সভাপতির বিরুদ্ধে প্রধান শিক্ষককে স্কুলে আসতে বাধা দেয়ার অভিযোগ

কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধি |

কিশোরগঞ্জের বাজিতপুরে একটি স্বনামধন্য মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে চলছে রামরাজত্ব। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটির সভাপতি বেআইনিভাবে ৯ মাস আগে বরখাস্ত করেন প্রধান শিক্ষককে। এরপর হাইকোর্ট তাকে পুনর্বহালের আদেশ দিলেও সভাপতি তা অমান্য করে চলেছেন। এতে শিক্ষা কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে।

জানা গেছে, হাওরের ভাসমান স্কুল হিসেবে পরিচিত বাজিতপুরের মাইজচর ইউনিয়নের একমাত্র শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বাহেরবালী মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এম এ কাসেমকে দুর্নীতির অভিযোগে বহিস্কার করেছিলেন ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি। সেই আদেশের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে রিট পিটিশন দাখিল করেন প্রধান শিক্ষক। গত ৬ জুন হাইকোর্ট প্রধান শিক্ষককে বরখাস্তকরণ বিধিসম্মত হয়নি জানিয়ে সাত কার্যদিবসের মধ্যে তাকে স্বপদে বহাল করার জন্য বিদ্যালয়ের সভাপতি বাছির মিয়াকে নির্দেশ দেন। তবে সভাপতি হাইকোর্টের আদেশকে অমান্য করে উল্টো প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ এনে তাকে বিদ্যালয়ে প্রবেশ করতে দিচ্ছেন না বলে অভিযোগ উঠেছে।

জানা গেছে, স্কুলটিতে শিক্ষার্থীদের যাতায়াতের জন্য কোনো সড়ক না থাকার কারণে একটি মাত্র নৌকাই আসা-যাওয়ার মাধ্যম। ফলে শিক্ষার্থীদের যাতায়াত সুবিধার জন্য আরও দুটি নৌকাসহ বিদ্যালয়ের অবকাঠামো উন্নয়নে জনপ্রিয় টেলিভিশন ম্যাগাজিন অনুষ্ঠান 'ইত্যাদি' থেকে ১০ লাখ টাকার চেক দেওয়া হয়। এ ছাড়া জেলা প্রসাশকের পক্ষ থেকে আরও ২ লাখ টাকার চেক দেওয়া হয়। এর পরেই প্রধান শিক্ষকের সঙ্গে ম্যানেজিং কমিটির সভাপতির দ্বন্দ্ব শুরু হয়।

গত বছরের সেপ্টেম্বরে প্রধান শিক্ষক কাসেমকে আর্থিক অনিয়মের অভিযোগ এনে সাময়িক বহিস্কার করে ম্যানেজিং কমিটি। পরে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে অভিযোগের তদন্তে এর সত্যতা খুঁজে পায়নি

কিশোরগঞ্জ জেলা ও বাজিতপুর উপজেলা প্রশাসন। তা সত্ত্বেও তাকে পুনবর্হাল করেননি সভাপতি। প্রতিকার না পেয়ে শেষ পর্যন্ত বিদ্যালয়ের ম্যানিজিং কমিটির অবৈধ বহিস্কারাদেশের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে রিট পিটিশন দাখিল করেন প্রধান শিক্ষক।

তিনি বলেন, সভাপতির বিভিন্ন আর্থিক অনিয়মের সঙ্গে একমত পোষণ না করায় মিথ্যা অভিযোগে তাকে বহিস্কার করা হয়েছে। স্থানীয়রাও একই তথ্য দিয়েছেন।

তবে অভিযোগ অস্বীকার করে বাহেরবালী বিদ্যালয়ের সভাপতি ও মাইজচর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি বাছির বলেন, 'বহিস্কৃত প্রধান শিক্ষক কাসেম একজন লোভী এবং তার চরিত্র ভালো না। তাকে সর্তক করলেও তিনি তা আমলে নেননি। ফলে ম্যানেজিং কমিটি তাকে সাময়িক বহিস্কার করে। পরে জানতে পারি তিনি হাইকোর্টে রিট পিটিশন করেছেন। কিন্তু আমরা কোনো চিঠি পাইনি। হাইকোর্ট তাকে স্বপদে বহালের নির্দেশ দিয়েছেন শুনেই আমরা হাইকোর্টে আপিল করেছি। এখনও আপিল শুনানি হয়নি।'

কিশোরগঞ্জ জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা জুলফিকার জানান, জেলা প্রশাসনের গঠিত তিন সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি সরেজমিন তদন্ত করে জানতে পারে, ম্যানেজিং কমিটি যে নিয়মে প্রধান শিক্ষককে বহিস্কার করেছে তা যথাযথ হয়নি। ফলে মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড তাকে স্বপদে বহালের নির্দেশ দেয়। এরপর হাইকোর্টও তাকে স্বপদে বহালের নির্দেশ দেন। এরপরও কেউ বাধা অথবা প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টির অভিযোগ পেলে অবশ্যই আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
ভিকারুননিসায় ৩৬ ছাত্রী ভর্তিতে অভিনব জালিয়াতি - dainik shiksha ভিকারুননিসায় ৩৬ ছাত্রী ভর্তিতে অভিনব জালিয়াতি ‘চার আনা’ উৎসব ভাতা: প্রধানমন্ত্রী ও শিক্ষামন্ত্রী সমীপে - dainik shiksha ‘চার আনা’ উৎসব ভাতা: প্রধানমন্ত্রী ও শিক্ষামন্ত্রী সমীপে মাকে ভরণপোষণ না দেয়ায় শিক্ষক গ্রেফতার - dainik shiksha মাকে ভরণপোষণ না দেয়ায় শিক্ষক গ্রেফতার ছুটি না বাড়ালে বাড়ি যেতে হতে পারে ঈদের দিন - dainik shiksha ছুটি না বাড়ালে বাড়ি যেতে হতে পারে ঈদের দিন হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী - dainik shiksha হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী জালিয়াতি করে পদোন্নতি শিক্ষা ক্যাডার গ্যাঁড়াকলে - dainik shiksha জালিয়াতি করে পদোন্নতি শিক্ষা ক্যাডার গ্যাঁড়াকলে রুয়েটের সাবেক উপাচার্য-রেজিস্ট্রারের বিরুদ্ধে মামলা - dainik shiksha রুয়েটের সাবেক উপাচার্য-রেজিস্ট্রারের বিরুদ্ধে মামলা উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় - dainik shiksha উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগে সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তি - dainik shiksha প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগে সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তি উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় - dainik shiksha উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী - dainik shiksha হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0050570964813232