সকাল ৯টায় বিদ্যালয়ে উপস্থিত থাকার কথা থাকলেও কোনো কোনো শিক্ষক প্রায়ই বিদ্যালয়ে পৌঁছান নির্ধারিত সময়ের কয়েক ঘন্টা পরে। দেরি করে বিদ্যালয়ে পৌঁছালেও দুপুরের পরেই আবার বিদায় নেন তারা। ফলে তড়িঘড়ি শেষ হয় পাঠদান কার্যক্রম। সুনামগঞ্জের ধর্মপাশা উপজেলার সুখাইড় রাজাপুর দক্ষিণ ইউনিয়নের রাজাপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকসহ দুই সহকারী শিক্ষকের বিরুদ্ধে উঠেছে এ অভিযোগ।
গত রোববার দুপুর বারোটার দিকে ধর্মপাশা উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মোজাম্মেল হোসেন রোকন ওই বিদ্যালয় পরিদর্শনে গিয়ে প্রধান শিক্ষকসহ দুজন সহকারী শিক্ষকের অনুপস্থিতির সত্যতা পান। প্রাথমিক শিক্ষার মানোন্নয়নে গত শনিবার থেকে তিনি উপজেলার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন করছেন।
রাজাপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রথম থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত্ম ৩৭৫ শিক্ষার্থীর জন্য ৫ জন শিক্ষক কর্মরত আছেন। কিন্তু বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক চৌধুরী তৌহিদুন্নবীসহ দুজন সহকারী শিক্ষক কাউসার মিয়া ও ফারুক আহমেদ প্রায়ই বিদ্যালয়ে অনুপস্থিত থাকেন। যে দিন বিদ্যালয়ে উপস্থিত হন, সে দিনও দেরিতে বিদ্যালয়ে পৌঁছান এবং দুপুরের পরেই বিদ্যালয় থেকে বিদায় নেন। ফলে বাকী তিনজন শিক্ষকের উপর প্রায় পৌনে চারশ শিক্ষার্থীকে পড়ানোর ভার পড়ে। এতে একদিকে যেমন শিক্ষার মান কমছে, তেমনি ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে শিক্ষকদের মধ্যে।
গত রোববারও সহকারী শিক্ষক কাউসার মিয়া ও ফারম্নক আহমেদ সাড়ে বারোটার দিকে বিদ্যালয়ে পৌঁছান। শিক্ষকদের হাজিরা খাতায় দেখা যায়, গত বুধবার প্রধান শিক্ষক চৌধুরী তৌহিদুন্নবী ও সহকারী শিক্ষক কাউসার মিয়া বিদ্যালয়ে অনুপস্থিত ছিলেন। বৃহস্পতিবার প্রধান শিক্ষক ও সহকারী শিক্ষক ফারম্নক আহমেদ বিদ্যালয়ে অনুপস্থিত ছিলেন।
এ বিষয়ে প্রধান শিক্ষক চৌধুরী তৌহিদুন্নবী জানান, বুধবার উপজেলা সদরে শিক্ষকদের মাসিক সভা হওয়ার কথা থাকায় বিদ্যালয়ে অনুপস্থিত ছিলেন। বৃহস্পতিবারে বিদ্যালয়ে উপস্থিত ছিলেন কিন্তু ভুলে হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করেননি তিনি।
এদিকে প্রায়ই বিদ্যালয়ে অনুপস্থিত বা বিলম্বে পৌঁছানোর বিষয়টি সত্য নয় বলে দাবি করেন সহকারী শিক্ষক কাউসার। সহকারী শিক্ষক ফারম্নক আহমেদ জানান, 'পারিবারিক কারণে বিদ্যালয়ে পৌঁছাতে দেরি হয়েছে। প্রায়ই অনুপস্থিত থাকার বিষয়টি সত্য নয়। তবে সহকারী শিক্ষক কাউসার মিয়া মাঝে মধ্যে বিদ্যালয়ে আসেন।'
অনুপস্থিত শিক্ষকদের ব্যাপারে খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিবেন বলে জানালেন উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা হাসিনা আক্তার পারভীন ও জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা জিলতুর রহমান।