পিওন ছাড়া আর কেউ নেই মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা (মাউশি) অধিদপ্তরের মনিটরিং অ্যান্ড ইভ্যালুয়েশন শাখায়। কারণ সব কর্মকর্তা এখন বিদেশ সফরে। ফলে সারাদেশ থেকে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধান ও সাধারণ শিক্ষকরা নানা কাজে এসে ফেরত যাচ্ছেন। একটি শাখার সব কর্মকর্তা এভাবে একই সঙ্গে বিদেশ সফরে যাওয়া নজিরবিহীন। খোদ মাউশির অন্য কর্মকর্তারাই সমালোচনামুখর হয়েছেন এ নিয়ে।
রাজধানীর আবদুল গণি রোডে অবস্থিত শিক্ষা ভবনের পেছনের দ্বিতীয় ভবনের ষষ্ঠ তলায় গিয়ে বুধবার সকালে দেখা যায় সব কর্মকর্তার সবার রুমে ঝুলছে তালা। কারও খোঁজ মেলেনি একজন কর্মচারী ছাড়া।
জানা গেছে, একজন পরিচালক, দুইজন উপ-পরিচালক, দুইজন সহকারী পরিচালক এবং দুইজন মনিটরিং অফিসার রয়েছেন মনিটরিং অ্যান্ড ইভ্যালুয়েশন শাখায়। তাদের সবাই দিল্লি সফর করছেন এখন। এ কর্মকর্তাদের অনেকের ফেসবুক প্রোফাইলে গিয়ে গতকাল দেখা যায়, সফরের নানা আনন্দ আয়োজনের ছবি আপলোড করেছেন তারা। অনেকটা বেড়ানোর মুডেই কাটছে তাদের এই সফর।
এই কর্মকর্তারা হলেন- মাউশির মনিটরিং অ্যান্ড ইভ্যালুয়েশন শাখার পরিচালক অধ্যাপক মো: সেলিম মিয়া, উপ-পরিচালক ড. মাহবুবা ইসলাম পাতা ও এসএম কামাল উদ্দিন হায়দার, সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ আশিকুল ইসলাম ও লাইলা নাহার এবং মনিটরিং অফিসার মো. রোকনুজ্জামান। এই টিমের নেতৃত্বে রয়েছেন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সচিব মো. সোহরাব হোসাইনের একান্ত সচিব (পিএস) কাজী মো. শাহজাহান।
জানা গেছে, ২৪ থেকে ২৯ অক্টোবর পর্যন্ত ভারতের নয়াদিল্লির একটি কর্মশালায় যোগ দিতে সেখানে রয়েছেন তারা। মাউশির এই শাখা সারাদেশে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন, শিক্ষা কার্যক্রম মনিটরিং এবং শিক্ষার মানোন্নয়নে কাজ করে। তারা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সরেজমিন পরিদর্শন করে ত্রুটি-বিচ্যুতি চিহ্নিত করে সুপারিশও করে মন্ত্রণালয়কে। একই সঙ্গে কার্যক্রম মূল্যায়ন করে বিভিন্ন প্রকল্পের। প্রতি ছয় মাস এবং বছরে একবার মনিটরিং রিপোর্ট প্রকাশ করে। সম্প্রতি মাউশির প্রকল্প এবং শিক্ষা কর্মসূচিগুলো কেন্দ্রীয়ভাবেও মনিটর করার জন্য একটি খসড়া নিয়ে কাজ করছে এই শাখা। গত শনিবার রাজধানীর ব্র্যাক ইন সেন্টারে এ-সংক্রান্ত একটি কর্মশালাও করেছে তারা। সংশ্নিষ্টরা জানান, এসব কাজ বাদ দিয়ে বিদেশ সফরের দিকেই ঝোঁক বেশি কর্মকর্তাদের।
এ ব্যাপারে মাউশির মহাপরিচালক অধ্যাপক ড. এস এম ওয়াহিদুজ্জামান বলেন, ‘মনিটরিং শাখার সবাই যে প্রোগ্রামে অংশগ্রহণ করছেন, সেটি পুরো টিমের প্রোগ্রাম। এটি বাংলাদেশে হলেও পুরো টিমকে সেখানে অংশ নিতে হতো। প্রোগ্রামটি যেহেতু নয়াদিল্লিতে হচ্ছে, তাই সেখানে গিয়েছেন তারা।’