্ষক সংকট দূর করতে নতুন পদসৃজন জরুরি বলে মত দেন তিনি।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
শিক্ষায় বরাদ্দ বেড়েছে, আরো বাড়বে: শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী - dainik shiksha শিক্ষায় বরাদ্দ বেড়েছে, আরো বাড়বে: শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী সমাবর্তনের অজুহাতে সনদ আটকে রাখা যাবে না - dainik shiksha সমাবর্তনের অজুহাতে সনদ আটকে রাখা যাবে না হিটস্ট্রোকে স্কুলছাত্রীর মৃত্যু - dainik shiksha হিটস্ট্রোকে স্কুলছাত্রীর মৃত্যু চুয়েটে আন্দোলন স্থগিত, সড়কে যান চলাচল শুরু - dainik shiksha চুয়েটে আন্দোলন স্থগিত, সড়কে যান চলাচল শুরু প্রাথমিকের প্রশ্ন ফাঁসে অল্পদিনে কয়েকশ কোটি টাকা আয় - dainik shiksha প্রাথমিকের প্রশ্ন ফাঁসে অল্পদিনে কয়েকশ কোটি টাকা আয় রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম সংবিধানবিরোধী নয়: হাইকোর্ট - dainik shiksha রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম সংবিধানবিরোধী নয়: হাইকোর্ট কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0035679340362549