শিক্ষক হাসনা হেনার মুক্তির দাবিতে ক্লাস বর্জনের ঘোষণা

নিজস্ব প্রতিবেদক |

অরিত্রী অধিকারীকে আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেওয়ার মামলায় গ্রেপ্তার শিক্ষক হাসনা হেনার মুক্তি দাবিতে বিক্ষোভ চালিয়ে যাচ্ছে ভিকারুননিসা নূন স্কুল ও কলেজের একদল শিক্ষার্থী। শনিবার সকার ১১টার দিকে রাজধানীর বেইলি রোডে এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সামনে পোস্টার-প্ল্যাকার্ড নিয়ে বিক্ষোভ শুরু করে এই শিক্ষার্থীরা।

বিক্ষোভে থাকা একাদশ শ্রেণির ক্যাপ্টেন আনিকা ইশরাফ ইক্বরা সাংবাদিকদের বলেন, শিক্ষক হাসনা হেনাকে মুক্তি না দিলে তারা রোববার থেকে ক্লাস বর্জন করবেন। ভিকারুননিসনা নূন স্কুল ও কলেজে বর্তমানে একাদশ শ্রেণির ক্লাস চলছে। অন্য শ্রেণিগুলোতে চলছে বার্ষিক পরীক্ষা।  

অরিত্রী আত্মহত্যা করার পর শিক্ষার্থীদেরই বিক্ষোভের প্রেক্ষাপটে এই শিক্ষার্থীর বাবার করা মামলায় গত বুধবার গ্রেফতার করা হয়েছিল হাসনা হেনাকে। অরিত্রীর এই শ্রেণিশিক্ষক এখন কারাগারে রয়েছেন। অরিত্রী ও তার বাবা-মাকে ‘অপমানের’ বিচার দাবিতে টানা কয়েকদিন ক্লাস বর্জন করে বিক্ষোভের পর বৃহস্পতিবার শিক্ষার্থীরা শিক্ষকদের আশ্বাসে ঘরে ফেরে।

এরপর শিক্ষক হাসনা হেনার মুক্তির দাবিতে বিক্ষোভ শুরু করে  ‘ভিকারুননিসা স্কুল অ্যান্ড কলেজের বর্তমান ও প্রাক্তন ছাত্রীবৃন্দ’ ব্যানারে আরেকদল শিক্ষার্থী। শুক্রবারের পর শনিবারও তারা বিক্ষোভ চালিয়ে যাচ্ছে।

হাসনা হেনার পক্ষে বিক্ষোভকারী এই শিক্ষার্থীদের হাতে থাকা বিভিন্ন পোস্টারে লেখা আছে- ‘হাসনা হেনা আপার মুক্তি চাই’, ‘জাতির কারিগর কেন কারাগারে’, ‘লিখতে শিখিয়েছে যে হাত, সে কেন খাবে জেলের ভাত’ ইত্যাদি।

এই শিক্ষার্থীরা অরিত্রীর মৃত্যুর ঘটনায় ‘সুষ্ঠু বিচার’ চাওয়ার কথা জানিয়েই বলছে, এই ঘটনায় হাসনা হেনার কোনো দায় নেই।

এর আগে অরিত্রীর আত্মহত্যার পর বিক্ষোভকারী শিক্ষার্থীদের স্লোগান ছিল- ‘শাসন করুন, অপমান নয়’, ‘শিক্ষকের সার্থকতা শিক্ষকতা করায়, অপমান করায় নয়’, ‘অরিত্রী হত্যার বিচার চাই’, ‘ভিকারুননিসা আর ভিকারুননিসা নেই, অধ্যক্ষের বরখাস্ত চাই’ ইত্যাদি। অরিত্রী যে শ্রেণিতে পড়তেন, সেই নবম শ্রেণির শ্রেণিশিক্ষক ছিলেন হাসনা হেনা। আন্দোলনের মুখে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে তাকে বরখাস্ত করেছে বিদ্যালয়টির পরিচালনা পর্ষদ, তার এমপিও বাতিল করেছে মন্ত্রণালয়।

হাসনা হেনার পাশাপাশি ভিকারুননিসার অধ্যক্ষ নাজনীন ফেরদৌস ও প্রভাতি শাখার প্রধান জিনাত আখতারও বরখাস্ত হয়েছেন। অরিত্রীর বাবা দিলীপ অধিকারীর মামলায় তারাও আসামি। অরিত্রী গত সোমবার আত্মহত্যা করার পর থেকে উত্তেজনা চলছে রাজধানীর নামি এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে।

অভিযোগ উঠেছে, পরীক্ষার সময় অরিত্রীর কাছে মোবাইল ফোন পাওয়ার পর তার বাবা-মাকে ডেকে নিয়ে ‘অপমান করেছিলেন’ অধ্যক্ষ। সে কারণে ওই কিশোরী আত্মহত্যা করেন। তবে স্কুল কর্তৃপক্ষের দাবি, অরিত্রী রোববার বার্ষিক পরীক্ষায় মোবাইল ফোনে নকলসহ ধরা পড়েছিলেন।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
শিক্ষায় বরাদ্দ বেড়েছে, আরো বাড়বে: শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী - dainik shiksha শিক্ষায় বরাদ্দ বেড়েছে, আরো বাড়বে: শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী সমাবর্তনের অজুহাতে সনদ আটকে রাখা যাবে না - dainik shiksha সমাবর্তনের অজুহাতে সনদ আটকে রাখা যাবে না হিটস্ট্রোকে স্কুলছাত্রীর মৃত্যু - dainik shiksha হিটস্ট্রোকে স্কুলছাত্রীর মৃত্যু চুয়েটে আন্দোলন স্থগিত, সড়কে যান চলাচল শুরু - dainik shiksha চুয়েটে আন্দোলন স্থগিত, সড়কে যান চলাচল শুরু প্রাথমিকের প্রশ্ন ফাঁসে অল্পদিনে কয়েকশ কোটি টাকা আয় - dainik shiksha প্রাথমিকের প্রশ্ন ফাঁসে অল্পদিনে কয়েকশ কোটি টাকা আয় রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম সংবিধানবিরোধী নয়: হাইকোর্ট - dainik shiksha রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম সংবিধানবিরোধী নয়: হাইকোর্ট কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0052800178527832