সরকারি নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও শ্রীনগরে চলছে রমরমা কোচিং বাণিজ্য। কোচিং বাণিজ্য বন্ধ করার জন্য সরকার আইন করে নির্দেশ দেওয়ার পরও শ্রীনগরের কোচিং সেন্টারগুলো এখনো বহাল তবিয়তে থেকে বাণিজ্য করে যাচ্ছে। এর মধ্যে উপজেলার সরকারি স্কুল-কলেজ ও এমপিওভুক্ত বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকরা বাসা ভাড়া নিয়ে নামে-বেনামে চালাচ্ছেন এই কোচিং বাণিজ্য। আর সেখানেই সকাল, দুপুর ও বিকালে চলছে শিক্ষকদের প্রাইভেট পাঠদান।
সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, উপজেলা সদরেই রয়েছে অন্তত অর্ধশতাধিক কোচিং সেন্টার। মান্নান ম্যানশনের পাশে, গার্লস স্কুলের পিছনে, শ্রীনগর রথখোলা, ষোলঘর টমা মেডিক্যালের পাশে, মণ্ডলপাড়াসহ বিভিন্ন স্থানে শিক্ষকরা গড়ে তুলেছে তাদের কোচিং বাণিজ্য কেন্দ্র। এসব কোচিং সেন্টারের মধ্যে রয়েছে অগ্রপথিক কোচিং সেন্টার, ইউএস কোচিং সেন্টার, শ্রাবণ স্যার কোচিং সেন্টার, এফএলআই কোচিং সেন্টার, স্ট্যাডি কোচিং সেন্টার, চিরঞ্জিত্ কোচিং সেন্টার, সুব্রত কোচিং সেন্টার ইত্যাদি। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, উপজেলার প্রায় সব বিদ্যালয়ের কোনো না কোনো শিক্ষক কোচিং বাণিজ্যের সাথে জড়িত রয়েছেন।
বেশিরভাগ ক্ষেত্রে ছোট্ট একটি ঘরে ১ ঘন্টার কোচিংয়ে ২০ থেকে ৪০ জন শিক্ষার্থীকে একত্রে পড়ানো হচ্ছে। শিক্ষার পরিবেশ সেখানে নেই বললেই চলে। দায়সারা গোছের পাঠদান হচ্ছে। কয়েকজন শিক্ষার্থীর সাথে কথা বলে জানা যায়, ১ ঘন্টা করে মাসে ১২ দিন তাদের পড়ানো হয়। কোচিং ফি বাবদ মাসে ৫শ থেকে ১৫শ টাকা করে দিতে হচ্ছে তাদের। কেন কোচিং করছো, জিজ্ঞাসা করলে শিক্ষার্থীরা বলে, ‘কি করবো কোচিংয়ে না পরলে পরীক্ষায় পাস করবো কিভাবে। ক্লাসে তো আর সব কিছু শেখানো হয় না।’ নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন অভিভাবক বলেন, ক্লাসে তো আর সব পড়ানো হয় না। বাধ্য হয়েই ছেলে-মেয়েদের কোচিংয়ে পড়তে দিতে হচ্ছে। এমনও শিক্ষক রয়েছে যার কাছে প্রাইভেট না পড়লে পরীক্ষায় ভালো নম্বর পাওয়া যায় না।
একাধিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের কাছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তারা কোচিং পড়ানোর বিষয়টি স্বীকার করতেই রাজি হননি। তবে অনেকে বলেন, আমাদের অজান্তে কিছু কিছুু শিক্ষক তাদের বাসা-বাড়িতে গোপনে প্রাইভেট পড়িয়ে থাকেন। এ ব্যাপারে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মোঃ মিরাজুল ইসলাম বলেন, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে আলাপ করে কোচিংয়ের বিষয়ে ব্যবস্থা নেয়া হবে।