সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সাড়ে ৫ হাজাররের বেশি সহকারী শিক্ষকের সিনিয়র শিক্ষক পদে পদোন্নতি নিয়ে সৃষ্ট জটিলতার অবসান হয়েছে। কৃষি বিষয়ে নিয়োগ পাওয়া শিক্ষকরা পদোন্নতির প্রক্রিয়া নিয়ে প্রশ্ন তুলে মামলা দায়ের করায় এ জটিলতা সৃষ্টি হয়েছিল। সে জটিলতা কেটেছে।
কৃষি শিক্ষকরা ১৯৯৫ খ্রিষ্টাব্দের জাতীয় বেতন স্কেলের ১৪তম গ্রেডে যোগদান করলেও ২০০৪ খ্রিষ্টাব্দ থেকে তাদের পদটি আপগ্রেড করে অন্যান্য সহকারী শিক্ষকদের মত ১০ম গ্রেডে উন্নীত করা হয়। তাই, তাদের জ্যেষ্ঠতা ২০০৪ খ্রিষ্টাব্দ থেকে বহাল রাখার মত দিয়েছিল জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। কিন্তু তারা ১৯৯৫ সাল থেকে জ্যেষ্ঠতা দাবি করেছিলেন। কিন্তু সে মামলায় জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের দেয়া মতামতকে বহাল রেখেছেন প্রশাসনিক ট্রাইবুনাল। ফলে সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের সিনিয়র শিক্ষক পদে পদোন্নতি নিয়ে সৃষ্ট জটিলতা কাটল।
দীর্ঘদিন ধরে আটকে আছে সরকারি স্কুল শিক্ষকদের পদোন্নতি। নতুন নিয়োগ বিধিমালা অনুসারে সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ৫০ শতাংশ সহকারী শিক্ষককে পদোন্নতি দেয়া হবে বলে ২০১৮ খ্রিষ্টাব্দে জানায় মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর। সে বছর সেপ্টেম্বরে সর্বপ্রথম দৈনিক শিক্ষাডটকমে এ বিষয়ে প্রতিবেদন প্রকাশিত হলে সরকারি স্কুল শিক্ষকরা হয়েছিলেন আনন্দিত। এদিকে গত বছরের অক্টোবর পর্যন্ত সরকারি স্কুল শিক্ষকদের পদোন্নতির প্রক্রিয়া অনেকটাই গুছিয়ে এনেছিল মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর।
এরপর ২০১৯ খ্রিষ্টাব্দের ২৭ অক্টোরব সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকদের পদোন্নতির খসড়া গ্রেডেশন তালিকা প্রকাশ করে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর। এ তালিকায় ৫ হাজার ৮৫৪ শিক্ষকের নাম ছিল। তালিকার অসঙ্গতি বা আপত্তি থাকলে গত ১৪ নভেম্বরের মধ্যে আবেদন পাঠাতেও বলা হয়েছিল শিক্ষকদের।
এরপর সরকারি মাধ্যমিক স্কুলের সহকারী শিক্ষকদের সিনিয়র শিক্ষক পদে পদোন্নতি নিয়ে জটিলতা সৃষ্টি হয়। কৃষি শিক্ষকরা পদোন্নতিরা তালিকাকে প্রশ্ন করে মামলা করেছিলেন।
জানা গেছে, কৃষি শিক্ষকরা ১৯৯৫ খ্রিষ্টাব্দের জাতীয় বেতন স্কেলের ১৪তম গ্রেডে যোগদান করলেও ২০০৪ খ্রিষ্টাব্দ থেকে তাদের পদটি আপগ্রেড করে অন্যান্য সহকারী শিক্ষকদের মত ১০ম গ্রেডে উন্নীত করা হয়। তাই, তাদের জ্যেষ্ঠতা ২০০৪ খ্রিষ্টাব্দ থেকে বহাল রাখার মত দিয়েছিল জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। কিন্তু তারা ১৯৯৫ সাল থেকে জ্যেষ্ঠতা দাবি করেছিলেন। এ দাবিতে তারা প্রশাসনিক ট্রাইবুনালে মামলা করেছিলেন।
সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা দৈনিক শিক্ষাডটকমকে জানান, আজ ১৩ অক্টোবর মামলার রায়ের দিন নির্ধারিত ছিল। মামলাটি খারিজ করে দেন বিজ্ঞ আদালত। তাই, জনপ্রাশাসন মন্ত্রণালয়ের মতামত বহাল থাকে রায়ে। অর্থাৎ কৃষি শিক্ষকদের জ্যেষ্ঠতা ২০০৪ খ্রিষ্টাব্দ থেকে বহাল থাকছে।
শিক্ষকরা দৈনিক শিক্ষাডটকমকে আরও বলেন, এ জটিলতা কেটে যাওয়ায় শিক্ষকদের পদোন্নতির প্রক্রিয়া যে আটকে ছিল তা নিরসন হল। শিক্ষকদের পদোন্নতির কাজে কোন আইনী বাধা আর নেই।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ সরকারি মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির সাংগঠনিক সম্পাদক মো. আবদুস সালাম দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, এ রায়ে সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের একটি বড় জটিলতার অবসান হয়েছে। আশা করি সব পক্ষ আদালতের রায়ের প্রতি সম্মান জানাবে। শিক্ষকদের পদোন্নতির কাজ দ্রুত শুরু করতে শিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরকে অনুরোধ করছি।