সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষার বিষয়ে আজ সিদ্ধান্ত নেবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। এ নিয়ে একাডেমিক কাউন্সিলে সভা হবে। সান্ধ্যকালীন কোর্স রাখা হবে কি হবে না সে বিষয়েও সভায় সিদ্ধান্ত হবে। এদিকে সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ না করার দাবিতে মানববন্ধন ও ভিসি বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা। এছাড়াও সান্ধ্যকালীন কোর্স বন্ধ করা না হলে সম্মিলিতভাবে আন্দোলনে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে ডাকসু।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষায় শিক্ষার্থীদের হয়রানি ও অর্থ অপচয় রোধ করার জন্য ২৩ জানুয়ারি দেশের সব বিশ্ববিদ্যালয়কে নিয়ে সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষা চালু করার সিদ্ধান্ত নেয় বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)। তবে এ পদ্ধতিতে অনাগ্রহ প্রকাশ করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় ও জাহাঙ্গীর নগর বিশ্ববিদ্যালয়সহ কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়।
পরে ১২ ফেব্রুয়ারি ইউজিসির এক সভা শেষে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয় যে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়সহ ১২টি বিশ্ববিদ্যালয় সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষায় যাওয়ার জন্য সম্মতি দিয়েছে।
তবে ঢাবির ভিসি অধ্যাপক আখতারুজ্জামান জানান, সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষায় যাওয়া না যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়ার দায়িত্ব বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক কাউন্সিলের। ২ ফেব্রুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিনস কমিটির সভায় সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষা ও সান্ধ্যকালীন কোর্সের বিষয়ে আলোচনা হয়। এ বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা জন্য একাডেমিক কাউন্সিলের সভা করার প্রতি গুরুত্বারোপ করা হয়। তাই এ দুই বিষয়ে বিশদ আলোচনা করার জন্য আজ বিশেষ একাডেমিক কাউন্সিলের সভা বসবে। সভা থেকেই দুই বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত আসবে।
শিক্ষার্থীদের মানববন্ধন ও স্মারকলিপি : বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাডেমিক কাউন্সিলে যেন সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষায় যাওয়ার সিদ্ধান্ত না নেয়া হয় সেজন্য মানববন্ধন ও ভিসি বরাবর স্মারকলিপি দিয়েছে শিক্ষার্থীরা। রোববার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাজেয় বাংলার পাদদেশে ‘স্ট্যান্ড ফর দ্য ইউনিভার্সিটি’ ব্যানারে শিক্ষার্থীরা মানববন্ধনের আয়োজন করে।
মানববন্ধনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) সমাজসেবা সম্পাদক আখতার হোসেন বলেন, সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষার ফলাফল কী হতে পারে- এ নিয়ে কোনো আলাপ-আলোচনা না করেই ইউজিসি এক হটকারী সিদ্ধান্ত নিয়েছে। মানববন্ধন শেষে শিক্ষার্থীরা ভিসি বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করেন।
সান্ধ্যকালীন কোর্স নিয়ে সভা : এদিকে সান্ধ্যকালীন কোর্স চালু রাখার জন্য সভা করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আওয়ামী ও বিএনপি-জামায়াতপন্থী শিক্ষকরা। রোববার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদের অধ্যাপক হাবিবুল্লাহ কনফারেন্স হলে এ সভা হয়। সভায় উপস্থিত এক শিক্ষক জানান, ‘আমরা সান্ধ্যকালীন কোর্সের নানা দিক নিয়ে আলোচনা করেছি। এটা এখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালর পরিচালনা করছে। যদি ঢাবি এটা বন্ধ করে দেয় তাহলে প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে এ কোর্স নতুন করে শুরু হবে। সেক্ষেত্রে পরিস্থিতি আরও খারপ হবে। সভা শেষে শিক্ষকরা ভিসি বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করেন’।
আরওপড়ুন:
সান্ধ্য কোর্স বিষয়ে ইউজিসি ব্যবস্থা নিতে পারে: প্রধানমন্ত্রী
সান্ধ্য কোর্স রাখতে ঢাবি শিক্ষকদের একাংশ ‘ফাইট’ দেবেন
সান্ধ্য কোর্স বন্ধের দাবি ডাকসুর, না হলে কঠোর আন্দোলন
অনুমোদনহীন সান্ধ্যকালীন কোর্স ৯ বিশ্ববিদ্যালয়ে
পাঁচ বিশ্ববিদ্যালয়কে ছাড়াই কেন্দ্রীয় ভর্তি পরীক্ষার ভাবনা ইউজিসির
যারা রাজি হবে, তাদের নিয়েই কেন্দ্রীয় ভর্তি পরীক্ষা
সমন্বিত ভর্তির ব্যাপারে আরও ভাবা প্রয়োজন
যে কারণে ডাকসু ও ঢাবি প্রশাসন সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষার বিপক্ষে