জয়পুরহাটের পাঁচবিবি ডিগ্রি কলেজে অধ্যক্ষ নিয়োগে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের প্রতিনিধির স্বাক্ষর জালিয়াতির অভিযোগ পাওয়া গেছে। অভিযোগের পর অধ্যক্ষ নিয়োগ বন্ধ হলেও গত একমাসেও ঘটনার সাথে জড়িতদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নেয়া হয়নি।
গত ২৮শে জুন পাঁচবিবি মহীপুর হাজী মহসীন সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর মো. ওমর আলী মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বরাবরে তার স্বাক্ষর জালিয়াতির অভিযোগ করেন।
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, পাঁচবিবি ডিগ্রি কলেজে অধ্যক্ষ নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পর নিয়োগ বোর্ডে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা (মাউশি) অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের (ডিজি) প্রতিনিধি হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয় স্থানীয় মহীপুর হাজী মহসীন সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর মো. ওমর আলীকে।
নিয়োগ প্রক্রিয়ার সার্বিক দায়িত্ব পালন করেন কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ও নিয়োগ বোর্ডের সদস্য সচিব রোমানা চৌধুরী। অধ্যক্ষ নিয়োগে গত বছরের ১৫ নভেম্বর নিয়োগ বোর্ড বসানো হয়। নিয়ম অনুযায়ী মহাপরিচালকের প্রতিনিধি হিসেবে নিয়োগ বোর্ডে হাজির ছিলেন প্রফেসর মো. ওমর আলী। কিন্তু নির্বাচনী বোর্ডে অধ্যক্ষ নিয়োগে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের বিধি না মেনে অযোগ্য ব্যক্তিকে নিয়োগ দেয়ার সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করায় তিনি ফলাফল শিটে স্বাক্ষর না করে চলে যান।
পরে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের কলেজ পরিদর্শকের মাধ্যমে তিনি জেনেছেন কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ জালিয়াতির মাধ্যমে ফলাফল শিটে তার স্বাক্ষর স্ক্যান করে অনুমোদনের জন্য যথাযথ কর্তৃপক্ষের নিকট পাঠিয়েছেন। বিষয়টি নিশ্চিত হয়ে গত ২৮ জুন তিনি মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বরাবরে তার স্বাক্ষর জালিয়াতির অভিযোগ করেন।
অভিযোগে তিনি স্বাক্ষর জালিয়াতির সাথে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ করেন। কিন্তু অভিযোগের এক মাস পরও স্বাক্ষর জালিয়াতির সাথে জড়িতদের বিরুদ্ধে নেয়া হয়নি কোনো শাস্তিমূলক ব্যবস্থা।
অভিযোগকারী পাঁচবিবি মহীপুর হাজী মহসীন সরকারি কলেজ এর অধ্যক্ষ প্রফেসর মো.ওমর আলী বলেন,‘মহাপরিচালকের প্রতিনিধি হিসেবে আমি নিয়োগ বোর্ডে ছিলাম। কিন্তু শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের বিধি না মেনে অযোগ্য ব্যক্তিকে নিয়োগ দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়ায় আমি ফলাফল শিটে স্বাক্ষর করিনি। পরে কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ফলাফল শিটে আমার স্বাক্ষর জাল করে অযোগ্য ব্যক্তিকে অধ্যক্ষ পদে বসানোর জন্য যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠিয়েছেন। জানার পর আমি মাউশির মহাপরিচালকের কাছে স্বাক্ষর জালিয়াতির অভিযোগ করি। কিন্তু এক মাসেও জড়িতদের বিরুদ্ধে নেয়া হয়নি কোনো আইনগত ব্যবস্থা।’
স্বাক্ষর জালিয়াতির বিষয়ে পাঁচবিবি ডিগ্রি কলেজ এর ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ও নিয়োগ বোর্ডের সদস্য সচিব রোমানা চৌধুরীর সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘এ বিষয়ে আমি কিছুই বলতে পারব না। আমাকে কোনো চিঠিও দেয়া হয়নি।’ অধ্যক্ষ নিয়োগ হয়েছে কি-না প্রশ্ন করলে তিনি বলেন,‘এখনও হয়নি তবে হবে।’