লম্বা-সময় ধরে কম্পিউটার কিংবা মোবাইলে অনলাইন ক্লাস করার কারণে শিশু-কিশোরদের স্বাস্থ্যের ক্ষতি হচ্ছে বলে দাবি করছেন বিশেষজ্ঞরা। অনেক শিক্ষার্থীর চোখ জ্বালাপোড়া, পানি আসা, মাথাব্যথা ইত্যাদি অভিযোগ করছেন নিয়মিত।
স্বাস্থ্যবিষয়ক একটি ওয়েবসাইটে প্রকাশিত প্রতিবেদনে ভারতীয় ‘অপথালমোলজিস্ট’ ডা. অনিল কুমার বলেন, “বৈদ্যুতিক পর্দার দিকে লম্বা সময় তাকিয়ে থাকার কারণে চোখের ক্ষতি হচ্ছে। এতে শিশুরা অলস হচ্ছে, তাদের বিপাকক্রিয়ার গতি মন্থর হচ্ছে, ঘুমের স্বাভাবিক নিয়ম নষ্ট হচ্ছে, কমছে মনযোগ ধরে রাখার ক্ষমতা।”
অবসরপ্রাপ্ত ভারতীয় চক্ষু চিকিৎসক রঘুবির ওঝা বলেন, “লম্বাসময় বৈদ্যুতিক পর্দার দিকে তাকিয়ে থাকার কারণে হওয়া চোখের সমস্যাকে আমরা ‘কম্পিউটার ভিশন সিনড্রোম’ও বলে থাকি।”
“একইভাবে লম্বা সময় থাকার কারণে শরীরের রক্ত সঞ্চালন মন্থর হয়, ফলে অক্সিজেনের সরবরাহও কমে। একারণেই মুলত চোখে জ্বালাপোড়ার অনুভূতি হয়। এজন্য অভিভাবক ও শিক্ষক উভয়কেই অনুরোধ করব অনলাইন ক্লাসের ফাঁকে ২০ মিনিটের বিরত দিতে।”
ভারতের স্কুল শিক্ষিকা সুজাতা চন্দ্র বলেন, “শিক্ষার্থীদের অনেকেরই অভিযোগ ছিল মাথাব্যথা ও চোখ জ্বালাপোড়া নিয়ে। সঙ্গে ক্লাস শেষে তাদের পড়ায় মনযোগ দিতেও কষ্ট হচ্ছিল। এ থেকে বোঝা যায় লম্বা সময় কম্পিউটার অথবা মোবাইলে স্ক্রিনে তাকিয়ে থেকে অনলাইন ক্লাস করায় তাদের পড়া বোঝার ক্ষমতাও সাময়িক সময়ের জন্য স্থবির হয়।”
ভারতের সেইন্ট জোসেফ’স কনভেন্ট হাইস্কুলের শিক্ষিকা জানান, লম্বাসময় যাতে স্ক্রিনের দিকে তাকিয়ে থাকতে না হয় সেজন্য শিক্ষক-শিক্ষিকারা অনলাইনে ক্লাস শুরু করে শিক্ষার্থীদের বই খুলতে বলেন এবং বই থেকেই তাদের পড়া বোঝান। স্ক্রিনের দিকে তাকিয়ে থাকার প্রয়োজন হয়না।
ভারতের পাঞ্জাব ইউনিভার্সিটির ‘সাইকোলজি’ বিভাগের প্রধান ইফতেখার হোসাইন অনলাইন ক্লাসকে ‘ফর্মালিটি’ হিসেবে অ্যাখ্যায়িত করে বলেন, “সব বয়সের শিক্ষার্থীদেরই পড়াশোনার মানের অবনতি ঘটবে। লেখাপড়ার অনুশীলনটা আসলে শ্রেণিকক্ষে শিক্ষকের উপস্থিতিতে কিংবা সহপাঠীদের সঙ্গে মিলে না করলে ঠিক কার্যকর হয় না।”