শ্রেণিকক্ষের অভাবে খোলা আকাশের নিচে দেড়শ’ শিক্ষার্থী

নিজস্ব প্রতিবেদক |

রাজশাহীর বাঘা উপজেলার পদ্মার মধ্যে চকরাজাপুর ইউনিয়নের চৌমাদিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শ্রেণিকক্ষের অভাবে খোলা আকাশের নিচে চলছে কোমলমতি শিশুদের পাঠদান কার্যক্রম।

গত ২৯ মার্চ ঝড়ে স্কুল ভেঙে যাওয়ার পর থেকে ১৪১ শিক্ষার্থী খোলা আকাশে নিচে লেখাপড়া করছে। তবে স্কুলের পক্ষ থেকে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে লিখিতভাবে আবেদন করার পর চার বান্ডিল টিন ও ৫০ হাজার টাকা অনুদান বরাদ্দ প্রদান করা হয়েছে। কিন্তু এ অনুদানের টিন ও টাকা এখন পর্যন্ত স্কুল কর্তৃপক্ষের হাতে না পৌঁছায় তিন সপ্তাহ ধরে খোলা আকাশে নিচে তারা ক্লাস করছে।

সোমবার থেকে প্রথম সাময়িক পরীক্ষা শুরু হয়েছে। খোলা আকাশের নিচে বসে তারা পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করছে।

সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, স্কুলটি ঝড়ে ভেঙে যাওয়ার পর থেকে বাইরে মাঠে খোলা আকাশের নিচে রোদের মধ্যে শিক্ষার্থীদের পাঠদান কার্যক্রম চলছে।

স্কুলে এক শিক্ষার্থীর অভিভাবক সোলেমান আলী জানান, স্কুল কক্ষ ঝড়ে ভেঙে যাওয়ার পর থেকে কোমলমতি শিক্ষার্থীরা চরম রোদের মধ্যে ক্লাস করছে। তাই আমরা অভিভাবকরা ছোট ছোট কোমলমতি ছেলেমেয়েদের বিদ্যালয়ে পাঠিয়ে মারাত্মক উৎকণ্ঠায় আছি।

স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক সোহেল রানা জানান, ২৮ মার্চ স্কুল করে বাড়ি চলে আসি। পরের দিন স্কুলে গিয়ে দেখি ঝড়ে সব ঘর ভেঙে পড়ে আছে। কোনো উপায় না পেয়ে খোলা আকাশের নিচে ১৪১ শিক্ষার্থীর ক্লাস নিচ্ছি। তবে এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে লিখিত আবেদন করা হয়েছে। মঙ্গলবার থেকে প্রথম সাময়িক পরীক্ষা শুরু হয়েছে।

বাধ্য হয়ে খোলা আকাশের নিচে পরীক্ষা নিতে হচ্ছে। স্কুলটি ১৯৫৫ সালে চৌমাদিয়া চরের সিরাজ মণ্ডল ও ভানু বেপারি স্থাপন করেন। স্কুলটি নদীভাঙনের কারণে চারবার স্থানান্তর করা হয়। এর মধ্যে চৌমাদিয়ায় চরে ১৭ বছর, তেমাদিয়ায় ১২ বছর, দিয়ারকাদিপুরে ২৫ বছর, টিকটিকিপাড়ায় ১০ বছর ধরে পরিচালিত হয়ে আসছে।

চকরাজাপুর ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য আবদুর রহমান বলেন, বারবার স্কুলটি পদ্মা নদীতে ভেঙে যাওয়ায় ২০১৭ সালে এলাকার লোকজনকে সঙ্গে নিয়ে স্বেচ্ছাশ্রমে নির্মাণ করা হয়। কিন্তু সম্পূর্ণ এবার ঝড়ে ভেঙে গেছে। সরকারি যে অনুদান দেয়া হয়েছে, তাতে কিছুই করা সম্ভব হবে না। আমরা নিরুপায় হয়ে পড়েছি শিক্ষার্থীদের নিয়ে।

চৌমাদিয়া চরের সৌরভজান বলেন, আমার নাতি বৈশাখী খাতুন চতুর্থ শ্রেণিতে পড়ে। রোদের মধ্যে বসে ক্লাস করতে যেতে চাচ্ছে না। তার পরও তাদের পরীক্ষা শুরু হয়েছে। তারা এ রোদের মধ্যে বসে পরীক্ষা দিচ্ছে।

এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাহিন রেজা জানান, স্কুলের পক্ষ থেকে আবেদন করার পর ৪ বান্ডিল টিন ও ৫০ হাজার টাকা অনুদান বরাদ্দ দেয়া হয়েছে।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
প্রাথমিকের শিক্ষকদের ফের অনলাইনে বদলির সুযোগ - dainik shiksha প্রাথমিকের শিক্ষকদের ফের অনলাইনে বদলির সুযোগ তীব্র তাপপ্রবাহের ভেতরই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলছে রোববার - dainik shiksha তীব্র তাপপ্রবাহের ভেতরই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলছে রোববার দেশে তিন দিনের হিট অ্যালার্ট জারি - dainik shiksha দেশে তিন দিনের হিট অ্যালার্ট জারি নতুন শিক্ষাক্রম ও কিছু কথা - dainik shiksha নতুন শিক্ষাক্রম ও কিছু কথা কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে স্কুলে দুই শিফটের ক্লাস চালু রাখার সভা রোববার - dainik shiksha স্কুলে দুই শিফটের ক্লাস চালু রাখার সভা রোববার শিক্ষা কর্মকর্তার আইডি ভাড়া নিয়ে প্রধান শিক্ষকের বাণিজ্য - dainik shiksha শিক্ষা কর্মকর্তার আইডি ভাড়া নিয়ে প্রধান শিক্ষকের বাণিজ্য শিক্ষকদের অবসর সুবিধা সহজে পেতে কমিটি গঠন হচ্ছে - dainik shiksha শিক্ষকদের অবসর সুবিধা সহজে পেতে কমিটি গঠন হচ্ছে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে নিষিদ্ধ, মৌলবাদী সংগঠনের বিরুদ্ধে অবিলম্বে ব্যবস্থা নিন - dainik shiksha নিষিদ্ধ, মৌলবাদী সংগঠনের বিরুদ্ধে অবিলম্বে ব্যবস্থা নিন please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.002918004989624