সমিতির সভাপতি মামুনুর রশিদ খোকন দৈনিকশিক্ষা ডটকমকে বলেন, আমাদের পূর্বঘোষিত শান্তিপূর্ণ অবস্থান কর্মসূচি পালন করতে দেয়নি পুলিশ। এমনকি আমাদের ৫ শিক্ষককে আটক করে নিয়ে গেছে পুলিশ। এখন আন্দোলন ছাড়া দাবি আদায়ে আমাদের সামনে আর কোনো পথ খোলা নেই । সরকারিকরণের দাবি বাস্তবায়নে আমরা ফের জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে অবস্থান নেয়ার চেষ্টা করবো। সারাদেশ থেকে প্রায় ১০ হাজার শিক্ষক অবস্থান কর্মসূচিতে অংশ নিতে ঢাকায় এসেছে।তারা পুলিশের বাধায় প্রেস ক্লাবের সামনে দাঁড়াতে না পেরে বিভিন্ন অলিগলিতে অবস্থান নিয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলনে পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে বলে তিনি জানান।
বর্তমান সরকারের আমলে ২০১৩ খ্রিস্টাব্দের ৯ জানুয়ারি সারাদেশের ২৬ হাজার ১৯৩টি বেসরকারি রেজিস্টার্ড প্রাথমিক বিদ্যালয়কে সরকারিকরণ করা হয়। তবে সে সময়ে বেসরকারি বিদ্যালয়ের সংখ্যা যথাযথভাবে পরিসংখ্যান করা হয়নি। ফলে সারাদেশের ৪ হাজার ১৫৯টি বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় সরকারিকরণের সুযোগ থেকে বঞ্চিত হয়।
সরকারিকরণের দাবিতে তৃতীয় ধাপেও বাদ পড়া এই বিদ্যালয়গুলোর শিক্ষকরা গত ২১ জানুয়ারি জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে প্রথমে অবস্থান ধর্মঘট পালন করেন। পরে ২৬ জানুয়ারি থেকে আমরণ অনশন কর্মসূচিও শুরু করেছিলেন তারা। পরে তিনজন সচিবের আশ্বাসে ৭ ফেব্রুয়ারি অনশনের ১৮ দিন পর কর্মসূচি স্থগিত করে বাড়ি ফিরে যান। কিন্তু এখন পর্যন্ত সরকার বাদপড়া ৪ হাজার ১৫৯টি বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় সরকারিকরণের দাবির বিষয়ে দৃশ্যমান কোনো পদক্ষেপ না নেয়ায় শিক্ষকদের মধ্যে হতাশা নেমে আসে।
গত ৮ জুলাই সচিবালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রী মোস্তাফিজুর রহমান প্রাথমিক পর্যায়ে নতুন করে আর কোনো বিদ্যালয় সরকারিকরণ করা হবে না বলে ইঙ্গিত দেন। মন্ত্রী বলেন, সারাদেশে ৬৫ হাজারের বেশি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। এমন কোনো স্থান নেই যেখানে দুই কিলোমিটারের মধ্যে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় নেই। তাই নতুন করে আর কোনো প্রাথমিক বিদ্যালয় সরকারিকরণ করার পরিকল্পনা নেই সরকারের।
তিনি বলেন, সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় ২৬ হাজারের বেশি প্রাথমিক বিদ্যালয় সরকারিকরণ করা হয়েছে। তবে প্রক্রিয়াধীন ৩২টি প্রতিষ্ঠান সেপ্টেম্বরের মধ্যে সরকারিকরণ হবে। এগুলো প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত ২৬ হাজারের মধ্যে রয়েছে।
সরকারিকরণের দাবিতে বিভিন্ন সময়ে বেসরকারি প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির অনশন এবং তাদের হিসাব মতে বাদপড়া চার হাজার ১৫৯টি প্রতিষ্ঠানের ভাগ্য সম্পর্কে জানতে চাইলে মন্ত্রী স্পষ্ট করে বলেন, ‘আর কোনও বিদ্যালয় সরকারিকরণ হবে না।’