সাতক্ষীরা কলারোয়ার উপজেলার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে মোবাইল ফোনে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা পরিচয় দিয়ে ল্যাপটপ দেয়ার নাম করে বিকাশে টাকা দাবি করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। গত মঙ্গলবার (২৩ অক্টোবর) এবং বুধবার (২৪ অক্টোবর) কিছু অপরিচিত নম্বর থেকে ফোন করে ল্যাপটপ দেয়ার নাম করে এই টাকা দাবির ঘটনা ঘটেছে। কিন্তু সংশিষ্ট দপ্তর থেকে এ বিষয়টি ভুয়া বলে অবহিত করে সবাইকে এ বিষয়ে সচেতন ও সজাগ থাকার তাগিদ দেয়া হয়েছে। উপজেলার সরসকাটি হাইস্কুল, কাজীরহাট গালর্স হাইস্কুল, সাতপোতা রহিমা বালিকা বিদ্যালয়, ছলিমপুর হাইস্কুল, মুরারীকাটি হাইস্কুল, বদরুন্নেছা বালিকা বিদ্যালয়সহ অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ফোন করে টাকা বিকাশ করার কথা বলা হয়েছে।
প্রতিষ্ঠানের প্রধান শিক্ষকরা জানিয়েছেন, কখনো কলারোয়ার ইউএনও’র মোবাইল নম্বর, আবার কখনো কোন সচিবের নাম ব্যবহার করে ফোনের অপর প্রান্ত থেকে ল্যাপটপ দেয়ার নাম করে বিকাশে টাকা চাওয়া হচ্ছে।
জানা যায়, উপজেলার সাতপোতা বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মুজিবুর রহমানের কাছে ০১৭২২-৬০৫৯৭৮ নম্বর থেকে ফোন করে বিকাশ করার কথা বলা হয়েছে। ইউএনও’র উদ্ধৃতি দিয়ে সেখানে বলা হয়, ‘৫৮হাজার টাকার ল্যাপটপ দেয়া হবে। এজন্য ৮ হাজার টাকা বিকাশে দিতে হবে।’ তখন প্রধান শিক্ষক ৫ হাজার টাকা দিতে রাজি হলে মোবাইলের অপর প্রান্ত থেকে বলা হয়, ‘টাকাটা বিকাশ করে বিকেলে ইউএনও’র বাসায় দেখা করবেন।’ বিষয়টি নিয়ে প্রধান শিক্ষকের সন্দেহ হলে তিনি খোঁজখবর নিয়ে দেখেন বিষয়টি ভূয়া।
কাজীরহাট গার্লস হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক সামছুল হক দৈনিকশিক্ষা ডটকমকে বলেন, গত বুধবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে তার কাছে প্রথমে ০১৭২২-৬০৫৯৭৮ নম্বর থেকে নিজেকে ইউএনও পরিচয় দিয়ে তার নম্বর আছে কিনা বললে প্রধান শিক্ষক বলেন, নেই। তখন বলা হয়, শিক্ষা অফিসার আমার পরিচয় দিয়ে দেবেন। দ্বিতীয়বার ০১৭১৭-২৩৯৯৮৯ নম্বর থেকে শিক্ষা অফিসারের পরিচয় দিয়ে (যদিও সেটা শিক্ষা অফিসারের কন্ঠস্বর নয়) ফোন দিয়ে ইউএনও’র কথা বলা হয়। তৃতীয়বার ০১৭০৯-৩১৯৭৩৯ নম্বর থেকে ফোন দিয়ে বলা হয়, আপনি সরকারি ল্যাপটপ পেয়েছেন কিনা। প্রধান শিক্ষক তখন বলেন স্কুলে পেয়েছে। তখন অপর প্রান্ত থেকে বলা হয়, ‘প্রধান শিক্ষকের জন্য ব্যক্তিগত ল্যাপটপ দেয়া হবে। এজন্য বিকাশে টাকা দেন। বিষয়টি সন্দেহজনক মনে হওয়ায় প্রধান শিক্ষক সামছুল হক সহকর্মী ও ঊর্ধ্বতনদের সাথে যোগাযোগ করে বিষয়টি সম্পর্কে ভূয়া ও প্রতারণা বলে নিশ্চিত হন।
মাধ্যমিক অফিসের কর্মকর্তারা খবর পেয়ে সরেজমিনে কলারোয়া ইউএনও’র কার্যালয়ে গিয়ে ইউএনও’র সরকারি মোবাইল নম্বর বন্ধ পাওয়া যায়। উপজেলা নির্বাহী অফিস সুপারভাইজার ইউএনও’র মোবাইলটি আলমারীতে বন্ধ অবস্থায় দেখান। তিনি জানান, ‘স্যারের নম্বরটি সম্ভবত ক্লোন করা হয়েছে।’
ইউএনও অফিসের বেঞ্চ সহকারী আব্দুল মান্নান বলেন, ‘এ বিষয়ে কলারোয়া থানায় জিডি করার প্রস্তুতি গ্রহণ করছি। উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার আবদুল হামিদ বলেন, বিষয়টি তিনি জেনেছেন। প্রতারণার ঘটনাটি সত্য। এ বিষয়ে সংশিষ্ট সকলকে ভুয়া ও প্রতারণা ফাঁদে পা না দেয়ার জন্য সজাগ থাকার অনুরোধ জানিয়েছেন তিনি।
