বরগুনায় জুয়াড়ীদের আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে দুই ইউপি সদস্যের সমর্থকদের সংঘর্ষে সাইফুল ইসলাম সবুজ (২২) নামের এক ছাত্র নিহত হয়। বুধবার (১৫ এপ্রিল) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে হাসপাতালে নেয়ার পথে কলেজছাত্র সবুজ মারা যান। এঘটনায় আজ বৃহস্পতিবার (১৬ এপ্রিল) দুপুর পর্যন্ত ১০ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। বরগুনা সদর থানার ওসি আবির হোসেন মোহাম্মদ দৈনিক শিক্ষাডটকমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
নিহত সবুজের বাড়ি বরগুনা সদর উপজেলার ঢলুয়া ইউনিয়নের রায়ভোগ কদমতলা গ্রামে। তার বাবার নাম ফারুক পহলান। সে বরগুনা পলিটেকনিক্যাল ইনস্টিটিউট থেকে পাস করে রাজধানী ঢাকার একটি বেসরকারি কলেজে বিএসসি ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ত। সাম্প্রতিক লকডাউনের কারণে সে বরগুনা ফিরে এসেছিল।
স্থানীয়দের বরাত দিয়ে ওসি আবির হোসেন মোহাম্মদ দৈনিক শিক্ষাডটকমকে জানান, গত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন নিয়ে ওই এলাকার বর্তমান ইউপি সদস্য রাজা (২৯) ও সাবেক ইউপি সদস্য স্বপন খানের (৪২) মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছিল। গতকাল বুধবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ঢলুয়া ইউনিয়নের পশ্চিম রায়ভোগ এলাকায় জুয়ার আসর থেকে সাবেক ইউপি সদস্য স্বপন খানের সমর্থক চারজনকে আটক করে পুলিশ। পরে ভ্রাম্যমাণ আদালতে জরিমানা করে ছেড়ে দেয়া হয়।
জুয়ার আসর থেকে ধরিয়ে দেয়ার জেরে বিকেলে ৫টার দিকে স্বপন খানের প্রায় ২০-২৫ জন সমর্থক সংঘবদ্ধ হয়ে লাঠিসোটা নিয়ে রায়ভোগ বাজারে এসে বর্তমান ইউপি সদস্য রাজার সমর্থকদের মারধর করতে শুরু করে। এক পর্যায়ে রাজা সমর্থকরাও পাল্টা হামলা চালায়। সংঘর্ষে উভয় পক্ষের অন্তত ১০ জন আহত হন। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে এবং আহতদের উদ্ধার করে বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করে।
এসময় গুরুতর জখম অবস্থায় সবুজকে হাসপাতালে নেয়ার পথে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার সে মারা যায়।
আহতদের বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসা চলছে, এছাড়া গুরুতর তিনজনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বরিশাল শেরে বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপতালে পাঠানো হয়েছে।
এ ঘটনায় নিহতের বাবা বাদি হয়ে রাতেই ১৪ জনের নাম উল্লেখ করে ও অজ্ঞাত আরো ৬-৭জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেন।
ওসি আবির হোসেন দৈনিক শিক্ষাডটকমকে আরও জানান, ঘটনার পরপরই পুলিশ বিষয়টি নিয়ে তদন্ত শুরু করে ও জড়িত সন্দেহে কয়েকজনকে নজরদারিতে রাখে। মামলার পর এজাহারভুক্ত ইউপি সদস্য রাজা ওরফে রাজু এবং সাহাবিল নামের দুজনসহ মোট ১০ জনকে গ্রফতার করেছে পুলিশ। বাকিদের গ্রেফতার করতে আমাদের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয় কয়েকজন এলাকাবাসী দৈনিক শিক্ষাডটকমকে জানান, ইউপি সদস্য হওয়ার আগে থেকেই রাজু আহমেদ ওরফে রাজা মেম্বার এলাকায় একটি বাহিনী তৈরি করে নানাভাবে স্থানীয় এলাকাবাসীকে হয়রানি করে আসছিল। তাছাড়া তার বাহিনীর অধিকাংশ সদস্যই নেশাগ্রস্ত এবং ইয়াবা কারবারি। অন্যদিকে সাবেক ইউপি সদস্য বারী আজাদ স্বপনও একজন চিহ্নিত ইয়াবা কারবারি।