জাতিরজনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে নিয়ে নানা ধরণের অপপ্রচার ও কটূক্তি করায় গত কয়েক বছরে একাধিক মামলা হয় একজন বিতর্কিত ও ভবঘুরে ব্যক্তির বিরুদ্ধে। ২০১৪ খ্রিষ্টাব্দে আগুন সন্ত্রাসসহ তার বিরুদ্ধে মামলার সংখ্যা এক ডজনেরও বেশি। কটূক্তি ও অপপ্রচারের অভিযোগে করা দুটি মামলাতেই পুলিশ তাকে গ্রেফতার করেছিল। বর্তমানে তিনি জামিনে রয়েছেন। মামলাগুলো চলমান। এছাড়াও নানা ধরনের প্রতারণা, ভর্তিবাণিজ্য ও কোচিং সেন্টার থেকে চাাঁদাবাজি এবং নিজ সন্তানদের কোচিং সেন্টারে ফাউ পড়ানোর অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। জামিনে থাকা সেই ভবঘুরের সাথে শিক্ষাখাতের একজন মহাপরিচালককে দেখা গেছে একটি বেসরকারি টেলিভিশনের টকশোতে। ২১ জুলাই রাতে অনুষ্ঠিত টকশোতে সেই ভবঘুরেকে দেখা গেছে শিক্ষকদের বিরুদ্ধে উসকানিমূলক কথা বলতে। মহাপরিচালকের সাথে ওই প্রতারককে টকশোতে দেখে ক্ষুব্ধ হয়েছেন শিক্ষকরা।
তারা বলেছেন, মহাপরিচালকের উচিত ছিল ওই প্রতারকের সাঙ্গে এক টকশোতে অংশ না নেয়া। কয়েকজন শিক্ষক দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেছেন, এই মহাপরিচালক বিগত বিএনপি-জামাত আমলে কোটায় পদোন্নতি ও ব্যাপক সুযোগ-সুবিধা নিয়ে সৌদি আরবে লিয়েনে ছিলেন কয়েকবছর। আবার আওয়ামী সরকার আমলে দেশে ফিরে এসে তার একজন আওয়ামী লীগপন্থী নিকটাত্মীয়কে দিয়ে তদবির করে বড় পদ বাগিয়েছেন। এই মহাপরিচালকের কর্মকাণ্ডে ক্ষুব্ধ হয়ে গতবছর আগস্টে ছাত্রলীগ ও যুবলীগের নেতারা মিছিল করেছিলেন তার দপ্তরে।
জানা যায়, টকশোতে অংশ নেয়া ভবঘুরেটির বিরুদ্ধে দায়ের করা সর্বশেষ মামলাটি করেছেন মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের একজন সহকারী প্রধান শিক্ষক। ওই ভবঘুরে ব্যক্তি কথিত অভিভাবক পরিচয়ে স্কুলটিতে ছাত্রীদের ওড়না নিষিদ্ধকরণের ভুয়া খবর প্রচার করেছেন ও শেখ হাসিনাকে কটূক্তি করেছেন। এছাড়াও অনেক অভিযোগ রয়েছে। তার আগের মামলাটি করেছেন ছাত্রলীগের একজন সাবেক নেতা। সেই মামলার এজাহারে বলা হয়েছে জাতির জনকের বিরুদ্ধে নানা অপপ্রচার করেছেন তিনি।
এই ভবঘুরের বিরুদ্ধে প্রতারণা করার ও বিধান ভঙ্গের অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় ২০০৭ খ্রিষ্টাব্দে তার ফোরামের নিবন্ধন বাতিল করে দেয় সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়। ভাড়া করা লোক দিয়ে অভিভাবকদের ব্যনারে মানবন্ধন করে থাকেন এই প্রতারক।
অনুসন্ধানে জানা যায়, চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসের প্রথম সপ্তাহে অনুষ্ঠিত পুষ্টি বিষয়ক সম্মেলনে যোগ দিতে বিদেশে যেতে চেয়েছিলেন সেই মহাপরিচালক। নিয়মানুযায়ী তার ফাইলটি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে পাঠায় মন্ত্রণালয়। বিগত বছরে কতবার কোন কোন দেশ সফর করেছিলেন তারও একটা তালিকা সংযুক্ত করা ছিল। ওই ফাইলে কড়া মন্তব্য লেখেন শেখ হাসিনা। তিনি লেখেন, ‘১২ মাসে ৬ বার বিদেশ সফর করলে কাজ সমাপ্ত হবে কীভাবে?’
শিক্ষাখাতের সাহেদ-সাবরিানা-আজাদদের হটানোর দাবি উঠেছে শিক্ষকদের মধ্য থেকে।
২১ জুলাই রাতেও ওই টকশোতে উপস্থিত ছিলেন একজন কারিগরি শিক্ষক নেতা। যিনি ছাত্রজীবনে ঢাকার বাইরের একটি সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ছিলেন। তখন আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের দুর্দিন ছিল।