বাংলাদেশ অধ্যক্ষ পরিষদের সভাপতি ও খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ট্রেজারার অধ্যাপক মোহাম্মদ মাজহারুল হান্নান বলেছেন, শিক্ষকতা নিছক চাকরি নয়। শিক্ষকতাকে নিছক চাকরি মনে করলে ভুল করা হবে। কেবল মেধা ও শিক্ষাগত যোগ্যতাই আদর্শ শিক্ষক প্রণয়নে যথেষ্ট নয়। শিক্ষার আলো জ্বালানোর মহতী চেতনা ও উপলব্ধি শিক্ষকদের দায়িত্ব পালনে উদ্বুদ্ধ করে। একজন আদর্শ শিক্ষক হতে হলে সহজ, সরল, নিরহঙ্কার, কর্তব্যনিষ্ঠ, নিঃস্বার্থ, নির্ভীক ও গতিশীল মনের অধিকারী হতে হবে।
শুক্রবার (৫ অক্টোবর) রাজধানীর ঢাকা গোল্ডেন কলেজে বাংলাদেশ কলেজ শিক্ষক সমিতি এবং বাংলাদেশ অধ্যক্ষ পরিষদের আয়োজনে অনুষ্ঠিত বিশ্ব শিক্ষক দিবস উপলক্ষ্যে আলোচনা সভা ও এ উপলক্ষ্যে প্রকাশিত স্মরণিকার মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে প্রধান আলোচকের বক্তব্যে তিনি একথা বলেছেন। বাংলাদেশ কলেজ শিক্ষক সমিতির প্রেসিডেন্ট অধ্যক্ষ ইসহাক হোসেন অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন।
তিনি আরও বলেন, শিক্ষার জন্য যোগ্যতাসম্পন্ন শিক্ষকের গুরুত্ব সর্বাধিক। সম্প্রতি আমাদের দেশে খুব সীমিত আকারে বিশ্ব শিক্ষক দিবস পালনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে সত্য কিন্তু আজও পরিপূর্ণ মর্যাদায় দিনটি পালিত হয়না। দুর্ভাগ্যজনক হলেও একথা সত্য যে এবিষয়ে সরকারি কোন উদ্যোগই নেই। ইউনেস্কো আইএলওর রেকমেন্ডেশন সম্পর্কে সরকারের সংশ্লিষ্টদের তেমন কোন ধারণা আছে বলে মনে হয়না। শিক্ষকের চাওয়া-পাওয়া সীমিত হলেও তাঁরা বৈষম্যের শিকার। তাই বাংলাদেশের শিক্ষকসমাজ বিশেষ করে সংখ্যাগরিষ্ঠ বেসরকারি শিক্ষকসমাজ নিজেদের অস্তিত্বের প্রশ্নে উদ্বিগ্ন।
মাজহারুল হান্নান বলেন, শিক্ষক স্বার্থ পরিপন্থি বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান জনবল কাঠামো ও এমপিও নীতিমালা ২০১৮ জারি করে শিক্ষকদের অধিকার বঞ্চিত করা হয়েছে। সামগ্রিক ব্যবস্থা বিশ্লেষণ করলে এ কথাই বলতে হয় যে শিক্ষা ক্ষেত্রে সামাজিক ন্যায় বিচার না থাকায় শিক্ষকদের সামনে চলার জন্য অনুপ্রেরণার মত কিছু নেই।
সভাপতির বক্তব্যে বাংলাদেশ কলেজ শিক্ষক সমিতির প্রেসিডেন্ট অধ্যক্ষ ইসহাক হোসেন বলেন, যোগ্য শিক্ষকদের এ মহতী পেশায় নিয়ে আসতে শিক্ষকের অর্থ-সামাজিক মর্যাদা সুনিশ্চিত করতে হবে। শিক্ষকরা বৈষম্যের শিকার হওয়ায় এ পেশা জৌলুস হারাচ্ছে। শিক্ষার মানোন্নয়নে শিক্ষকের মর্যাদা নিশ্চিত করে বৈষম্য দূর করতে হবে।
সভায় অন্যান্য শিক্ষক নেতৃবৃন্দের মধ্যে আলোচনা করেন অধ্যক্ষ হারুনুর রশিদ পাঠান, অধ্যক্ষ মুজিবর রহমান হাওলাদার, ড. শফিকুল ইসলাম, অধ্যক্ষ নজরুল ইসলাম, ড. একেএম আব্দুল্লাহ, অধ্যাপক হোসনে জাহান, অধ্যক্ষ রোকেয়া রুমি, অধ্যাপক সৈয়দ ইউসুফ সুমন, অধ্যাপক ইলিম মোঃ নাজমুল হোসেন, অধ্যাপক জহির উদ্দিন আজম, অধ্যক্ষ মোহাম্মদ সেলিম প্রমুখ। বক্তাগণ ইউনেস্কো আইএলওর সনদের ভিত্তিতে শিক্ষকদের পেশাগত অধিকার ও মর্যাদা এবং দায়িত্ব ও কর্তব্য পালনের বিষয়ে সমস্যা ও তার সমাধানের উপর গুরুত্ব আরোপ করে বক্তব্য রাখেন। এসময় বাংলাদেশ কলেজ শিক্ষক সমিতি এবং বাংলাদেশ অধ্যক্ষ পরিষদের উদ্যোগে বিশ্ব শিক্ষক দিবস উপলক্ষ্যে প্রকাশিত স্মরণিকার মোড়ক উন্মোচন করা হয়।