করোনা ভাইরাসের সংক্রমন থেকে শিক্ষার্থীদের সুরক্ষিত রাখতে স্কুল কলেজ বন্ধ আছে। এ পরিস্থিতিতে সব শিক্ষার্থীকে পরবর্তী শ্রেণিতে উত্তীর্ণ করার হবে। শিক্ষার্থীদের পড়ালেখার সাথে সম্পৃক্ত রাখতে সংক্ষিপ্ত পাঠ্যসূচি প্রকাশ করা হয়েছে। আর পরবর্তী শ্রেণিতে শিক্ষার্থীদের বিশেষ পরিচর্যার জন্য অ্যাসাইন্টমেন্ট দেয়া হবে। পরীক্ষা বা অন্য কোনভাবে শিক্ষার্থীদের মূল্যায়ন না করতে স্কুল-কলেজগুলোকে নির্দেশ দিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি। এ নির্দেশ উপেক্ষা করে বার্ষিক পরীক্ষা নিচ্ছেন নওগাঁর মান্দা উপজেলার কালীগ্রাম দোডাঙ্গী বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আনিসুর রহমান। তবে বিষয়টি নিয়ে শিক্ষার্থীদের অভিভাবকদের মাঝে অসন্তষ দেখা দিয়েছে।
এক অভিভাবক অভিযোগ করে বলেন, আগামী ৬ নভেম্বর থেকে ৮ম শ্রেণির পরীক্ষা শুরু হবে। তাই আগে থেকে রুটিন দিয়েছে স্কুল কর্তৃপক্ষ। এছাড়া বর্তমানে ৭ম শ্রেণির পরীক্ষা চলমান রয়েছে। আর ১৮ নভেম্বর থেকে নবম-দশম শ্রেণির পরীক্ষা নেয়া হবে বলে রুটি প্রকাশ করেছে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক শিক্ষার্থীর অভিভাবক ক্ষোভ প্রকাশ করে দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, করোনাভাইরাসের সংক্রামন রোধে এইচএসসি ও জেএসসি পরীক্ষা বন্ধ করেছে সরকার। কিন্তু এই স্কুলের প্রধান শিক্ষক বার্ষিক পরীক্ষা নিচ্ছে। পরীক্ষা কেন্দ্রে শিক্ষার্থীরা এক সাথে বসলে করোনা সংক্রামনের ঝুঁকি থেকেই যায়। এমন অবস্থায় সন্তানের পড়া-শোনা নিয়ে চিন্তিত অভিভাবকরা বলে জানান তিনি।
এদিকে, বার্ষিক পরীক্ষার নামে প্রতি শিক্ষার্থীর থেকে প্রতি বিষয়ে ফি বাবদ ২০ টাকা করে নেয়া হয়েছে। অভিভাবকদের অভিযোগ শিক্ষকরা ‘অ্যাসাইনমেন্টের নামে পরীক্ষা নিয়ে ফি বাবদ টাকা নিচ্ছেন।
এ বিষয়ে কালীগ্রাম দোডাঙ্গী বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আনিসুর রহমান দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, ‘অ্যাসাইমেন্টের জন্য ২০ টাকা করে নেয়া হচ্ছে।’ তবে পরীক্ষা নেয়া হচ্ছে কিনা সে বিষয়ে সুস্পষ্টভাবে কোন বক্তব্য দেননি।
সব পরীক্ষা শিক্ষামন্ত্রণালয় বন্ধ করার পরেও কেনো পরীক্ষা নেয়া হচ্ছে জানতে চাইলে অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক দৈনিক শিক্ষা ডটকমকে বলেন, ‘আমি আপনাকে কেনো কৈফিয়ত দেবো? আপনি মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে যান। তারা উত্তর দেবে। এ বিষয়ে আর কিছু বলতে চাচ্ছি না ’
এ বিষয়ে মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা শাহ-আলম দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, পরীক্ষা নেয়ার বিষয়ে আমি কিছু জানিনা। তদন্ত সাপেক্ষে সত্যতা পেলে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আব্দুল হালিম দৈনিক শিক্ষা ডটকমকে বলেন, করোনার সময়ে বিদ্যালয়ে পরীক্ষা নেয়ার কোন নির্দেশনা সরকার দেননি। এ সময় কোন প্রতিষ্ঠান প্রধান পরীক্ষা নিতে পারেন না। আমি উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য নির্দেশ দিচ্ছি।
জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মো. মোবারুল ইসলাম দৈনিক শিক্ষা ডটকমকে বলেন, করোনার সময়ে বিদ্যালয়ে পরীক্ষা নেয়ার কোন সুযোগ নেই। তদন্ত সাপেক্ষে প্রতিষ্ঠান প্রধানের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।