সরকার থেকে দাবি মেনে নেয়ার ঘোষণা দেয়ার পরও আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের রাজপথে অবস্থান নিয়ে গভীর উদ্বেগ ও শঙ্কা প্রকাশ করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি। বর্তমান পরিস্থিতিতে ঘোষিত রোডম্যাপ দ্রুত বাস্তবায়ন করে সড়ক ও পরিবহন খাতের অরাজকতা দুর করার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে সমিতি। শনিবার (৪ আগস্ট) রাতে দৈনিকশিক্ষা ডটকমে পাঠানো বিবৃতিতে এ আহবান জানানো হয়।
আন্দোলনরত কোমলমতি শিক্ষার্থীদের প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানিয়ে ঢাকা বিশ^বিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল এবং সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াতুল ইসলাম স্বাক্ষরিত বিবৃতিতে বলা হয়, তোমরা আমাদের সন্তানতুল্য, তোমরা পুরো দেশকে নতুন পথ দেখিয়েছো, চোখে আঙুল দিয়ে ভুল-ভ্রান্তিগুলো ধরিয়ে দিয়েছো। তোমাদের এই প্রত্যুৎপন্নমতি কার্যক্রম পুরো পরিবহন ব্যবস্থা, প্রশাসন ও সরকারের টনক নাড়িয়ে দিয়েছে।
প্রিয় শিক্ষার্থীরা, ইতোমধ্যে তোমরা বিজয়ী এবং ইতিহাসের অংশ হয়েছো। তোমাদের আন্দোলনের মুখে সরকার সর্বোচ্চ শাস্তির বিধার রেখে আইন প্রণয়নের দিকে অগ্রসর হচ্ছে। তোমাদের প্রতি আমাদের আহ্বান, তোমরা জাতিকে যে পথ দেখিয়েছো তোমাদের সে আন্দোলনের সৌন্দর্য যেন নষ্ট না হয়। তোমাদের এ আন্দোলনকে স্বাধীনতা ও রাষ্ট্রবিরোধী কোনো শক্তি যেন কলুষিত করতে না পারে সেদিকে খেয়াল রাখা জরুরি। তাই তোমরা ঘরে ও শ্রেণিকক্ষে ফিরে যাও।
অভিভাবক ও সংশ্লিষ্ট শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের প্রতি আমাদের আহ্বান, আপনাদের সন্তানকে ঘরে ও শ্রেণিকক্ষে ফিরে যেতে বলুন। জাতির আগামী দিনের ভবিষ্যত এই শিক্ষার্থীরা যেন কোনো ষড়যন্ত্রের শিকার না হয় সেদিকে খেয়াল রাখুন।
বিবৃতিতে আরো বলা হয়,সরকার ৯ দফা দাবি পূরণের সুনির্দিষ্ট রোডম্যাপও ঘোষণা করেছে। এমন পরিস্থিতিতে দেশবাসী আশা করেছিল, কোমলমতি শিক্ষার্থীরা নিজ নিজ ঘরে ও শ্রেণিকক্ষে ফিরে যাবে। কিন্তু আমরা লক্ষ করছি, সাত দিন অতিবাহিত হলেও শিক্ষার্থীরা আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে। এ অবস্থায় একদিকে শিক্ষার্থীদের রাজপথ দখল করে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়া এবং অন্যদিকে পরিবহন শ্রমিক-মালিকদের ‘অঘোষিত’ ধর্মঘটের কারণে জনদুর্ভোগ চরম আকার ধারণ করেছে। ফলে রাজধানীর অভ্যন্তরে ও রাজধানীর সাথে বাইরের যোগাযোগব্যবস্থা অচল হয়ে পড়ছে। ফলে সাধারণ মানুষ, বিশেষ করে অর্থনৈতিকভাবে চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি মানুষের জীবন দুর্বিষহ হয়ে উঠছে।
দেশের পরিবহন মালিক-শ্রমিকদের প্রতি আমাদের আহ্বান, বিনা নোটিশে অলিখিত ধর্মঘটের মাধ্যমে দেশের সাধারণ মানুষকে জিম্মি করবেন না; দেশের মানুষের দুর্ভোগ বাড়াবেন না।