শিক্ষকদের জাল সনদ, কাম্য শিক্ষাগত যোগ্যতা নেই। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের তদন্তে এসব ধরা পড়ার পর এমপিও স্থগিত। আর সেই স্থগিত এমপিও ফিরে পেতে দালালদের মাধ্যমে তদবিরসহ নানা ফন্দিফিকিরে ব্যস্ত জাল সনদধারী শিক্ষকরা। এ অবস্থায় শিক্ষার্থী হারাচ্ছে এক সময়ের নামকরা এ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি।
যশোর শিক্ষা বোর্ড ও কলেজসূত্রে জানা যায়, চলতি শিক্ষাবর্ষে একাদশ শ্রেণিতে বাণিজ্য শাখায় মাত্র ১১ জন ভর্তি হয়েছে। অথচ আসন সংখ্যা ১৫০। বিজ্ঞানে ৩৪ জন ভর্তি হয়েছে। মানবিকে ১৪৪ ও বিএম শাখায় ১৬৫ জন। বিএম শাখায় উপস্থিতিতে শতকরা ৪০ নম্বর আর তাই সারাদেশেই বিএম শাখায় ভর্তি বেশি। তবুও ২৫০ আসনের বিপরীতে ভর্তি ১৬৫ জন। অথচ চার বছর আগে এই কলেজে তিন হাজারের বেশি শিক্ষার্থী ছিল।
অভিভাবকরা দৈনিক শিক্ষাকে জানান, মন্ত্রণালয়ের তদন্ত হয় ২০১৩ খ্রিষ্টাব্দে। জাল সনদ ও কাম্য শিক্ষাগত যোগ্যতাবিহীন সাধারণ ও কারিগরি শাখায় মোট ১৪ জন শিক্ষকদের এমপিও স্থগিত হয় ২০১৫ খ্রিষ্টাব্দে। এরপর থেকেই শিক্ষকরা ব্যস্ত শিক্ষা ভবনের দালাল হারুন খান, রমজান ও কর্মচারী মিজানের সঙ্গে তদবিরে। এদিকে কলেজে পড়াশোনা লাটে উঠেছে।
শিক্ষা অধিদপ্তরের একজন কর্মকর্তা বলেন, কলেজটি অধ্যক্ষসহ তিনজন শিক্ষককে দেখা যায় মনিরামপুরের কয়েকজন দালালের সাথে শিক্ষা ভবনেরর বারান্দায় ঘুরঘুর করতে।
এমপিও হারানো কয়েকজন শিক্ষকের বিরুদ্ধে জামাত ও আহলে হাদিস সংশ্লিষ্টতার তদন্ত চলছে।
এলাকাবাসীর মতে, বাল্যবিবাহপ্রবণ ও শিক্ষা-দীক্ষায় পিছিয়ে পড়া কলোরোয়া এলাকার কোটিপতি ব্যবসায়ী ও শিক্ষানুরাগী এনাম হক তাঁর বাবার নামে কলেজটি প্রতিষ্ঠা করেন। প্রতিষ্ঠাতা ও দাতা সদস্যরা নিজেদের কোনো আত্মীয়-স্বজনকে এই কলেজে শিক্ষকতা বা অন্য কোনো পদে চাকরি দেননি।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তরের ২০১৩ খ্রিষ্টাব্দের আগস্ট মাসের তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয় অভিযুক্ত শিক্ষকরা ভুয়া ও জাল সনদ দেখিয়ে চাকরি লাভ ও এমপিওভু্ক্ত হন। এ ছাড়া মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের দুজন কর্মকর্তার তদন্তেও ধরা পড়েছে কলেজের অর্থ আত্মসাৎসহ নানা অনিয়ম।