শিক্ষার্থীদের চাওয়া গুরুত্ব দিলে কার্যকর হবে ডাকসু : ভিপি নুর

দৈনিকশিক্ষা ডেস্ক |

‘শিক্ষার্থীদের চাওয়া-পাওয়াকে গুরুত্ব দিলেই ডাকসু কার্যকর করা সম্ভব। সবার মাঝে এ উপলব্ধি আসলেই এর কার্যক্রম চালাতে কোনো অসুবিধা হবে না। একইসঙ্গে ডাকসুর কর্মসূচি বাস্তবায়নে মূল প্রতিবন্ধক লেজুড়ভিত্তিক ছাত্র রাজনীতিরও অবসান করতে হবে।’ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) ভিপি নুরুল হক নুর রবিবার ‘বাংলাদেশ প্রতিদিন’ এর সঙ্গে একান্ত আলাপচারিতায় এসব কথা বলেন। ডাকসুর পুনর্নির্বাচনের দাবিতে এখনো ‘অটল’ আছেন বলেও জানিয়েছেন তিনি। 

ডাকসু নির্বাচনের আগে পরে ক্যাম্পাসের পরিবর্তন বিষয়ে নুরুল হক নুর বলেন, ডাকসু নির্বাচন হওয়ার পর বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন কার্যক্রমে ডাকসুর নেতাদের ডাকা হচ্ছে। তাদের ডাকা মানেই কিন্তু কার্যক্রমগুলোতে শিক্ষার্থীদের সম্পৃক্ত করা। তাই আমি মনে করি, ডাকসু শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধিত্বের সুযোগ সৃষ্টি করেছে। তবে ডাকসু নির্বাচনে নানা ধরনের অনিয়ম হয়েছে, তাই এখনো পুনর্নির্বাচনের দাবি জানাচ্ছি। পুনর্নির্বাচনের দাবি তোলার পরও দায়িত্ব পালনের যৌক্তিকতা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ডাকসুর দায়িত্বগ্রহণের পক্ষে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ইতিবাচক মত ছিল বলেই আমরা দায়িত্ব নিয়েছি। এরপরও আমরা ডাকসুর পুনর্নির্বাচনের দাবিতে অটল রয়েছি। প্রথম বৈঠকেই আমি পুনর্নির্বাচনের কথা বলেছি। আরেকটি নির্বাচনের আগে এই সংসদই কার্যকর থাকবে, তাই দায়িত্বে থেকেই আমি শিক্ষার্থীদের পক্ষে কাজ করতে চাই।

দায়িত্ব নেওয়ার পরে গৃহীত কর্মসূচি এবং আগামীর পরিকল্পনা সম্পর্কে নুর বলেন, নির্বাচনে অংশ নেওয়া ছাত্রসংগঠনগুলোর সাধারণ দাবি নিয়ে এখন কাজ করছি। এর মধ্যে প্রধান দাবি হলো শিক্ষার্থীদের আবাসন সংকট নিরসন। বিশ্ববিদ্যালয়ের হলগুলোতে অছাত্র এবং বিশেষ করে বহিরাগত আছে, তাদের হল থেকে বের করে শিক্ষার্থীদের জায়গা করে দেওয়ার কাজটি আমরা করছি। কিছুদিন আগে এসএম হলে আমরা ভিপি, জিএসসহ অন্যদের নিয়ে বহিরাগতদের বের করতে অভিযান চালিয়েছি। প্রশাসনকেও বলেছি, তারা যেন হলগুলোর একটি ডাটাবেজ তৈরি করে, যেখানে শিক্ষার্থীরা কে কোন সিটে থাকছে সেই তথ্য থাকবে। শিক্ষার্থীদের চলাচলের সুবিধার জন্য ২৫০টি রিকশা নির্ধারণ করার ব্যাপারে আলোচনা হয়েছে। ভাড়া নির্ধারণের জন্য একটি সংগঠনের সঙ্গে সমন্বয় করা হচ্ছে। এ ছাড়াও শিক্ষার্থীদের দাবি ছিল প্রত্যেক হলে একজন করে মেডিকেল অফিসার যেন থাকে, সেটির বিষয়ে কাজ হচ্ছে। শিক্ষার্থীদের স্যানিটেশন, সুপেয় পানির ব্যবস্থা, সার্বক্ষণিক ইন্টারনেট সুবিধা, ক্যাম্পাস পরিচ্ছন্ন রাখার কাজগুলো করার চেষ্টা করছি।

হল থেকে গণরুম ও গেস্টরুম অপসারণের বিষয়ে তিনি বলেন, এটি অনেকদিন ধরেই চলে আসছে। হঠাৎ করেই হয়তো গণরুমে একটা অংশের শিক্ষার্থীর জন্য সিটের ব্যবস্থা করা যাবে না। তাই হলে থাকা বহিরাগতদের সরিয়ে দিয়ে তাদের সিটে অন্য শিক্ষার্থীদের থাকার ব্যবস্থা করা যেতে পারে। সেক্ষেত্রে দুজনের সিটে চারজন এবং চারজনের সিটে ছয়জনের ব্যবস্থাও করা যেতে পারে। ছাত্রলীগ প্যানেল থেকে নির্বাচিত ডাকসু নেতাদের সঙ্গে সমন্বয়ে কোনো সমস্যা হচ্ছে কিনা জানতে চাইলে নুরুল হক নুর বলেন, কিছু কিছু জায়গায় তাদের সঙ্গে সমন্বয়হীনতা আছে। ছাত্রলীগেরও দাবি ছিল হল থেকে গণরুম ও গেস্টরুম দূর করা। কিন্তু গত ১০ বছরে তারাই এটাকে লালন পালন করে আসছে।

তাই তারা এ বিষয়ে আন্তরিক সহযোগিতা করবে কিনা, সন্দেহ আছে। এ ছাড়াও তারা সংখ্যাগরিষ্ঠ হওয়ায় ডাকসুর বৈঠকে আলোচনা ছাড়াই কোনো কোনো কাজ করার চেষ্টা করছেন। কিছুদিন আগে ডাকসুর লোক নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি এবং আইএমএলে ফি কমানোর দরখাস্ত আমার সংশ্লিষ্টতা ছাড়াই তারা করেছে। এগুলো ডাকসুর সিদ্ধান্ত নয়, ব্যক্তিবিশেষের। স্বাধীনভাবে সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে কোনো প্রতিবন্ধকতা আছে কিনা জানতে চাইলে নুর বলেন, আমাকে বাধা দেওয়ার কোনো কিছু নেই। একমাত্র উপাচার্য চাইলে আমার সিদ্ধান্তের বিষয়ে বিবেচনা করতে পারেন। তবে গৃহীত সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতা আছে। নব্বই দশকের পর থেকে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে এক ধরনের লেজুড়ভিত্তিক রাজনীতির ধারা চলে আসছে।  ক্ষমতাসীনরা এই রাজনীতিকে তাদের স্বার্থে ব্যবহার করে আসছে। এই জায়গা থেকে বেরিয়ে আসতে আমাদের কাজ করতে হবে। শিক্ষার্থীরা চাইলে এটা সম্ভব।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
এমপিও কোড পেলো আরো ১৪ স্কুল-কলেজ - dainik shiksha এমপিও কোড পেলো আরো ১৪ স্কুল-কলেজ নারীদের আইসিটিতে দক্ষ হতে হবে: শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী - dainik shiksha নারীদের আইসিটিতে দক্ষ হতে হবে: শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী হিটস্ট্রোকে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র তূর্যের মৃত্যু - dainik shiksha হিটস্ট্রোকে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র তূর্যের মৃত্যু পরীক্ষার নাম এসএসসিই থাকবে, ওয়েটেজ ৫০ শতাংশ - dainik shiksha পরীক্ষার নাম এসএসসিই থাকবে, ওয়েটেজ ৫০ শতাংশ ফরেনসিক অডিটে ফাঁসছেন দশ হাজার জাল সনদধারী - dainik shiksha ফরেনসিক অডিটে ফাঁসছেন দশ হাজার জাল সনদধারী কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা সহায়তা ট্রাস্টের পিএইচডি ফেলোশিপ - dainik shiksha প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা সহায়তা ট্রাস্টের পিএইচডি ফেলোশিপ সাংবাদিকদের ঘুষ বিষয়ক ভাইরাল ভিডিও, ইরাব কোনো বিবৃতি দেয়নি - dainik shiksha সাংবাদিকদের ঘুষ বিষয়ক ভাইরাল ভিডিও, ইরাব কোনো বিবৃতি দেয়নি জড়িত মনে হলে চেয়ারম্যানও গ্রেফতার: ডিবির হারুন - dainik shiksha জড়িত মনে হলে চেয়ারম্যানও গ্রেফতার: ডিবির হারুন সপ্তম শ্রেণিতে শরীফার গল্প থাকছে, বিতর্কের কিছু পায়নি বিশেষজ্ঞরা - dainik shiksha সপ্তম শ্রেণিতে শরীফার গল্প থাকছে, বিতর্কের কিছু পায়নি বিশেষজ্ঞরা please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0030109882354736