শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তি কবে, কীভাবে

শরীফুজ্জামান আগা খান |

গত ১৬ সেপ্টেম্বর জাতীয় সংসদে শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তি বিষয়ে এক সংসদ সদস্যের প্রশ্নের জবাবে বলেন, অর্থ মন্ত্রণালয় অর্থ ছাড় না করলে এমপিও দেয়া যায় না। ইতিমধ্যে অর্থ মন্ত্রণালয় রাজি হয়েছে এবং কিছু টাকা বরাদ্দও দিয়েছে। শিক্ষা মন্ত্রণালয় প্রজ্ঞাপন দিয়েছে। অনলাইনের আবেদন বাছাই করা হবে। কীসের ভিত্তিতে এমপিও দেওয়া হবে, তা প্রধানমন্ত্রীর মতামত নিয়ে আগামী মাসের মধ্যে ফয়সালা হবে। শিক্ষামন্ত্রীর এ বক্তব্যে ননএমপিও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মচারীরা এ সরকারের মেয়াদে এমপিভুক্তির ব্যাপারে আশান্বিত হয়েছিলেন। কিন্তু এর পরদিন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মন্ত্রিসভার বৈঠকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিভুক্তি প্রসঙ্গে বলেন, যে পরিমাণ আবেদন জমা পড়েছে, তাতে সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে এমপিওভুক্তি করা সম্ভব নয়।

এমপিওভুক্ত করা হবে, এটি চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত। তবে যথাযথভাবে যাচাই-বাছাই করে যোগ্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকেই কেবল এমপিওভুক্ত করা হবে। কেবল কাগজে-কলমে যাচাই নয়, সরেজমিনে প্রতিষ্ঠান যাচাই করতে হবে। এতে কিছুটা সময় লাগলে লাগবে। এরপর শিক্ষামন্ত্রী সাংবাদিকদের কাছে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের প্রতিধ্বনি করেন। প্রধানমন্ত্রীর এই বক্তব্যের পর এমপিওভুক্তি নিয়ে আবারো দীর্ঘসূত্রিতার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। কে বা কারা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সরেজমিন পরিদর্শন করবেন? এ কাজে কত সময় লাগবে? এ সকল প্রশ্নের সদুত্তর নেই। এ সরকারের মেয়াদ আর বেশিদিন নেই। আগামী মাসে নির্বাচনকালীন ছোট সরকার গঠিত হবে। সেই সরকার কেবল রুটিন ওয়ার্ক করবে, কোন নীতিগত সিদ্ধান্ত নেবে না। এমন পরিস্থিতিতে এমপিওপ্রত্যাশী শিক্ষক-কর্মচারীরা হতাশ হয়ে পড়েছেন।

ননএমপিও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এক-চতুর্থাংশ

মাধ্যমিক স্তরে নিম্ন মাধ্যমিক-মাধ্যমিক বিদ্যালয়, কলেজ, মাদরাসা এবং কারিগরি এই চার ধরনের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান রয়েছে। অন লাইনে আবেদনের পর ননএমপিও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সংখ্যা জানা গেল ৯ হাজার ৪৯৮। অবশ্য এর ভেতরে স্তর পরিবর্তনের আবেদন করেছে এমন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানও রয়েছে। এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান আছে প্রায় ২৮ হাজার। তাহলে দেখা যাচ্ছে, মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ভেতর এক-চতুর্র্থাংশ ননএমপিও। সরকার এই প্রতিষ্ঠানগুলোর দিকে নজর দিচ্ছে না। শিক্ষায় অবদান রাখার পরও বড় সংখ্যক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বছরের পর বছর উপেক্ষিত রয়ে গেছে। এতে করে মাধ্যমিক স্তরে মানসম্মত শিক্ষায় বড় ধরনের সংকট সৃষ্টি হয়েছে। 

শিক্ষামন্ত্রীর দায়িত্ব এড়ানো

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তির বিষয়ে শিক্ষামন্ত্রণালয়ের কখনো উদ্যোগী ভূমিকা দেখা যায়নি। শিক্ষামন্ত্রী বরাবর দায়িত্ব এড়িয়ে গেছেন। বছরের পর বছর তিনি শিক্ষকদের মিছে সান্ত্বনা দিয়ে চলেছেন। এ বছর ২ জানুয়ারি প্রেসক্লাবের সামনে শিক্ষক-কর্মচারীদের অনশন কর্মসূচিতে এসে তিনি বলেন, আমি কথা দিচ্ছি, এমপিওভুক্তির দাবি পূরণ করে দেব। টাকা-পয়সা, অর্থের ব্যাপার আছে, অর্থমন্ত্রী রাজি হয়েছেন, আমরা কাজ এগিয়ে রেখেছি। শিক্ষকরা আমাদের মাথার মণি, সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ শক্তি, নিয়ামক শক্তি। শিক্ষকদের প্রতি অবহেলা কেউ মেনে নিতে পারে না। অথচ শিক্ষামন্ত্রীর এ কথা বলার দীর্ঘ ৬ মাস পর ঘোষিত বাজেটে এমপিওভুক্তি খাতে কোন বরাদ্দ থাকে না। এরপর শিক্ষক-কর্মচারীরা আবার আন্দোলনে নামলে ১২ জুন ‘বেসরকারী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান (স্কুল ও কলেজ) জনবল কাঠামো ও এমপিও নীতিমালা ২০১৮’ প্রকাশিত হয়। কঠিন সব শর্ত দিয়ে অর্থ মন্ত্রণালয় এ নীতিমালা প্রণয়ন করে। এ সব শর্ত এমপিওভুক্ত অন্তত ৫ হাজার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পূরণে সক্ষম নয়। এখন এ  নীতিমালার আলোকে সিদ্ধান্ত নেবার বিষয়টি প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরে প্রক্রিয়াধীন। 


ত্রুটিপূর্ণ স্কোরিং পদ্ধতি অনুসরণ

এক ত্র“টিপূর্ণ স্কোরিং পদ্ধতি অনুসরণ করে স্বীকৃতিপ্রাপ্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মধ্য থেকে এমপিওভুক্তির যোগ্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বাছাই করা হয়েছে। এতে করে অগ্রসর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান অতিমূল্যায়িত এবং মধ্যম মানের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান অবমূল্যায়িত হয়েছে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তির যোগ্যতা পরিমাপক সূচক ধরা হয়েছে ৪টি। এগুলো হলো একাডেমিক স্বীকৃতির বয়স, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী সংখ্যা, পাবলিক পরীক্ষায় অংশগ্রহণকারী পরীক্ষার্থী এবং পাসের হার। প্রতিটি সূচকে মান ২৫। মোট মান ১০০। একাডেমিক স্বীকৃতিতে কাম্যমান ৫ এবং অন্য তিনটি সূচকে কাম্যমান ১৫ থেকে শুরু হয়েছে। কাম্যমানের নীচে গেলে ওই সূচকে কোন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ০ (শূন্য) স্কোর দেওয়া হয়েছে। একটি উদাহরণ, মফঃস্বলের একটি নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের কাম্য শিক্ষার্থী ধরা হয়েছে ১৫০ জন। এর নীচে একজন শিক্ষার্থী থাকলেও স্কোর ০ (শূন্য) মিলেছে। পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ৪০ জন না হলে এবং পাসের হার ৭০ শতাংশের নীচে হলেও স্কোর ০ (শূন্য) হয়েছে। এ রকম স্কোরিংয়ের কারণে মধ্যম মানের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো ঢালাওভাবে অযোগ্য বিবেচিত হয়েছে। আবার কাম্য সংখ্যার পর সূচকের ১০ শতাংশ মান বৃদ্ধিতে স্কোর ৫ বেড়েছে। এতে করে নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ১৬৫ জন হলে স্কোর ২০। আর ২০ শতাংশ শিক্ষার্থী বৃদ্ধিতে অর্থাৎ ১৮০ জন হলে পূর্ণমান ধরা হয়েছে ২৫। কাম্যসংখ্যা ১৫০ এর ক্ষেত্রে গড়ে ১০ জন শিক্ষার্থীপ্রতি স্কোর হচ্ছে ১। অথচ ১০ শতাংশ কী ২০ শতাংশ বৃদ্ধিতে প্রতি ৩ জনে স্কোর  বেড়েছে ১ করে। এভাবে এগিয়ে থাকা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পরীক্ষার্থীর সংখ্যা এবং পাসের হারের ক্ষেত্রে অতিমূল্যায়ন হয়েছে। আর কিছুটা পিছিয়ে পড়া শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে একেবারে অযোগ্যের কাতারে ফেলা হয়েছে।

সরল আনুপাতিক স্কোরিং প্রস্তাবনা

আন্দোলনরত শিক্ষক সংগঠনের পক্ষ থেকে ‘কোন সূচকে ০ (শূন্য) নয়, কোন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে উপেক্ষা নয়’ এই নীতির ভিত্তিতে সরল আনুপাতিক স্কোরিং প্রস্তাব করা হয়েছে। নীতিমালার একাডেমিক স্বীকৃতির ক্ষেত্রে প্রতি ২ বছরের জন্য ৫ মান মেনে নিয়ে অন্য তিনটি ক্ষেত্রে কাম্যমান ১৫ না রেখে শুরু থেকে স্কোরিং করার আবেদন শিক্ষামন্ত্রীর কাছে করা হয়েছে। এর অনুলিপি সচিব, এমপিও নীতিমালা কমিটির আহবায়ক অতিরিক্ত সচিব জাবেদ আহমদের কাছেও দেয়া হয়েছে। কাম্যমানের শিক্ষার্থী সংখ্যাকে ১৫ দিয়ে ভাগ করলে স্কোর দাঁড়ায় ১। এখন কোন একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী সংখ্যার অনুপাতে যে স্কোর দাঁড়ায়, তা দেওয়াই সঙ্গত। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানভেদে পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ১-১০ কিংবা ১-১৫ হলে স্কোর হবে ৫; এরপর ধাপে ধাপে স্কোর গাণিতিক হারে বাড়বে। আর পাসের হার ২০ শতাংশের ভেতর হলে ৫, ২১-৪০ শতাংশ হলে ১০, এভাবে ৮০ শতাংশের ওপরে হলে স্কোর ২৫-এ পৌঁছাবে। এভাবে স্কোরিং করলে কোন একটি শিক্ষপ্রতিষ্ঠানের প্রকৃত অবস্থা  সম্পর্কে অনেকটা সঠিক ধারণা পাওয়া যাবে।

অন্যান্য কতিপয় গুরুত্বপূর্ণ ফ্যাক্টর

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান স্থাপনের ক্ষেত্রে ক্যাচমেন্ট এলাকার জনসংখ্যা এবং  চতুর্দিকে সমজাতীয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে দূরত্ব পরিমাপ গুরুত্বপূর্ণ শর্ত। এজন্য পরিসংখ্যান কর্মকর্তা ও উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নিকট হতে সনদ নিতে হয়। প্রতিষ্ঠানের কতটুকু নিজস্ব জমি আছে সেটিও বিবেচনার বিষয় হওয়া উচিত। ননএমপিও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো কঠিন পরিস্থিতির মধ্যে টিকে আছে। যে ননএমপিও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ঠিকভাবে চলছে না, ওই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রয়োজন নেই- এ রকম সরল সিদ্ধান্তে আসা যায় না। এমপিও এবং ননএমপিও নির্বিশেষে সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নিবন্ধনধারী শিক্ষক নিয়োগের বিধান চালু হয়েছে। বহু বছর চাকরি করার পরও বেতন না হওয়ায় অনেক শিক্ষক প্রতিষ্ঠান ছেড়ে চলে গেছেন। এখন ওই শূন্যপদে বিনাবেতনে নিবন্ধনধারী শিক্ষক মিলছে না। ফলে প্রতিষ্ঠান দুর্বল হয়ে পড়ছে। সরকার প্রকৃত শিক্ষাবান্ধব হলে আয়োজন করে আবার অনেক বন্ধ হওয়া শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান চালু করতে পারে।

‘অযোগ্য’ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর ভবিষ্যৎ কী?

 ৯ হাজার ৪৯৮টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তির আবেদন করেছে। আলোচনায় আসছে, অর্থ মন্ত্রণালয় যা বাজেট দিতে চায় তাতে এক হাজার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তি সম্ভব। তাহলে বাকি সাড়ে ৮ হাজার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ভাগ্যে কী ঘটবে? স্বীকৃতিপ্রাপ্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো বছরের পর বছর এমপিওভুক্তির অপেক্ষায় আছে। এবারেও এমপিওভুক্ত হতে না পারলে শিক্ষক-কর্মচারীরা তাদের চাকরির মেয়াদে এমপিওভুক্তির আশা ছেড়ে দেবেন। এ সকল প্রতিষ্ঠানের টিকে থাকা দুরূহ হয়ে পড়বে। শহর এলাকায় শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে বেতন পাওয়া কিছু প্রতিষ্ঠান হয়তো কোনভাবে টিকে থাকবে। কিন্তু মফঃস্বলের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে যাবে। কাজেই যোগ্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তির সময় ‘অযোগ্য’ বিবেচিত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর করুণ পরিণতির কথা গুরুত্বের সাথে বিবেচনায় নিতে হবে।

বাজেট স্বল্পতায় করণীয়

স্বীকৃতিপ্রাপ্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর ভেতর থেকে একটি অংশকে এমপিওভুক্ত করা হলে অশুভ প্রতিযোগিতার উদ্ভব ঘটবে। অর্থ, লবি এবং রাজনৈতিক পক্ষপাত এক্ষেত্রে নিয়ামক উপাদান হয়ে দাঁড়াবে। এমপিওবঞ্চিত শিক্ষক-কর্মচারীরা পরস্পরের প্রতি সহমর্মী, পরস্পরের প্রতি দায়বদ্ধ। এমপিওভুক্তির পর কেউ হাসবে আবার কেউ চোখের জলে ভাসবে, এরকম পরিস্থিতি তারা দেখতে চান না। এজন্য এমপিওভুক্তি খাতে বরাদ্দকৃত অর্থ অপর্যাপ্ত হলে সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তির আওতায় এনে আংশিক বেতন চালু করার প্রস্তাব করেছে। পরবর্তী অর্থবছর/ অর্থবছরগুলোয় পর্যায়ক্রমে বেতন পূর্ণ করলে তাতে তাদের আপত্তি নেই।
বাজেট স্বল্পতায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের স্বীকৃতির বয়সভিত্তিক ধাপ অনুসরণের পরিকল্পনাও করা যায়। দুই বারে এমপিওভুক্তির পরিকল্পনা নিলে ২০১০ সালের পূর্বে স্বীকৃতি পাওয়া শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এ বছর এবং অবশিষ্ট শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পরবর্তী বছর এমপিওভুক্ত করা যায়। আর তিন বারে এমপিওভুক্তির পরিকল্পনা নিলে ২০০৫ খিস্টাব্দের আগে স্বীকৃতি পাওয়া শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এ বছর, ২০০৬-১০ খ্রিস্টাব্দ মেয়াদে ৫ বছরে স্বীকৃতি পাওয়া শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান আগামী বছর এবং বাকি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান তৃতীয় ধাপে এমপিওভুক্ত করা যায়। তবে যে পরিকল্পনাই গ্রহণ করা হোক না কেন এক্ষেত্রে প্রজ্ঞাপন থাকতে হবে।

সুযোগসন্ধানীরা তৎপর

অস্পষ্ট ও ঘোলাটে পরিস্থিতিতে সুযোগসন্ধানীরা তৎপর হয়ে ওঠে। এমপিওভুক্তির বিষয়ে সরকারের সুনির্দিষ্ট কোন পরিকল্পনা না থাকায় সৃষ্ট ধুম্রজালে মন্ত্রণালয়ের সাথে যোগাযোগের কথা বলে দালাল শ্রেণির ব্যক্তিরা তৎপর হয়ে উঠেছে। তারা অর্থের বিনিময়ে এমপিওভুক্তি করিয়ে দেয়ার নিশ্চয়তা দিচ্ছে। দিশেহারা শিক্ষকদের এদের প্ররোচনায় পড়ার আশংকা দেখা দিয়েছে। কেউ কেউ এদের ফাঁদে পা-ও দিয়েছেন। সুযোগসন্ধানীদের ভেতর জনপ্রতিনিধিরাও আছেন। অনলাইন আবেদনে অপশন না থাকলেও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তির অনুরোধ জানিয়ে মন্ত্রী, এমপি এবং ভিআইপিদের ডিও লেটারের স্তূপ শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে জমেছে। এক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষকরা এমপির কাছে গেলে তিনি শিক্ষক-কর্মচারীপ্রতি ২ লাখ করে টাকা দাবি করেছেন বলে জানালেন। ইতিপূর্বে ২০১৩ খ্রিস্টাব্দে এমপিওভুক্তির আবেদন চাওয়া হলেও এমপিওভুক্ত করা হয়নি। সে সময়ও অনেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান দালালদের খপ্পরে পড়ে ক্ষতিগ্রস্ত হন।

শেষ কথা
কত স্কোর পেয়ে উত্তীর্ণ হয়ে কোন কোন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তির যোগ্য বিবেচিত হয়েছে সে তালিকা এখনও প্রকাশ করা হয়নি। সামগ্রিকভাবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তির পরিকল্পনা না করে একটি নির্দিষ্টসংখ্যক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তির সিদ্ধান্ত নিলে তাতে গুরুতর প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হবে। গত ৫ জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে তাঁর একান্ত সচিব সাজ্জাদুল হাসান অনশনরত শিক্ষক-কর্মচারীদের এমপিওভুক্তির প্রতিশ্র“তি দিয়ে অনশন ভাঙান। অর্থমন্ত্রী এবং শিক্ষামন্ত্রী দু’জনেই নতুন এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের বেতন জুলাই থেকে কার্যকর হবে বলে জানিয়েছিলেন। এখন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত করা না হলে  তা হবে গুরুতর প্রতিশ্র“তি ভঙ্গের ঘটনা। 


লেখক : শিক্ষক ও গবেষক


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
ছুটি না বাড়ালে বাড়ি যেতে হতে পারে ঈদের দিন - dainik shiksha ছুটি না বাড়ালে বাড়ি যেতে হতে পারে ঈদের দিন হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী - dainik shiksha হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী জালিয়াতি করে পদোন্নতি শিক্ষা ক্যাডার গ্যাঁড়াকলে - dainik shiksha জালিয়াতি করে পদোন্নতি শিক্ষা ক্যাডার গ্যাঁড়াকলে রুয়েটের সাবেক উপাচার্য-রেজিস্ট্রারের বিরুদ্ধে মামলা - dainik shiksha রুয়েটের সাবেক উপাচার্য-রেজিস্ট্রারের বিরুদ্ধে মামলা উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় - dainik shiksha উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগে সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তি - dainik shiksha প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগে সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তি উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় - dainik shiksha উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী - dainik shiksha হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0026638507843018