জামালপুর জেলার বকশীগঞ্জ উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ছানোয়ার হোসেনের বিরুদ্ধে এমপিও দুর্নীতির অভিযোগ এসেছে। এমপিও আবেদন প্রেরণে ঘুষ আদায়, টাকার বিনিময়ে অযোগ্য শিক্ষক নিয়োগ, প্রতিষ্ঠান থেকে চাঁদা আদায়সহ অনিয়ম ও দুর্নীতির বিষয়ে শিক্ষকরা তার বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ করেছেন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব এবং মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের কাছে।
অভিযোগে জানা যায়, উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার ছানোয়ার হোসেন প্রায় ৮ বছর আগে বকশীগঞ্জে যোগদান করেন। যোগদানের পরেই তিনি বিভিন্ন অনিয়মে জড়িয়ে পড়েন। বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধান শিক্ষকরা একাধিকবার সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে তার বিরুদ্ধে লিখিত ও মৌখিক অভিযোগ করেন। তবে এতে করে কোন প্রতিকার হয়নি।
স্কুল, কলেজ, মাদরাসায় শিক্ষক-কর্মচারী নিয়োগ বোর্ডের সদস্য হিসেবে থেকে প্রভাব খাটিয়ে টাকার বিনিময়ে অযোগ্য প্রার্থীদের যোগ্য বলে মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নেন উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার ছানোয়ার হোসেন।এমনকি অনলাইন এমপিও তথ্য প্রেরণের সময় প্রতি প্রার্থীর কাছ থেকে ১ থেকে ২ লাখ টাকা ঘুষ গ্রহণ করেন এ শিক্ষা কর্মকর্তা। টাকা না দিলে কোন তথ্যই তিনি প্রেরণ করেন না বলেও অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে।
অভিযোগে বলা হয়, মোটা অঙ্কের ঘুষ না দেওয়ায় বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নিয়মতান্ত্রিক ভাবে নিয়োগ প্রাপ্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের এমপিওভুক্তির আবেদন পাঠান না মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ছানোয়ার হোসেন। যে কারনে ননএমপিও শিক্ষক-কর্মচারীরা মানবেতর জীবন যাপন করছেন। তিনি অবৈধ উপায়ে নিয়োগ প্রাপ্ত একাধিক শিক্ষক-কর্মচারীকে টাকার বিনিময়ে এমপিওভুক্ত করেছেন বলেও অভিযোগ এসছে তার বিরুদ্ধে। প্রতিবাদ করলেই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের স্বীকৃতি বাতিলের হুমকি দেন বলেও অভিযোগ করেছেন শিক্ষকরা।
এছাড়া ভুয়া তথ্যে প্রতিবেদন তৈরি করে জাল নিবন্ধন সনদ দাখিল করে মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে শিক্ষক-কর্মচারীর এমপিওভুক্তির সুপারিশ প্রেরণ, কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন না করেই অফিসে বসেই মাসিক নির্ধারিত হারে চাঁদা আদায়, ছাত্রবৃত্তিসহ বিভিন্ন দাপ্তরিক কাজে ঘুষ আদায়ের অভিযোগ এসেছে এ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে।
শেফালি মফিজ মহিলা আলিম মাদরাসার অধ্যক্ষ আবদুর রশিদ, যদুরচর দাখিল মাদরাসার ভারপ্রাপ্ত সুপার সোলায়মান হোসেন, টুপকারচর কাঠালতলী দাখিল মাদরাসার সুপারিনটেনডেন্ট সোলাইমান হোসাইন, চন্দ্রবাজ রশিদা বেগম স্কুল এন্ড কলেজের অধ্যক্ষ রফিকুল ইসলাম, হাসিনা গাজী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আক্তারুজ্জামান, ভাটি খেওয়ারচর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নুর মোহাম্মদ, জাগিরপাড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবদুল মান্নান, বকশীগঞ্জ কে এ মহিলা মাদরাসার সুপারিনটেনডেন্ট সাফিউল ইসলাম, দত্তেরচর পুরান বাট্টাজোড় মীর কামাল হোসেন দাখিল মাদরাসার সুপার এনামুল হক ও বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ইউসুফ আলী এসব অভিযোগ করেছেন মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ছানোয়ার হোসেনের বিরুদ্ধে।
অভিযোগ অস্বীকার করে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ছানোয়ার হোসেন দৈনিকশিক্ষা ডটকমকে বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগের বিষয়ে আমি অবগত নই।’ আর যেসব অভিযোগের কথা বলা হচ্ছে তা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন।