যুক্তরাষ্ট্রের নিউ মেক্সিকোতে লোকালয় থেকে বহুদূরে মরুভূমির মাঝে একটি গোপন ক্যাম্প থেকে অপুষ্টির শিকার ১১ শিশু-কিশোরকে উদ্ধার করেছে পুলিশ। তাদেরকে যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন স্কুলে হামলা চালানোর প্রশিক্ষণ দেয়ার জন্য আটকে রাখা হয়েছিল বলে জানানো হয়েছে।
ঘটনাস্থল থেকে সিরাজ ইবনে ওয়াহ্হাজ ও লুকাস মর্টন নামের দুই সশস্ত্র ব্যক্তিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাদের সাথে আরও তিন নারীকেও গ্রেফতার করেছে পুলিশ। মাত্র এক বছর থেকে পনেরো বছর বয়সী ছেলেমেয়েগুলোর কয়েকজনকে সিরাজ অস্ত্র চালনার প্রশিক্ষণ দেয়া শুরুও করেছিলেন।
উদ্ধার হওয়া বাচ্চাদের একজনের অভিভাবক গণমাধ্যমকে জানান, সিরাজ ভবিষ্যতে স্কুলে হামলা চালানোর উদ্দেশ্যে তার সন্তানকে অ্যাসল্ট রাইফেল চালানো শেখাচ্ছিলেন।
গত শুক্রবার চালানো অভিযানের তথ্য বুধবার গণমাধ্যমের কাছে প্রকাশ করে পুলিশ। জানায়, ঘটনাস্থল তল্লাশি করে সোমবার একটি শিশুর দেহাবশেষ পাওয়া গেছে।
দেহাবশেষটি সিরাজেরই তিন বছর বয়সী ছেলে আবদুল্লা-গনি ওয়াহ্হাজের বলে পুলিশের বরাতে জানিয়েছে টাওস নিউজ। গত বছরের ডিসেম্বরে সিরাজের বিরুদ্ধে তাকে জর্জিয়ার বাসা থেকে তুলে নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ করেন আবদুল্লার মা।
থানায় মিসিং পারসন অভিযোগ দায়েরের সময়ই সিরাজকে সন্দেহভাজন হিসেবে উল্লেখ করেন তিনি। ওই অভিযোগের ভিত্তিতে আবদুল্লাকে খুঁজতে পুলিশের চালানোর অভিযানেই সিরাজসহ ৫ জন গ্রেফতার, ১১ শিশু উদ্ধার ও আবদুল্লার মৃতদেহ পাওয়ার ঘটনা ঘটে।
অভিযোগে বিশেষভাবে বলা হয়েছিল, আবদুল্লার খিঁচুনির সমস্যা আছে। কিন্তু সিরাজের বিশ্বাস, কোনো রোগ নয়, আবদুল্লার ওপর কিছু ভর করেছে এবং ঝাড়ফুঁক করালেই একমাত্র সে সুস্থ হবে। গ্রেফতারের পর আদালতে জমা দেয়া মামলার নথিতে এ কথা জানানো হয়েছে।
বুধবার আদালতে প্রথম মামলার নথিপত্র দাখিল করেন রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী টিমোথি হ্যাসন। তিনি আদালতে আবেদন জানিয়েছেন যেন সিরাজকে জামিন না দিয়ে পুলিশি হেফাজতে রাখা হয়। অভিযোগ নিয়ে বিস্তারিত কিছু আপাতত বলতে রাজি হননি তিনি।
মামলার নথিতে হ্যাসন বলেন, ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার হওয়া বাচ্চাদের জন্য সিরাজ খুবই বিপজ্জনক। একই সঙ্গে পুরো জনগোষ্ঠীর জন্যই সার্বিকভাবে তিনি ঝুঁকিপূর্ণ। কারণ তিনি আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহার করেছেন এবং যে কোনো সময় সহিংসতা ও অবৈধ উদ্দেশ্যে তিনি অস্ত্র ব্যবহারের ইচ্ছা রাখেন।
সিএনএন জানায়, দাখিল করা নথিতে আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে, সিরাজকে জামিনে ছাড়লে তিনি স্কুলে বন্দুক হামলার বিষয়ে আগের পরিকল্পনা ও প্রস্তুতিকে কাজে লাগিয়ে যে কোনো অপরাধ ঘটাতে পারেন। গ্রেফতার পাঁচজনের বিরুদ্ধে শিশু নিপীড়নের অভিযোগ আনা হয়েছে।
সূত্র : বিবিসি