দিনাজপুরের বিরামপুরে ১০ বছর বয়সী এক মাদরাসা শিক্ষার্থীকে পায়ে শেকল বেঁধে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে মাদরাসার প্রধান (মোহতামিম) লুৎফর রহমানের বিরুদ্ধে। এঘটনায় পুলিশ তাকে আটক করে গতকাল দিনাজপুর জেল হাজতে পাঠিয়েছে।
গত মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে উপজেলার দিওড় ইউনিয়নের কাদিপুর গ্রামে ত্বালিমউদ্দীন ইসলামিয়া মাদরাসার পাশে ধানক্ষেত থেকে শিশুটিকে উদ্ধার করে পুলিশ। পরে তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে অভিভাবকের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
এ ঘটনায় ওই রাতেই শিশুটির বাবা বাদী হয়ে শিশু আইনে মামলা দায়ের করেছেন।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, মাসখানেক ধরে ওই মাদরাসায় লেখাপড়া করছে ভুক্তভোগী শিশুটি। মঙ্গলবার দুপুরে মাদরাসার মোহতামিম লুৎফর রহমান তাকে অফিসকক্ষে ডেকে নিয়ে দুই পায়ে লোহার শেকল দিয়ে তালাবদ্ধ করে লাঠি দিয়ে হাত, মাথা, পিঠসহ শরীরের বিভিন্ন জায়গায় আঘাত করে। মারধরে শিশুটির দুই পা রক্তাক্ত হয়ে যায়। অমানুষিক নির্যাতনে শিশুটি নিস্তেজ হয়ে পড়লে তাকে অফিসে ফেলে রেখে বাইরে চলে যায় লুৎফর।
সন্ধ্যার দিকে শিশুটি কৌশলে সেখান থেকে বেরিয়ে যায়। কিন্তু ক্লান্ত শরীর নিয়ে সে বাড়ি ফেরার পথে পড়ে থাকে পাশের গ্রাম তৈয়বপুর চৌধুরী পাড়ার একটি ধানক্ষেতে। তখনও তার দুই পায়ে শেকল বাঁধা ছিল।
মুমূর্ষু অবস্থায় শিশুটিকে দেখে স্থানীয়রা থানায় খবর দেয়। পরে পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থলে গিয়ে শিশুটিকে উদ্ধার করে বিরামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে তার বাবার হেফাজতে তুলে দেয়।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত লুৎফরের ভাষ্য, ‘শিশুটির মা বলেছিল যে পড়াশোনা না করলে বা বেয়াদবি করলে শাসন করতে। তাই আমি এইভাবে শিশুটিকে শাসন করেছি। তবে বিষয়টি ভুল হয়েছে’।
বিরামপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনিরুজ্জামান বলেন, শিশুটিকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করা হয়েছে। শিশুটির বাবার করা মামলায় রাতেই মোহতামিমকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বুধবার সকালে তাকে দিনাজপুর আদালতে পাঠানো হয়েছে।