১৩ বছরের এক ছাত্রী জন্ম দিয়েছে শিশু সন্তান। ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্রী হাসপাতালে এক পুত্র সন্তানের জন্ম দিয়েছে। ঘটনাটি ঝালকিাঠি সদরের। অবশ্য নবজাতকের পিতার পরিচয় এখনও জানা যায়নি।
পিতার পরিচয় জানতে ভিকটিমের সৎ বাবা ও নবজাতকের শরীর থেকে ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য ঢাকায় পাঠানো হচ্ছে।
ঝালকাঠি সদর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. আবু তাহের বলেন, শহরের একটি স্কুলের ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্রীটি অন্তসত্বা হয়েছে খবরে গত ১০ সেপ্টেম্বর আমারা তাকে থানা হেফাজতে আনি। মেয়েটি অভিযোগ করে, তার মা সাহেরা আক্তার কাজল ও সৎ বাবা কাজী আলম তাকে দীর্ঘদিন ধরে জোরপূর্বক অনৈতিক কাজে বাধ্য করে অর্থ উপার্জন করে আসছিলো। বিভিন্ন সময় অপরিচিত পুরুষদের তার ঘরে ঢুকিয়ে দিয়ে মা ও সৎ বাবা বাইরে পাহারা দিত। মাঝেমধ্যে সৎ বাবা কাজী আলমও তাকে যৌন নিপিড়ন করতেন।
ওই দিন রাতেই পুলিশ মেয়েটির অভিযোগের প্রেক্ষিতে সদর থানায় একাটি মামলা দায়ের করে মা সাহেরা ও সৎ বাবা আলমকে গ্রেপ্তার করে।
এদিকে ষষ্ঠ শ্রেণির ওই ছাত্রীকে ভর্তি করা হয় ঝালকাঠি সদর হাসপাতালে। বুধবার (১৮ সেপ্টেম্বর)সদর হাসপাতালের গাইনি বিভাগে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সে একটি পুত্র সন্তান জন্ম দেয়। ঝালকাঠি সদর হাসপাতালের সিনিয়র স্টাফ নার্স নাজনিন বেগম জানান, মা অপ্রাপ্তবয়স্ক হওয়ায় কিছুটা অসুস্থ। তবে নবজাতক স্বভাবিক ও সুস্থ রয়েছে।
এলাকারবাসী জানায়, ঝালকাঠি সদর উপজেলার মহদীপুর গ্রামের ইউনুস হাওলাদারের সঙ্গে ১৫ বছর আগে বিয়ে হয় একই এলাকার সাহেরা আক্তার কাজলের। তাদের ঘরে জন্ম নেয় এ কন্যা সন্তান (ভিকটিম)। তবে সাহেরা ও ইউনুসের সংসার ভেঙে যায়। বিবাহ বিচ্ছেদ হয়। একমাত্র কন্যা সন্তান নিয়ে সাহেরা শহরের কাঠপট্টি এলাকায় একটি ভাড়া বাসায় চলে আসেন। ২০১৪ সালে সাহেরা শহরের কালীবাড়ি সড়কের টেলিভিশন মেকার কাজী আলমকে দ্বিতীয় বিয়ে করেন। আর সেখানেই মা ও সৎ বাবার সাথে মেয়েটি নতুন সংসারে থাকে।
বর্তমানে হাসপাতালে ভর্তি ভিকটিম সাংবাদিকদের জানায়, সে যখন পঞ্চম শ্রেণিতে পড়ে, তখন থেকেই তাকে জোর করে মা ও সৎ বাবা অন্য পুরুষের সঙ্গে অনৈতিক কাজে বাধ্য করতেন। এমনকি সৎ বাবাও তাকে ধর্ষণ করতো। বর্তমানে শহরের একটি স্কুলের ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্রী সে।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ঝালকাঠি সদর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. সরোয়ার হোসেন বলেন, জন্ম নেয়া সন্তানের পিতৃ পরিচয় নিশ্চিত হওয়ার জন্য নবজাতক এবং ভিকটিমের সৎ বাবা কাজী আলমের শরীর থেকে নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। ডিএনএ পরীক্ষার জন্য তা ঢাকা সিআইডিতে পাঠানোর প্রক্রিয়া চলছে। একই সাথে অন্যান্য আইনী পদক্ষেপও নেয়া হচ্ছে।