আজ রোববার (১ সেপ্টেম্বর) সকালে মিরপুরে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর ঘেরাও করে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দপ্তরি কাম প্রহরীরা। চাকরি রাজস্ব খাতে স্থানান্তর, নৈমিত্তিক ছুটির ব্যবস্থাসহ ৪ দফা দাবিতে দেশের প্রায় সব জেলা থেকে কয়েক হাজার দপ্তরি কাম প্রহরী এ কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করেন। এ কর্মসূচির মুখে দপ্তরিদের চারটি দাবি মেনে নেয়ার আশ্বাস দিয়েছেন প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা। কর্মকর্তাদের আশ্বাসে কর্মসূচি স্থগিত ঘোষণা করা হয়েছে বলে দৈনিক শিক্ষাডটকমকে জানিয়েছেন বাংলাদেশ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কর্মচারী কল্যাণ সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. নাছির উদ্দিন মোল্লা। তবে, একমাসের মধ্যে জটিলতা নিরসন না হলে আবারও কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে বলেও জানান সমিতির সভাপতি সাধন কান্ত বাড়ই।
সারাদেশ থেকে আগত কয়েক হাজার দপ্তরি কাম প্রহরী সকাল থেকেই প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর ও আশপাশের এলাকায় জড়ো হন। সকাল ৯টা থেকে ‘বাংলাদেশ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কর্মচারী কল্যাণ সমিতির’ ব্যানারে অবস্থান কর্মসূচি শুরু করেন তাঁরা। সমিতির সভাপতি সাধন কান্ত বাড়ই ও সাধারণ সম্পাদক মো. নাছির উদ্দিন মোল্লার নেতৃত্বে কর্মসূচি পালন করা হয়। এ সময় কর্মচারীরা সংগঠনের স্ব স্ব শাখার ব্যানার ও ফেস্টুন বহন করছিলেন। এ সময় তারা ৪ দফা দাবিতে শ্লোগান দিতে থাকেন। তাঁদের দাবিগুলো হলো, দপ্তরি কাম প্রহরীদের চাকরি রাজস্বভুক্ত করা, আইন অনুযায়ী কর্মঘণ্টা নির্ধারণ করা, বেতন-ভাতার সমস্যা সমাধান এবং নৈমিত্তিক ছুটির ব্যবস্থা করা।
আন্দোলনের মুখে সকাল ১০টার দিকে কর্মচারী কল্যাণ সমিতির নেতাদের সাথে আলোচনায় বসেন প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা। প্রায় ঘণ্টাব্যাপী আলোচনা শেষে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক আবদুল মান্নান বাইরে আন্দোলনরত দপ্তরি কাম প্রহরীদের দাবি মেনে নেয়ার আশ্বাস দেন। এ সময় অতিরিক্ত মহাপারিচালক ‘নিয়মতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় সরকারের বিধিসম্মত আইন প্রণয়ন করে শিগগিরই দপ্তরি কাম প্রহরীদের সমস্যা সমাধান হবে’ বলেও আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি। তিনি জানান, সম্প্রতি ৬৪ হাজার ৮৪৩টি দপ্তরি কাম প্রহরীর পদসৃজনের ব্যাপারে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ে চিঠি দেয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: বুক ভরা জ্বালায় প্রাথমিকের দপ্তরিরা
এ আশ্বাসের প্রেক্ষিতে সমিতির সভাপতি সাধন কান্ত বাড়ই অবস্থান কর্মসূচি স্থগিত ঘোষণা করেন। তিনি বলেন, আগামী এক মাসের মধ্যে জটিলতা নিরসন না হলে আবারো কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।
এ বিষয়ে সাধারণ সম্পাদক মো. নাছির উদ্দিন মোল্লা দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, দপ্তরিরা বর্তমানে দুই ধরনের বেতন ভাতা পাচ্ছেন। কেউ কেউ অতিরিক্ত বেতন-ভাতা পাচ্ছেন, কিন্তু বোনাস পাচ্ছে না। এ জটিলতা নিরসনের দাবি জানাচ্ছি। আমাদের দাবি ন্যায্য; যে বেতন আমাদের পাওনা সেটাই দেয়া হোক। আর চাকরি রাজস্বখাতে স্থানান্তর করা হলে দপ্তরিদের সব দাবি পূরণ হবে।
প্রসঙ্গত, গত সপ্তাহে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দপ্তরি কাম প্রহরী পদে আউটসোর্সিংয়ের মাধ্যমে বিদ্যমান নীতিমালার আলোকে জনবল নিয়োগের কার্যক্রম পুনরাদেশ না দেয়া পর্যন্ত স্থগিত করে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। একই সাথে দপ্তরি কাম প্রহরী পদে নিয়োগে চলমান কার্যক্রম বাতিল করা হয়।