উচ্চশিক্ষার লক্ষ্যে এশিয়ার দেশগুলোর ধনীদের পশ্চিমা দেশগুলোতে পাড়ি জমানো একটা স্বাভাবিক প্রবণতা। নিজ দেশের শিক্ষার পরিবেশ ও মান ভালো না- এই দোহাই দিয়ে ছেলেমেয়েদের ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করার জন্য কোটি কোটি টাকা খরচ করে ইউরোপ-আমেরিকায় পাঠান ধনী বাবা-মায়েরা। তবে সেটা ছেলেমেয়েরা একটি নির্দিষ্ট বয়স পার হওয়ার পরই পাঠানো হতো। সেই ব্রিটিশ আমল থেকে দশকের পর দশক ধরে এ ধারা চলে আসছে। কিন্তু বর্তমানে শৈশবেই ছেলেমেয়েদের বিদেশে পাঠিয়ে দিচ্ছেন অভিভাবকরা। কখনও কখনও সেটা ১০-১২ বছর বয়সেই। ইচ্ছা না থাকলেও বাবা-মায়ের কথায় তারাও যেতে বাধ্য হচ্ছে। এসব অভিভাবকের তালিকায় ভারত, পাকিস্তান, বাংলাদেশ, মিয়ানমার, থাইল্যান্ড, তাইওয়ান প্রভৃতি দেশের ধনীরা থাকলেও বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ চীন অনেকটাই এগিয়ে রয়েছে। শনিবার মার্কিন সংবাদমাধ্যম ব্ল–মবার্গের এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে।
এশিয়ার দেশগুলোতে দ্রুত হারে বাড়ছে ধনী ব্যক্তির সংখ্যা। এদের বেশিরভাগই তাদের ছেলেমেয়েদের বিদেশে পড়াশোনা করাতে চায়। কিছু অভিভাবক ছেলেমেয়েদের শৈশবেই শুরু করে দিচ্ছেন সেই প্রতিযোগিতার ‘ইঁদুর দৌড়’। আর এ সংখ্যা হু হু করে বাড়ছে। সেখানে তারা বিভিন্ন ‘জুনিয়র আবাসিক স্কুলগুলো’তে ভর্তি হচ্ছে। এসব স্কুলে একজন ছাত্র বা ছাত্রীর বছরে ৭৪ হাজার ডলার বা প্রায় ৬০ লাখ টাকা খরচ হয়। বড় বড় বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ভর্তির সুযোগ পেতে অনেকটাই সহায়ক এসব জুনিয়র স্কুল।
তাইওয়ানের ছেলে ফিলিপ সুই। মাত্র ১২ বছর বয়সেই তাকে প্রায় ৭ হাজার মাইল দূরে যুক্তরাষ্ট্রে পাঠিয়ে দেন। সেখানে ম্যাসাচুসেটস পাহাড়ি এলাকার একটি মাধ্যমিক স্কুলে ভর্তি হয় সে। বর্তমানে ২৩ বছর বয়সী সুই নিজের অভিজ্ঞতার কথা জানিয়ে বলেন, ‘সেটা ছিল এক ভয়াবহ ব্যাপার। এটা কাউকে মৃত্যুদণ্ড দেয়ার মতো ব্যাপার। ওখানে যাওয়ার পর আমি শুধু দিন গুণতাম, কবে বাড়ি যাব।’
ছেলেমেয়ের সঙ্গে সঙ্গে অনেক সময় বাবা-মাও পাড়ি জমান সংশ্লিষ্ট দেশটিতে। ব্যাংক অব চায়না ও হুরুন রিসার্চ ইন্সটিটিউটের যৌথ উদ্যোগে ৪০ পৃষ্ঠার ওই গবেষণা প্রতিবেদনে দেখা গেছে, চীনের ১৮টি শহরের ১৪ শতাংশ মিলিয়নিয়ার বিদেশে অভিবাসী হওয়ার জন্য এরই মধ্যে আবেদন করেছেন কিংবা তাদের আবেদনের প্রক্রিয়া চলছে।