সাদিয়া সালসাবিল বৃষ্টি (ছদ্মনাম)। কলেজে শিক্ষকতা করেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পরিচয় হয় মোহাম্মাদ হোসাইন শিবলুর সঙ্গে। পরিচয় থেকে ভালো লাগা। এরপর তা রূপ নেয় ভালোবাসায়। এরই মধ্যে দুজন দেখাও করেন। শিবলু অবিবাহিত জানালে প্রেম গভীর হয়। দুজনের অন্তরঙ্গ মুহূর্তের ছবি গোপনে ধারণ করেন শিবলু। শিবলুর আগে বিয়ে আছে বিষয়টি জানার পর সম্পর্কের ইতি টানেন কলেজশিক্ষিকা বৃষ্টি।
তবে শিবলু পিছু ছাড়েননি বৃষ্টির। ওই ছবি দেখিয়ে ব্ল্যাকমেইল করতে থাকেন তিনি। দীর্ঘ চার বছর এমন নিপীড়ন সহ্য করে শেষে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) দ্বারস্থ হন শিক্ষিকা। অবশেষে ডিবির জালে ধরা পড়েছেন অভিযুক্ত শিবলু। রবিবার কুমিল্লার সদর থানা এলাকা থেকে শিবলুকে গ্রেফতার করেছেন ডিবির সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম বিভাগের ওয়েব বেইজড ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন টিমের সদস্যরা।
ডিবি জানায়, কলেজশিক্ষিকা বৃষ্টির সঙ্গে বছর পাঁচেক আগে প্রেমের সম্পর্ক হয় শিবলুর। শিবলুর বারবার অনুরোধে তার সঙ্গে দেখা করেন বৃষ্টি। এরপর কয়েকবার ঘোরাঘুরি করেন একসঙ্গে। প্রেমের শুরুতে শিবলু নিজেকে অবিবাহিত বলে বৃষ্টির কাছে পরিচয় দেন। এ সময় বৃষ্টি তার কিছু ব্যক্তিগত ছবি হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে শিবলুকে পাঠান। এ ছাড়া তাদের ঘনিষ্ঠ মেলামেশার ছবিও গোপনে ধারণ করেন শিবলু। একপর্যায়ে বৃষ্টি জানতে পারেন, শিবলু বিবাহিত এবং তার সন্তান রয়েছে। এ খবর জানার পর এক বছরের সম্পর্কের ইতি টানেন বৃষ্টি। তবে বিষয়টি সহজভাবে নেননি শিবলু। বৃষ্টির ফেসবুক মেসেঞ্জার এবং হোয়াটসঅ্যাপে নিয়মিত হয়রানি করতে থাকেন তিনি। শিবলু বলতে থাকেন, তার সঙ্গে সম্পর্ক না রাখলে এসব ছবি তার পরিবারের সদস্য ও বন্ধুদের কাছে পাঠানো হবে। এতেও বৃষ্টি সাড়া না দিলে ক্ষিপ্ত হয়ে তার ভাবিসহ পরিবারের অন্য সদস্যদের কাছে ছবিগুলো পাঠাতে থাকেন শিবলু।
এভাবেই দীর্ঘ চার বছর ধরে শিবলুর ‘সাইবার নিপীড়ন’ সহ্য করে আসছিলেন বৃষ্টি।
অভিযানে নেতৃত্ব দেওয়া ডিবির এডিসি আশরাফউল্লাহ জানান, ১৫ আগস্ট রাজধানীর রমনা মডেল থানায় শিবলুকে আসামি করে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করেন কলেজশিক্ষিকা বৃষ্টি। গ্রেফতারের সময় শিবলুর কাছ থেকে মোবাইল ফোন ও ল্যাপটপ জব্দ করা হয়। আসামি শিবলু ভিকটিমের কর্মস্থলের সহকর্মীসহ অভিভাবকদের কাছে আপত্তিকর ছবি ছড়িয়ে দিতেন। শিবলু দীর্ঘদিন ধরে এই অপরাধ করে আসছিলেন।