শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ‘বিজয় ফুল’ প্রতিযোগিতা

নিজস্ব প্রতিবেদক |

এবারের বিজয় দিবসে মুক্তিযুদ্ধে শহীদ বীর সেনানী এবং সাধারণ মানুষের স্মরণে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ‘বিজয় ফুল’ তৈরি করা হবে। সেই ফুল ধারণ করবে শিক্ষার্থীরা। শিক্ষার্থীদের তৈরি বিজয় ফুলের কিছু শুভেচ্ছা মূল্যে বিক্রি হবে। বিক্রয়লব্ধ অর্থ ব্যয় করা হবে শহীদ মুক্তিযোদ্ধা পরিবার বা প্রতিবন্ধীদের সহায়তায়।

আগামী মাসে স্কুল পর্যায়ে শুরু হবে বিজয় ফুল তৈরির প্রতিযোগিতা। ১৬ ডিসেম্বর দেশসেরা শিক্ষার্থীকে পুরস্কৃত করবেন প্রধানমন্ত্রী। জাতীয় ফুল হিসেবে শাপলাকে ‘বিজয় ফুল’ হিসেবে বিবেচনা করা হবে। ছয়টি পাপড়ি ও কলি নিয়ে হবে বিজয় ফুল। ফুলের পাপড়ি ছয়টি বঙ্গবন্ধুর ছয়দফাকে স্মরণ করাবে। আর মাঝখানের কলিটি হবে ৭ মার্চের প্রতীক- উন্নত মম শির।

বিজয় দিবসে এভাবে শহীদ বীর সেনানী ও সাধারণ মানুষকে স্মরণের উদ্যোগ নিয়েছে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়। সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মুখ্য সমন্বয়ক (এসডিজি) মো. আবুল কালাম আজাদের সভাপতিত্বে এ উপলক্ষে একটি সভা অনুষ্ঠিত হয়। ওই সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বিজয় ফুল তৈরির প্রতিযোগিতা শুরু হবে। এতে প্রথম থেকে দ্বাদশ শ্রেণীর শিক্ষার্থীরা অংশ নেবে। ওই প্রতিযোগিতা উপজেলা, জেলা, বিভাগ পর্যায়ের প্রতিযোগিতা শেষে জাতীয় পর্যায়ে পরিগ্রহ করবে। এরপর জাতীয়ভাবে চ্যাম্পিয়ন ও রানার আপ ঘোষণা করা হবে। আগামী ১৬ ডিসেম্বর বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেবেন প্রধানমন্ত্রী।

সংশ্লিষ্টরা জানান, প্রথম থেকে দ্বাদশ শ্রেণী পর্যন্ত বর্তমানে প্রায় ৪ কোটি শিক্ষার্থী আছে। এসব শিক্ষার্থী বিজয় ফুল তৈরির প্রতিযোগিতায় অংশ নিচ্ছে।

প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে গত ৫ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত এক সভায় প্রতিযোগিতা আয়োজনে বিস্তারিত কর্মসূচি প্রণয়নের লক্ষ্যে বিটিভির মহাপরিচালক এসএম হারুন-অর-রশীদকে প্রধান করে ৯ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়। ওই কমিটির সদস্য শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব ড. মো. মাহামুদ-উল-হক বলেন, পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের জনগণ তাদের বীর মুক্তিযোদ্ধাদের শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করতে বছরের একটি বিশেষ দিনে পোশাকে বিশেষ প্রতীক ধারণ করে থাকেন। যেমন, যুক্তরাজ্য, কানাডা, ফ্রান্স এবং বেলজিয়াম প্রতিবছর ১১ নভেম্বর প্রথম বিশ্বযুদ্ধে নিহত তাদের বীর শহীদদের স্মরণে রিমেমব্রোন্স ডে’ উদযাপন করেন। যেসব যোদ্ধা এবং সাধারণ মানুষ যুদ্ধে নিহত হয়েছেন, ওইদিন তাদের স্মরণে পোশাকে লাল পপি ফুল ধারণ করে থাকেন। সেই ধারণা থেকেই বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধে ৩০ লাখ শহীদ মুক্তিযোদ্ধা ও সাধারণ মানুষের স্মরণে ডিসেম্বর মাসে বিজয় ফুলের প্রচলনের সিদ্ধান্ত হয়েছে।

ওই বৈঠকে স্বরাষ্ট্র, শিক্ষা, তথ্য, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এবং এসব মন্ত্রণালয়ের অধীন বিভিন্ন সংস্থার প্রধানেরা উপস্থিত ছিলেন।

জানা গেছে, অক্টোবরে স্কুল ও মাদ্রাসাপর্যায়ে বিজয় ফুল তৈরির প্রতিযোগিতা শুরু হবে। ১৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত চলবে প্রতিযোগিতা। প্রতিটি ছাত্রছাত্রী এই ফুল তৈরি করে তাদের বন্ধু-বান্ধব ও সাধারণ মানুষের মাঝে তা বিতরণ করবে। সবচেয়ে সুন্দরভাবে তৈরি করা বিজয় ফুলের জন্য পুরস্কারের ব্যবস্থা করা হবে। তৈরি করা কাগজের ফুল বিক্রি করে অর্জিত অর্থ শহীদ মুক্তিযোদ্ধা পরিবার অথবা প্রতিবন্ধীদের সহায়তায় প্রদান করা হবে।

অতিরিক্ত সচিব মাহামুদ-উল-হক বলেন, নতুন প্রজন্মের মধ্যে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ছড়িয়ে দিতে এই পদক্ষেপ নেয়া হবে। বিজয় ফুল তৈরির প্রতিযোগিতার পাশাপাশি স্কুল পর্যায়ে মুক্তিযুদ্ধের গল্প বলা ও শুদ্ধভাবে জাতীয় সঙ্গীত গাওয়ার প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হবে। এই তিন ইভেন্টে বিজয়ী শিক্ষার্থীদের হাতে প্রধানমন্ত্রী পুরস্কার বিতরণ করবেন।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
শিক্ষায় বরাদ্দ বেড়েছে, আরো বাড়বে: শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী - dainik shiksha শিক্ষায় বরাদ্দ বেড়েছে, আরো বাড়বে: শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী সমাবর্তনের অজুহাতে সনদ আটকে রাখা যাবে না - dainik shiksha সমাবর্তনের অজুহাতে সনদ আটকে রাখা যাবে না হিটস্ট্রোকে স্কুলছাত্রীর মৃত্যু - dainik shiksha হিটস্ট্রোকে স্কুলছাত্রীর মৃত্যু চুয়েটে আন্দোলন স্থগিত, সড়কে যান চলাচল শুরু - dainik shiksha চুয়েটে আন্দোলন স্থগিত, সড়কে যান চলাচল শুরু প্রাথমিকের প্রশ্ন ফাঁসে অল্পদিনে কয়েকশ কোটি টাকা আয় - dainik shiksha প্রাথমিকের প্রশ্ন ফাঁসে অল্পদিনে কয়েকশ কোটি টাকা আয় রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম সংবিধানবিরোধী নয়: হাইকোর্ট - dainik shiksha রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম সংবিধানবিরোধী নয়: হাইকোর্ট কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0057270526885986