শিক্ষার্থীদের অনুসন্ধিৎসু করে তোলার পরামর্শ টিলডা সুইনটোনের

দৈনিকশিক্ষা ডেস্ক |

‘ঢাকা লিট ফেস্ট ২০১৮’-এর তৃতীয় এবং শেষ দিন (১০ নভেম্বর) বাংলা একাডেমির আব্দুল করিম সাহিত্যবিশারদ অডিটোরিয়ামে বিকেলের প্রথম সেশনে ভিন্নধারার শিক্ষাব্যবস্থা নিয়ে ‘অন ড্রামডন হিল’ শীর্ষক আলোচনায় লেখক আহসান আকবারের সঞ্চালনায় উপস্থিত ছিলেন জনপ্রিয় স্কটিশ অভিনেত্রী টিলডা সুইনটোন।

‘আগত ভবিষ্যৎকে মোকাবিলা’ স্লোগানে প্রতিষ্ঠিত ভিন্নধারার শিক্ষাব্যবস্থা প্রণয়নে অঙ্গীকারাবদ্ধ স্কটল্যান্ডের ড্রামডন স্কুল। অভিনেত্রী টিলডা সুইনটন পুরো সেশনজুড়ে মূলত এ প্রসঙ্গেই কথা বলেন। টিলডার মতে, বর্তমান বৈশ্বিক শিক্ষাব্যবস্থায় যে কাঠামো অনুসরণ করা হয় এবং শিশুদের প্রযুক্তি ব্যবহারের যে বাড়াবাড়ি, তা বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই একটি শিশুর শৈশব থেকে পরিণত হয়ে ওঠার পথে অন্তরায়; প্রতিটি ধাপেই তাকে একধরনের সামাজিক চাপ, বিষণ্নতা ও হতাশার দিকে ঠেলতে থাকে, যা শিক্ষাব্যবস্থার চূড়ান্ত উদ্দেশ্যের বিপরীত অবস্থানে।

ড্রামডন স্কুল গতানুগতিক ও তথাকথিত এই কাঠামো থেকে একেবারেই দূরে। স্কুলটির কার্যক্রম ব্যাখ্যা করতে গিয়ে টিলডা বলেন, তিন ধাপে এখানে শিক্ষার্থীদের শিক্ষাকার্যক্রম পরিচালনা করা হয়। ৪-৭ বছর পর্যন্ত শিক্ষার বিভিন্ন উপকরণের সঙ্গে তাদের পরিচয় করিয়ে দেওয়া হয়; কোনও পরীক্ষা দিতে হয় না তাদের। দ্বিতীয় ধাপ অর্থাৎ ৭-১৪ বছর পর্যন্ত হাতে-কলমে বিভিন্ন বৈজ্ঞানিক কলাকৌশলে অভ্যস্ত করা হয়, যা শিক্ষায় আগ্রহ বাড়িয়ে তোলে শিশুদের। শিক্ষা কার্যক্রমের শেষ ধাপ অর্থাৎ ১৪-২১ বছর বয়সী শিক্ষার্থীদের বুদ্ধিবৃত্তিক কার্যক্রমে অন্তর্ভুক্ত করা যায়, যেখানে তারা একটা দীর্ঘ সময় কোনও নির্দিষ্ট একটি বিষয়ে যেমন, স্থাপত্য, জীববিদ্যা, মনোবিজ্ঞান ইত্যাদি বিষয়ে অধ্যয়ন করে। এই বিদ্যায়তনিক শিক্ষা শেষে কলেজ বা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্তরে যেতে তাদের সাহায্য করে।

এই শিক্ষাব্যবস্থায় নিজের যমজ সন্তানরা বেড়ে উঠেছে বলেও জানান টিলডা। শিক্ষাব্যবস্থা নিয়ে বৃত্তের বাইরের এ ধরনের কথা বলে অডিটোরিয়ামে উপস্থিত কানায় কানায় পরিপূর্ণ দেশি-বিদেশি লেখক, শিক্ষক ও দর্শকদের প্রশংসায় ভাসেন টিলডা সুইনটোন। দর্শক সারি থেকে বেসরকারি ইংরেজি মাধ্যমের এক শিক্ষক জানতে চান, এ যুগের শিক্ষাকে শিক্ষার্থীদের কাছে আনন্দমুখর, অংশগ্রহণমূলক ও কার্যকরী করার লক্ষ্যে শিক্ষকদের প্রতি কোনও পরামর্শ আছে কিনা। টিলডা বলেন, শিক্ষকদের গৎবাঁধা নিয়মের বাইরে এসে কোনও একটি নির্দিষ্ট বিষয় ভাগ করে দিতে হবে। এরপর যথেষ্ট সময় নিয়ে শিক্ষার্থীদের শিক্ষা দিতে হবে। হাতেকলমে শিক্ষার প্রসার বাড়াতে হবে, যা শিক্ষার্থীদের পরীক্ষাভীতি দূর করে তাদের করবে তুলবে অনুসন্ধিৎসু এবং শিক্ষাকে করবে আনন্দমুখর।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
শিক্ষায় বরাদ্দ বেড়েছে, আরো বাড়বে: শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী - dainik shiksha শিক্ষায় বরাদ্দ বেড়েছে, আরো বাড়বে: শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী সমাবর্তনের অজুহাতে সনদ আটকে রাখা যাবে না - dainik shiksha সমাবর্তনের অজুহাতে সনদ আটকে রাখা যাবে না হিটস্ট্রোকে স্কুলছাত্রীর মৃত্যু - dainik shiksha হিটস্ট্রোকে স্কুলছাত্রীর মৃত্যু চুয়েটে আন্দোলন স্থগিত, সড়কে যান চলাচল শুরু - dainik shiksha চুয়েটে আন্দোলন স্থগিত, সড়কে যান চলাচল শুরু প্রাথমিকের প্রশ্ন ফাঁসে অল্পদিনে কয়েকশ কোটি টাকা আয় - dainik shiksha প্রাথমিকের প্রশ্ন ফাঁসে অল্পদিনে কয়েকশ কোটি টাকা আয় রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম সংবিধানবিরোধী নয়: হাইকোর্ট - dainik shiksha রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম সংবিধানবিরোধী নয়: হাইকোর্ট কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.003727912902832