শিক্ষকের বেতের আঘাতে চোখ হারাল মাদরাসাছাত্র

কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধি |

কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়ায় এক মাদ্রাসা শিক্ষকের ছোড়া বেতের আঘাতে ইমরান (১১) নামে এক শিক্ষার্থীর ডান চোখ নষ্ট হয়ে গেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। উপজেলার জাঙালিয়া ইউনিয়নের চরকাওনা হামিদ মেম্বারের বাড়ির বেড়িবাঁধ হাফিজিয়া মাদ্রাসায় এ ঘটনা ঘটে। অভিযুক্ত শিক্ষকের নাম হাফেজ মাহমুদ। এ ঘটনায় ওই শিক্ষক ও মাদ্রাসার পরিচালক মো. মোনায়েমের বিরুদ্ধে গতকাল সোমবার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ইমরানের বাবা মো. ইদ্রিছ আলী। 

অভিযোগ থেকে জানা গেছে, উপজেলার চরকাওনা নয়াপাড়া গ্রামের ইদ্রিছ আলী তার ছেলেকে দুই বছর আগে ওই মাদ্রাসায় ভর্তি করেন। গত ২৮ মে দুপুরে শিক্ষক মাহমুদ পড়ানোর সময় কিছুটা অন্যমনস্ক ছিল ইমরান। এতে রাগান্বিত হয়ে তাকে লক্ষ্য করে হাতে থাকা বেত ছুড়ে মারেন মাহমুদ। বেতটি ইমরানের ডান চোখে গিয়ে আঘাত করে। সঙ্গে সঙ্গে ইমরান চিৎকার করতে থাকে এবং তার চোখ দিয়ে পানি পড়তে শুরু করে। পরে তাকে বাইরে নিয়ে চোখে পানি দেওয়া হয়। এ ঘটনাটি কাউকে না বলতে ইমরানকে ভয় দেখান মাহমুদ।

বাড়িতে ফিরলে পরিবারের সদস্যরা দেখতে পান ইমরানের চোখ ফুলে গেছে। চোখের তীব্র ব্যথায় চিৎকার করছিল সে। পরদিন ইমরানের চাচা জালাল উদ্দিন তাকে চিকিৎসার জন্য গাজীপুরের কাপাসিয়া লায়ন আলম চক্ষু হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে চিকিৎসকরা ইমরানের চোখের পরীক্ষা করে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় নিয়ে যেতে বলেন। পরে ইমরানকে ঢাকা জাতীয় চক্ষুবিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। হাসপাতালে ১৪ দিন চিকিৎসার পর চিকিৎসক জানান, ইমরানের ডান চোখটি সম্পূর্ণ নষ্ট হয়ে গেছে। জালাল উদ্দিন বলেন, ঘটনাটি কাউকে না বলার জন্য ইমরানকে ভয় দেখান শিক্ষক মাহমুদ। প্রথমে ইমরান আমাদের কিছু বলেনি। তিন দিন পর তার সহপাঠীদের মাধ্যমে ঘটনাটি জানতে পারি। পরে ইমরানকে জিজ্ঞাসাবাদের পর সে বিষয়টি খুলে বলে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে শিক্ষক মাহমুদ পরদিন পালিয়ে যান। 

এ ব্যাপারে জানতে মাহমুদের মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আমি ইমরানকে আঘাত করিনি। তার চোখে এমনিতেই সমস্যা দেখা দিয়েছিল। মাহমুদ বলেন, তিনি ২৭ রমজানে ওই মাদ্রাসা থেকে চলে যান। এরপর তার বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়। 

মাদ্রাসার পরিচালক মো. মোনায়েম বলেন, ঘটনার তিন দিন পর বিষয়টি জেনে ওই ছাত্রের খোঁজ নিয়েছি। শিক্ষক হাফেজ মাহমুদকে শুধু রমজান মাসের জন্য অস্থায়ীভাবে আনা হয়েছিল। ছাত্রের পরিবারের সঙ্গে আলোচনা করে বিষয়টি মীমাংসা করার জন্য চেষ্টা চালাচ্ছি। 

পাকুন্দিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ মোকলেছুর রহমান অভিযোগ পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
দেশে তিন দিনের হিট অ্যালার্ট জারি - dainik shiksha দেশে তিন দিনের হিট অ্যালার্ট জারি আকাশে তিনটি ড্রোন ধ্বংস করেছে ইরান, ভিডিয়ো প্রকাশ - dainik shiksha আকাশে তিনটি ড্রোন ধ্বংস করেছে ইরান, ভিডিয়ো প্রকাশ অভিভাবকদের চাপে শিক্ষার্থীরা আত্মকেন্দ্রিক হয়ে উঠছেন - dainik shiksha অভিভাবকদের চাপে শিক্ষার্থীরা আত্মকেন্দ্রিক হয়ে উঠছেন আমি সরকার পরিচালনা করলে কৃষকদের ভর্তুকি দিবই: প্রধানমন্ত্রী - dainik shiksha আমি সরকার পরিচালনা করলে কৃষকদের ভর্তুকি দিবই: প্রধানমন্ত্রী বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে মামলা ১২ হাজারের বেশি - dainik shiksha বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে মামলা ১২ হাজারের বেশি শিক্ষকদের অবসর সুবিধা সহজে পেতে কমিটি গঠন হচ্ছে - dainik shiksha শিক্ষকদের অবসর সুবিধা সহজে পেতে কমিটি গঠন হচ্ছে শিক্ষকদের শূন্যপদ দ্রুত পূরণের সুপারিশ - dainik shiksha শিক্ষকদের শূন্যপদ দ্রুত পূরণের সুপারিশ ইরানে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালালো ইসরায়েল - dainik shiksha ইরানে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালালো ইসরায়েল কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0037190914154053