ঝালকাঠির রাজাপুর উপজেলার এমপিওভুক্ত বাদুরতলা নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে কোনো শিক্ষার্থী নেই। কিন্তু তা সত্ত্বেও স্কুল ঠিকভাবে চলছে দেখিয়ে গত দুই যুগ ধরে বেতন-ভাতা নিচ্ছেন শিক্ষক-কর্মচারীরা। তারা প্রতি মাসে মোট দেড় লাখ টাকা বেতন-ভাতা তুলছেন বলে জানা গেছে।
এ ছাড়া বিদ্যালয়ে কর্মরত আটজনের মধ্যে তিনজনই একই পরিবারের সদস্য। উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা বিষয়টি জানলেও রহস্যজনক কারণে এ বিদ্যালয়ের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে না। এতে সরকারের বিপুল অর্থ অপচয় হচ্ছে বলেও মনে করেন এলাকাবাসী।
জানা যায়, ১৯৮৬ খ্রিষ্টাব্দে ঝালকাঠির রাজাপুর উপজেলার পশ্চিম বাদুরতলা গ্রামের আবুবকর সিদ্দিক নিজ বাড়ির সামনে পশ্চিম বাদুরতলা নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠা করেন। প্রতিষ্ঠার ৯ বছর পরে ১৯৯৫ খ্রিষ্টাব্দে বিদ্যালয়টি এমপিওভুক্ত হয়। প্রতিষ্ঠাতা আবুবকর সিদ্দিক নিজে শিক্ষক, তার স্ত্রী করণিক ও শ্যালিকা দপ্তরি পদে বিদ্যালয়ে কর্মরত। মেয়ে মুনমুন বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন।
একই পরিবারের তিনজনসহ মোট আটজন শিক্ষক-কর্মচারী রয়েছেন এ বিদ্যালয়ে। প্রতি মাসে তারা বেতন-ভাতা বাবদ প্রায় দেড় লাখ টাকা নিচ্ছেন। অথচ স্কুলে নেই কোনো শিক্ষার্থী। শিক্ষার পরিবেশ না থাকায় কোনো শিক্ষার্থী ভর্তি হচ্ছে না এ প্রতিষ্ঠানে।
স্থানীয় বাসিন্দা বাবলু হাওলাদার বলেন, তার জন্মের পর থেকেই বিদ্যালয়টি দেখছেন। তবে কোনো দিন এখানে লেখাপড়া হতে দেখেননি। এ অনিয়মের বিষয়ে বিভিন্ন সময় স্থানীয় মানুষ প্রতিবাদ করেছিল। কিন্তু প্রতিবাদ করা প্রত্যেকেই আবুবকর ও তার ছেলেদের হামলার শিকার হয়েছেন। তাদের জড়ানো হয়েছে একাধিক মিথ্যা মামলায়। তাই এখন কেউ এ বিষয়ে কথা বলতে চান না।
শিক্ষার্থী না থাকার কথা অস্বীকার করে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আখতারুজ্জামান বাচ্চু বলেন, ‘বিদ্যালয়টি একটি প্রত্যন্ত গ্রামে থাকায় শিক্ষার্থীর সংখ্যা একটু কম। বর্তমানে কাগজে-কলমে এখানে ১৪২ জন শিক্ষার্থী রয়েছে।’