কুড়িগ্রামের চিলমারীতে মজিদেরপাড় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শ্রেণিকক্ষ সংকটে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের পাঠদান ব্যাহত হচ্ছে। স্কুলের বারান্দায় চলছে পাঠদান কার্যক্রম। এতে শিক্ষার্থীরা চরম ভোগান্তিতে পড়লেও বিষয়টি জানেন না উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা।
বিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, ১৯৮৯ খ্রিস্টাব্দে বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠিত হয়ে বে-সরকারি রেজিঃ প্রাথমিক বিদ্যালয় হিসাবে শিক্ষা কার্যক্রম চালায়। পরবর্তীতে এটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পরিনণত হয়। বর্তমানে বিদ্যালয়টিতে প্রায় দেড় শতাধিক শিক্ষার্থী রয়েছে। ১৯৯৭ খ্রিস্টাব্দে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতর (এলজিইডি) এখানে তিন কক্ষের একটি ভবন নির্মাণ করে। ভবনটিতে মাত্র ৩টি কক্ষ থাকায় সিড়ির নিচে অফিস করে কোনো রকমে প্রধান শিক্ষকসহ পাঁচজন শিক্ষক তাদের দাফতরিক কার্যক্রম পরিচালনা করেন। সকালের শিফটে তিনটি কক্ষে ১ম, ২য় ও ৩য় শ্রেণির শিক্ষার্থীদের পাঠদান এবং বিকেল শিফটে ৩য়, ৪র্থ ও ৫ম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের পাঠদান কার্যক্রম চলায় শ্রেণিকক্ষের অভাবে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ শিশু শ্রেণির পাঠদান করান স্কুলের বারান্দায়।
সরেজমিনে দেখা যায়, বিদ্যালয়টির শিশু শ্রেণির কোমলমতি শিক্ষার্থীরা বারান্দায় ঠান্ডা মেঝেতে বসে ক্লাস করছে। ওই শ্রেণিতে ২৫ জন শিক্ষার্থীকে নিয়ে তাল মিলিয়ে কবিতা পড়াচ্ছেন সহকারী শিক্ষক রিনা।
তিনি বলেন, গরমের মধ্যে বারান্দায় ক্লাস করতে তেমন কষ্ট না হলেও শীতের সময় মেঝেতে বসে ক্লাস করতে শিশু শিক্ষার্থীরা বেশ কষ্ট পায়। বিদ্যালয়ে বিদ্যমান তিনটি শ্রেণিকক্ষে পর্যাপ্ত বেঞ্চ নেই। ভাঙাচোরা কয়েকটি বেঞ্চ নিয়ে কোনো রকমে পাঠদান চালানো হচ্ছে।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবদুল গফ্ফার বলেন, এ বছরই আমি বদলি হয়ে এই বিদ্যালয়ে এসেছি। স্কুলে শ্রেণিকক্ষ সংকটের কারণে শিশু শ্রেণির ক্লাস বারান্দায় নিতে হচ্ছে। শ্রেণিকক্ষ সংকটের কথা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হলেও তারা কোনো পদক্ষেপ নেয়নি।
বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি আব্দুল আজিজ বলেন, শ্রেণিকক্ষের অভাবে কোমলমতি শিশুদের পাঠদান করা হচ্ছে বারান্দায়। অতি দ্রুত মজিদেরপাড় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অবকাঠামো উন্নয়ন ও শিক্ষার্থীদের বসার জন্য পর্যাপ্ত আসনের ব্যবস্থাসহ শিশুদের পাঠদানের উপযুক্ত পরিবেশ সৃষ্টির জন্য কর্তৃপক্ষের সহযোগিতা কামনা করেন তিনি।
এই বিষয়ে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা নজরুল ইসলাম জানান, মজিদেরপাড় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিশু শ্রেণির পাঠদান বারান্দায় হয় বিষয়টি আমার জানা নেই। খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।