শিক্ষা প্রশাসনকে দুর্নীতিমুক্ত করতে দুদকের ৬ সুপারিশের একটিও বাস্তবায়ন করেনি মন্ত্রণালয়। বছরের পর বছর রাজধানীর সরকারি হইস্কুলে চাকরি করা কতিপয় শিক্ষককে অন্যত্র বদলি করাও সুপারিশ করেছিল দুদক। কিন্তু সুপারিশ বাস্তবায়ন হয়। অবশ্য এর মধ্যে ২৫ জন হাইস্কুল শিক্ষককে বদলির আদেশ দেয়া হয়েছিল। কিন্তু নানা তদবিরে এ আদেশও বাস্তবায়ন হয়নি।
দুদক এক প্রতিবেদনে বলেছে, হাইস্কুলের ওই শিক্ষকরা ১০ বছর থেকে সর্বোচ্চ ৩৩ বছর পর্যন্ত একই স্কুলে রয়েছেন। তারা দীর্ঘদিন ধরে কোচিং বাণিজ্য করে অর্থ উপার্জন করছেন। এছাড়াও শিক্ষা প্রশাসনে বদলি বাণিজ্য, অনিয়ম-দুর্নীতি, কেনাকাটায় কমিশন, হয়রানি, অপ্রয়োজনীয় বিদেশ ভ্রমণের সঙ্গে ওপেন সিক্রেট হিসেবে জড়িতদের বদলির সুপারিশ করে সংস্থাটি।
অন্য কোন সুপারিশও বাস্তবায়ন করেনি শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
কর্মকর্তারা বলছেন, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের একটি চক্রের বিরুদ্ধে গত কয়েক বছর ধরেই কমিশন বাণিজ্য, ঘুষ-বাণিজ্যের অভিযোগ ‘ওপেন সিক্রেট’। এমপিওভুক্তি, সরকারি স্কুল-কলেজে বদলি-পদায়ন, জাতীয়করণের কাজ, পদোন্নতিতে ওপেন লেনদেন হয়। অবস্থা এমন পর্যায়ে যায় যে সাবেক শিক্ষামন্ত্রী ঘুষের ব্যাপকতা বুঝাতে গিয়ে কর্মকর্তাদের উদ্দেশ্যে বলেছিলেন, আপনারা ঘুষ খাবেন, কিন্তু সহনশীল হয়ে খাবেন। শিক্ষার এমন বেহাল অবস্থা পরিবর্তনের উদ্যোগ নেয় দুদক। গত বছর শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে ৩৯ দফা সুপারিশ পাঠায় দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক)। এর মধ্যে বিতর্কিত কর্মকর্তাদের বদলিসহ ৬টি বিশেষ সুপারিশ ছিল সংস্থাটির পক্ষ থেকে। এর মধ্যে কোচিংবাজ শিক্ষকদের ঢাকার বাইরে বদলি, নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে ফাইল অনিষ্পত্তি, ফাইল আটকে দুর্নীতি করেন এমন কর্মকর্তা-কর্মচারীদের তালিকা তৈরি করে ব্যবস্থা, প্রশাসনের প্রধান বা গ্রেড-৩ থেকে গ্রেড-১ পর্যন্ত পদগুলো ছাড়া অন্যান্য পদের বদলি, বিভিন্ন প্রকল্পের কেনাকাটার সিন্ডিকেট ভেঙ্গে দেয়া, গাড়ি অপব্যবহার বন্ধ ও অপ্রয়োজনীয় বিদেশ ভ্রমণ এবং প্রশিক্ষণের নামে অর্থ ব্যয়ে অনিয়ম দূর করা।
এছাড়াও সরকারি ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিচালনার জন্য বিশেষ প্রস্তাব দেয়া হয় দুদকের পক্ষ থেকে। দুদকের এসব সুপারিশের একটিও বাস্তবায়ন করেনি শিক্ষা মন্ত্রণালয়।